শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সারা বাংলার খবর

সীমানার ওপারে স্লুইস গেট বন্ধ

ফের শীর্ণকায় চেহারায় উত্তরের নদনদী পরিবেশ বিপর্যয়ের শঙ্কা ....

মহসিন রাজু | প্রকাশের সময় : ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ৩:০৯ পিএম

এক দেড়মাস আগেও ফারাক্কা ও তিস্তা ব্যারেজের গেট ছিল খোলা । ফলে অবাধে পানি আসতে টইটম্বুর ছিল উত্তরের এখনও বেঁচে থাকা ৫০টির মত নদ ও নদী। যেইনা নদীর প্রবাহ কমতে শুরু করেছে ওমনি বন্ধ ভারত থেকে বাংলাদেশে প্রবেমমুখি নদ/নদীর সুইস গেট । ফলে পানির অভাবে শীর্ণকায় ফিরছে পদ্মা,মহানন্দা ,ব্রম্ভপুত্র, যমুনা , তিস্তা, ধরলা,করতোয়া, বাঙালী, ফুলজোড়, ছোট যমুনা,দুধকুমার,ইছামতি সহ ঐতিহাসিকভাবে পরিচিত উত্তরের সব নদ/নদী।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের একাধিক সুত্রে জানা গেছে, ১৯৭৪ সালে ফারাক্কা বাঁধ ও পরে তিস্তা ব্যারেজ চালুর পর থেকে উত্তরাঞ্চলের পুর্ব ও ৫০ টির মত ছোট ছোট শাখা নদী কালের গর্ভে হারিয়ে গেছে ।

এইভাবে নদনদীর বিলুপ্তির ফলে এবং চাষাবাদের জন্য ভু-গর্ভস্থ পানির অপব্যবহারের ফলে উত্তরাঞ্চলের ভুমিগর্ভে পানির লেয়ার নামতে নামতে এখন বিপজ্জনক পর্যায়ে উপনিত হয়েছে। বিশেষ করে বরেন্দ্র অঞ্চলের অবস্থা খুবই ভয়াবহ বলে বিশেষজ্ঞ মহলের অভিমত।
বগুড়া অঞ্চলের একাধিক জেলে পরিবারের সাথে কথা বলে জানা যায়, মধ্য ৭০ পর্যন্ত সময়েও উত্তরাঞ্চলে জেলে সম্প্রদায়ের কয়েক লাখ মানুষ নদ/নদী ও প্রাকৃতিক খাল ও বিলের মাছ আহরন করে সেগুলো বিক্রি করে জীবন ধারন করতো। ওই জেলেরা কোন কোন এলাকায় ধীবর, কৈবর্ত বা মাঝি সম্প্রদায় বলে পরিচিত ছিল । তবে ৮০’র দশকের পর থেকে এখন বিলুপ্ত প্রায় জেলে সম্প্রদায়ের লোকজন।

বগুড়া , নাটোর ও পাবনার সীমান্ত ঘেঁষা বিশাল চলন বিলকে বলা হতো মাছের খনি । শুষ্ক মওশুম শুরু হলে অর্থাৎ নভেম্বর থেকে মার্চ পর্যন্ত সময়ে চলনবিল এলাকায় হাজার টন শুটকি তৈরী হতো । চলনবিলের শুটকি পশ্চিমবঙ্গ আসামেও ছিল জনপ্রিয় । এখন এই পানির অভাবে শুটকি কেন্দ্রীক অর্থনীতির অস্তিত্বই আজ বিলিনের পথে ।

নদীকমিশনের সাথে সংশ্লিষ্ট এবং স্থানীয় এক এনজিওর নির্বাহী জিয়াউর রহমান ইনকিলাবকে দুঃখ করে বলেন , পানি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের বুদ্ধিজীবী ও সুশীল সমাজের নিরবতা বিস্ময়কর । প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ব্যাক্তিগত আগ্রহ সত্তে¡ও নদী দখল ও দুষনের ব্যাপারে স্থানীয় প্রশাসনের ভুমিকা প্রশ্নবিদ্ধ । এক্ষেত্রে সামাজিক সচেতনতারও অভাব রয়েছে বলে মনে করেন তিনি ।

বগুড়া ইতহাস গবেষনা পরিষদের সেক্রেটারি সৈয়দ ফজলে রাব্বি ডলারের মতে উত্তরাঞ্চলের প্রত্যেকটি নদ ও নদীর উচ্ছল প্রবাহের সাথে জড়িত রয়েছে জীব বৈচিত্রের সম্পর্ক । নদ/নদীর স্বাভাবিক প্রবাহ না থাকলে নদ/নদীর সাথে হুমকির পড়ে বিভিন্ন প্রজাতির মাছ ও জলজ প্রানী । কমে যায় জমির উর্বরা শক্তি । ব্যহত হয় কৃষি উৎপাদন । তার মতে ভারতের পানি আগ্রাসনের কারনে সৃষ্ট পরিবেশ বিপর্যয়ের দায় এড়াতে পারবেনা কেউই ।

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন