শনিবার, ০৪ মে ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪৩১, ২৪ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

মহানগর

সুদিন ফিরছে ছয় কোটি শেয়ারধারীর

অর্থনৈতিক রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ১২:০১ এএম

কারখানা বন্ধ থাকা ও লভ্যাংশ না দেওয়াসহ নানা কারণে এক যুগ আগে পুঁজিবাজার থেকে তালিকাচ্যুত সাতটি কোম্পানি উৎপাদনে ফিরছে। বর্তমানে ওভার দ্যা কাউন্টার মার্কেটে (ওটিসি) থাকা এ কোম্পানিগুলো পুরোদমে উৎপাদন শুরু করেছে। ফলে কোম্পানিগুলোকে ওটিসি থেকে স্বল্পমূলধনী কোম্পানির জন্য গঠিত এসএমই বোর্ডে স্থানান্তর করা হচ্ছে।

পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) প্রত্যাশা, কোম্পানিগুলো লোকসান কাটিয়ে মুনাফায় ফিরবে। এরপর শেয়ারহোল্ডারদের লভ্যাংশ দেবে। ভালো পারফরমেন্স দেখাতে পারলে দ্রুত মূল মার্কেটে ফেরানো হবে কোম্পানিগুলোকে। আর তাতে এক যুগেরও বেশি সময় ধরে ভোগান্তি ও অনিশ্চয়তায় দিন পার করা ছয় কোটি ছয় লাখ ৬৪ হাজার ৮০০টি শেয়ারধারী বিনিয়োগকারীর সুদিন ফিরবে।

কোম্পানিগুলো হচ্ছে- এপেক্স ওয়েভিং অ্যান্ড ফিনিশিং মিলস লিমিটেড, বাংলাদেশ হোটেলস, বেঙ্গল বিস্কুট লিমিটেড, গাচি হাটা একিউকালচার ফার্মস লিমিটেড, হিমাদ্রী লিমিটেড, ওয়ান্ডারল্যান্ড টয় লিমিটেড এবং ইউসুফ ফ্লাওয়ার মিলস লিমিটেড। এ বিষয়ে বিএসইসির কমিশনার প্রফেসর শেখ সামসুদ্দিন আহমেদ বলেন, পুঁজিবাজারে আমরা কোনো ঝামেলা রাখছি না। আমারা চেষ্টা করছি, যারা বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে অর্থ নিয়েছে, তাদের জবাবদিহিতার মধ্যে আনতে। তিনি বলেন, বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে টাকা নেওয়া কোম্পানিগুলো শেয়ারহোল্ডারদের লভ্যাংশ দেবে না, তা হবে না। এ লক্ষ্য সামনে রেখে ওটিসি মার্কেটে থাকা কোম্পানিগুলোকে তদারকি করছি, এরই মধ্যে সাতটি কোম্পানি উৎপাদনে ফিরেছে। আর কিছু কোম্পানির উৎপাদন শুরু করবে, প্রক্রিয়ায় রয়েছে। বিএসইসির উদ্যোগটি ভালো বলে মন্তব্য করেছেন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক অর্থ উপদেষ্টা ও বিএসইসির সাবেক চেয়ারম্যান প্রফেসর এবি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম। তিনি বলেন, বিএসইসির এ উদ্যোগটি আরো আগে নেওয়া উচিত ছিল। কোম্পানিগুলোর আর্থিক প্রতিবেদন ভালোভাবে দেখভালের পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।
মির্জ্জা আজিজ বলেন, এসএমই বোর্ডে আনার বিষয়টি ঠিক আছে। এখানে যদি ভালো পারফরমেন্স দেখাতে পারে তাহলে ভালো। কিন্তু মনে রাখতে হবে ছোট মূলধনী এ কোম্পানিগুলোর শেয়ার নিয়ে কারসাজি বেশি হয়। সুতরাং মূল মার্কেটে আনার আগে এ বিষয়টিকে বেশি গুরুত্ব দিতে হবে। যদি কোম্পানিগুলোর শেয়ার ম্যানিপুলেটরদের হাতে থাকে তবে তালিকাভুক্ত না করাই ভালো হবে।

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) তথ্যমতে, ১৯৯৫ সালে তালিকাভুক্ত হয় এপেক্স ওয়েভিং অ্যান্ড ফিনিশিং মিলস লিমিটেড। কোম্পানিটি ১৩ বছর আগে অর্থাৎ ২০০৮ সালে শেয়ারহোল্ডারদের ১১ শতাংশ বোনাস শেয়ার লভ্যাংশ দিয়েছিল। তারপর থেকে কোম্পানিটির কোনো খোঁজই ছিল না। তবে এখন কোম্পানিটি উৎপাদন শুরু করেছে। ২০২১ সালের তৃতীয় প্রান্তিকে শেয়ারটি দশমিক ৪১ পয়সা লোকসানে রয়েছে। কোম্পানিটির মোট শেয়ার সংখ্যা তিন কোটি ৮৮ লাখ ৫০ হাজারটি। বৃহস্পতিবার (২৩ সেপ্টেম্বর) কোম্পানিটির শেয়ারের দাম ছিল ১০ টাকা। ফলে কোম্পানির বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে ৩৮ কোটি ৮৫ লাখ টাকায়। বাংলাদেশ হোটেল কোম্পানি কর্তৃপক্ষ ১৯৭৮ সালে তালিকাভুক্ত হয়। কোম্পানিটি গত ৩০ বছর ধরে শেয়ারহোল্ডারদের লভ্যাংশ দিচ্ছে না। বৃহস্পতিবার কোম্পানিটির শেয়ারের দাম ছিল ১৩ টাকা। কোম্পানিটির বর্তমান শেয়ার সংখ্যা ৪ লাখ ৫০ হাজারটি। কোম্পানিটিও উৎপাদনে ফিরছে। ২০২১ সালের তৃতীয় প্রান্তিকে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি মুনাফা দেখানো হয়েছে পাঁচ টাকা ৮৪ পয়সা।

বেঙ্গল বিস্কুট ১৯৯৪ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়। সর্বশেষ ২০১৭ সালে শেয়ারহোল্ডারদের পাঁচ শতাংশ বোনাস শেয়ার লভ্যাংশ দিয়েছে। ২০২১ সালে তৃতীয় প্রান্তিকে মুনাফায় ফিরেছে বেঙ্গল বিস্কুট। কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি মুনাফা দশমিক ৩৬ পয়সা। কোম্পানিটির মোট শেয়ার সংখ্যা ৭৯ লাখ ৩৮ হাজারটি, যার বাজার মূল্য ১৬৪ টাকা।

এছাড়া উৎপাদনে ফিরছে গাচি হাটা একিউকালচার কোম্পানিটি। এটি ১৯৯৮ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়। গত ২৩ বছরে শেয়ারহোল্ডারদের কোনো লভ্যাংশ দেয়নি কোম্পানিটি। ২০ কোটি ৭০ লাখ টাকার কোম্পানিটির বর্তমান শেয়ার সংখ্যা ২০ লাখ ৭০ হাজারটি। সবশেষ শেয়ার বিক্রি হয়েছে ৭৩ টাকা ২০ পয়সায়। ২০১৯ সালের রিপোর্ট অনুসারে কোম্পানিটি লোকসানে রয়েছে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (1)
Mizanur rahman ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ৭:২১ এএম says : 0
যারা উৎপাদনে ফিরবে না তাদের কি হবে? বিনিয়োগকারীগন তাদের টাকা কিভাবে ফেরত পাবে?
Total Reply(0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন