স্টাফ রিপোর্টার : মহাসড়কে দুর্ঘটনা কমাতে দুরপ্লালার বাসের গতিবেগ ৮০ কিলোমিটারের মধ্যে সীমাবদ্ধ করে দিয়েছে এনা ট্রান্সপোর্ট কোম্পানী। ইঞ্জিন সীল করে দেয়ায় চালকরা ইচ্ছা করলেও ৮০ কিলোমিটারের উপরে গতিবেগ তুলতে পারবে না। দুর্ঘটনা হ্রাসে চালকদের সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় এ তথ্য জানান কোম্পানীর ব্যবস্থাপনা পরিচালক খন্দকার এনায়েত উল্যাহ। শনিবার রাজধানীর মহাখালী বাস টার্মিনালে এ আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে এনা ট্রান্সপোর্ট কোম্পানীর শতাধিক চালক উপস্থিত ছিলেন। আলোচনা সভায় বক্তারা চালকদের দুর্ঘটনা সম্পর্কে সচেতন থাকার লক্ষ্যে কয়েকটি নিয়ম মেনে চলার উপর গুরুত্বারোপ করেন। এগুলো হলো, গাড়ি চালানো অবস্থায় চালক কোনো মোবাইল ফোন ব্যবহার করতে পারবে না, জরুরী প্রয়োজনে কথা বলতে হলে গাড়ি থামার পর কথা বলবেন। গাড়িতে বসে চালক ধূমপান করতে পারবে না। মহাসড়কের ঝুঁকিপূর্ণ বাঁকগুলোতে এবং ব্রীজে ওঠার সময় ওভারটেক করতে পারবে না, ঘুম ঘুম চোখে কোনোভাবেই গাড়ি চালানো যাবে না। এ সম্পর্কে কোম্পানীর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্যাহ বলেন, রাতে গাড়ি চালানোর পর কোনো চালকের ভালোমতো ঘুম না হলে সে আর গাড়ি চালাতে পারবে না।
বাড়তি চালক থাকলে গাড়ি চালানো হবে। চালক পাওয়া না গেলে গাড়ি বসে থাকবে। তিনি চালকদের উদ্দেশ্যে বলেন, গাড়ি চালানোর সময় আপনারা যাত্রীদের জীবনের কথা ভাবুন, নিজের জীবনের কথা ভাবুন, পরিবারের কথা ভাবুন। সর্বোপরী তিনি চালকদেরকে নামাজ পড়ার জন্য তাগিদ দিয়ে বলেন, আছরের ৪ রাকাআত নামাজ দিয়ে শুরু করেন। নামাজ পড়লে বেপরোয়া গাড়ি চালাতে গেলে যাত্রীর কথা মনে পড়বে। আলোচনা সভায় ঢাকা জেলা বাস মিনিবাস শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি আলহাজ্ব সাদিকুর রহমান হিরু বলেন, এনার মালিক টাকা হালাল করে খেতে চান। তিনি ঢাকা ও ঢাকার বাইরে চালকদের থাকা খাওয়ার উন্নত ব্যবস্থা করে তার প্রমাণ রেখে চলেছেন। তিনি চালকদের উদ্দেশ্যে বলেন, আপনারা কী আর বেপরোয়া গাড়ি চালাবেন? উত্তরে চালকরা একসাথে বলেন, না। এভাবে একে একে তিনি চালকদের কাছে থেকে প্রতিশ্রæতি আদায় করে বলেন, এরপর যদি আপনারা বেপরোয়া গাড়ি চালান, গাড়ি চালানো অবস্থায় মোবাইল ব্যবহার করেন, সিগারেট পান করেন তাহলে আপনারা মোনাফেক, বেঈমান হয়ে যাবেন। মহাখালী বাস টার্মিনাল বাস মালিক সমিতির সভাপতি হাজী আবুল কালাম বলেন, চালকরা সচেতন হলে দুর্ঘটনা এড়ানো সম্ভব। এতে চালকের, যাত্রীর জীবন বাঁচবে। মালিকের বাঁচবে সম্পদ।
আলোচনা সভায় এনা ট্রান্সপোর্টের পক্ষ থেকে প্রতি ৬ মাস পর তিনজন করে সেরা চালককে ৫০ হাজার টাকা পুরস্কার ও তার সব ধরণের চিকিৎসা সেবা ফ্রি করে দেয়ার ঘোষণা দেয়া হয়। নিয়ম মেনে গাড়ি চালানোসহ চালাকদের ব্যবহার, আচরণ, পোষাকসহ সব দিক বিবেচনা করে সেরা চালক নির্বাচন করা হবে। এনা ট্রান্সপোর্টের পরিচালক আতিক বলেন, এনা ট্রান্সপোর্ট দীর্ঘদিন ধরে সুনামের সাথে ব্যবসা করে আসছে। দু’একটা দুর্ঘটনার কারণে এনার সুনাম ক্ষুণœ করার জন্য একটি মহল বিভিন্ন মিডিয়াতে অপপ্রচার চালিয়ে যাচ্ছে। তিনি দুর্ঘটনার বিষয়ে চালকদের আরও সচেতন হওয়ার আহবান জানান। আলোচনা সভায় জানানো হয়, ঢাকা জেলা বাস মিনিবাস শ্রমিক ইউনিয়নের পক্ষ থেকে দুর্ঘটনায় নিহত আহত ৫১ জন চালকের পরিবারকে নিয়মিত সহায়তা দেয়া হয়। এছাড়া এনা ট্রান্সপোর্টের যাত্রী সেবার মান বৃদ্ধির জন্য সিলেটে অত্যাধুনিক যাত্রী টার্মিনাল নির্মাণসহ ঢাকার বাইরে চালকদের থাকা খাওয়ার উন্নত ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন