স্টাফ রিপোর্টার : ভাষা সৈনিক আবদুল মতিনের স্ত্রী মিসেস গুলবদুন্নেছা মতিন বলেছেন, ১৯৫২ সালে পাকিস্তানি শাসকের ভাষা আগ্রাসনের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ আন্দোলন গড়ে তোলার নেতৃত্ব দিয়েছিলেন ভাষা সৈনিক আবদুল মতিন। অসহায়তা-অলসতা ও অন্ধকার ঘূর্ণাবর্তে নিপতিত জাতিকে পাকিস্তানি শোষকদের বিরুদ্ধে আন্দোলনের পথ দেখিয়ে ছিলেন তিনি। ভাষা সৈনিক আজীবন দেশের জন্য, মানুষের জন্য, সাধারণ মানুষের অধিকার আদায়ের জন্য লড়াই করেছেন, সংগ্রাম করেছেন, কথা বলেছেন। এক কথায় ভাষা মতিন ছিলেন দুঃসাহসী ও মানবতাবাদী রাজনীতিবিদ।
গতকাল সন্ধ্যায় রাজধানীর শিশুকল্যাণ পারিষদ মিলনায়তনে আপোষহীন রাজনীতিক ও ভাষা সৈনিক আবদুল মতিনের ২য় মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে ভাষা আন্দোলন স্মৃতি রক্ষা পরিষদ আয়োজিত সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। ভাষা সৈনিক ড. জসিমউদ্দিন আহমেদ বলেন, জাতীয় ইতিহাসের বিভিন্ন স্তরে মানব সমাজের প্রয়োজন অনুসারে বিভিন্ন প্রতিভার জন্ম হয়। ভাষা সৈনিক আবদুল মতিনের আবির্ভাবও একটি ঐতিহাসিক পটভূমিতে। ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের পটভূমিতে বাংলার মানুষকে অধিকার আদায়ের সংগ্রামে অনুপ্রাণিত করেছিলেন। ভাষা সৈনিক রেজাউল করিম বলেন, ভাষা মতিন বাংলার মানুষের ভাষার অধিকার প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন। দুঃখজনক হলেও সত্য আমাদের রাষ্ট্র তাকে যথাযথ সম্মান প্রদর্শন করতে ব্যর্থ হয়েছে।
ভাষা সৈনিক আবদুল করিম পাঠান বলেন, ভাষা সৈনিক আবদুল মতিন একজন আদর্শ রাজনীতিক। তার প্রথম জীবন থেকেই তিনি সাধারণ মানুষের অধিকার আদায়ের জন্য কাজ করতেন। তার সংগ্রামী জীবন, বিদ্রোহী চেতনা ঘুমঘোরে আচ্ছন্ন জাতিকে অধিকার আদায়ের অনুপ্রেরণা যোগায়।
ন্যাপ মহাসচিব গোলাম মোস্তফা ভুইয়া বলেন, ১৯৫২ সালে বাংলা মায়ের ভাষার অধিকার আদায়ের সংগ্রামে নেতৃত্ব দিয়েছেন, বাংলাদেশের স্বাধিকার ও স্বাধীনতার স্বপ্ন নিয়ে ১৯৫৭ সালে মজলুম জননেতা মওলানা ভাসানী ন্যাপ গঠন করলে তিনি তাঁর পাশে এসে দাঁড়ান। আমৃত্যু তিনি সাধারণ মানুষের অধিকার আদায় ও তাঁর স্বপ্নের বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে অবতীর্ণ ছিলেন।
স্মরণ সভায় আরও অংশ নেন বিএনপি চেয়াপারসনের উপদেষ্টা নজমুল হক নান্নু, এনডিপি প্রেসিডিয়াম সদস্য মঞ্জুর হোসেন ঈসা, গণ-সাংস্কৃতিক দলের সভাপতি এস আল মামুন, ভাসানী সাহিত্য-সাংস্কৃতিক পরিষদের সভাপতি মতিয়ারা চৌধুরী মিনু, অধ্যক্ষ সালমা আহমেদ হীরা, মনিরুল আলম প্রমুখ। পরিষদের সদস্য ডা. এমএ মুক্তাদিরের সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য রাখেন ভাষা আন্দোলন স্মৃতি রক্ষা পরিষদের সভাপতি এমআর মাহবুব। স্মরণসভায় ‘আলোকচিত্রে ভাষা মতিন’ নামক বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করা হয়।
মন্তব্য করুন