বাংলাদেশের সমুদ্রসীমায় বিপুল সম্ভবনা থাকলেও সেখানে ভারত বড় বাধা হয়ে দেখা দিচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে জাতীয়তাবাদী মৎস্যজীবী দল। গতকাল সোমবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এই অভিযোগ করা হয়। দলটির সদস্য সচিব আবদুর রহিম স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে বলা হয়, ভারত এবং মিয়ানমারের কাছ থেকে বুঝে নেয়ার পর প্রায় প্রতি বছর সমুদ্রসীমায় বাংলাদেশী মৎস সম্পদ আহরনের পরিমান বেড়েছে। সমুদ্রসীমা হতে প্রথম বছর ৩০০ কোটি ডলারের বেশি জলজ সম্পদ হাতে পায় বাংলাদেশ। যার মূলেই মৎসজাত পণ্য। বর্তমানে বাংলাদেশ প্রায় ৯৬০ কোটি ডলারের মত জলজ মৎস সম্পদ পাচ্ছে বাংলাদেশের জলসীমা হতে। কিন্তু এখানেও বাধ সেধেছে ভারতীয় এবং থাইল্যান্ডের জেলেরা। উচ্চ প্রযুক্তির বিজ্ঞান নির্ভর জলজযান এবং অতিরিক্ত সুক্ষ জাল ব্যবহার করে সমুদ্রের গভীর হতে রাতের আধারে মূল্যবান জলজ সম্পদ চুরি করছে তারা।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, বাংলাদেশ কোস্টগার্ড ইতোমধ্যে প্রায় ১০০’র বেশি ভারতীয়কে বাংলাদেশের সমুদ্রসীমা হতে আটক করে কারাগারে পাঠিয়েছে। কিন্তু, সাগরের ভারতীয় অংশে তাদের নির্বিচারে মৎস আরোহন করার ফলস্বরুপ সেখানেও মাছে অভাব দেখা দিয়েছে। এজন্য কোস্টগার্ডের চোখ ফাঁকি দিয়ে বাংলাদেশে মৎস্য শিকারই এখন তাদের বড় লক্ষ্য। বে অব বেঙ্গলে ‹›সোয়াচ অব নো গ্রাউন্ড›› এখনো প্রাকৃতিক সম্পদে ভরুপুর। বাংলাদেশ চাইলে ২ হাজার থেকে ৩ হাজার কোটি টাকার মৎস সম্পদ সমুদ্র থেকে পেতে পারে। কিন্তু নির্বিচারে সমুদ্র সীমায় মাছ ধরার ফল হতে পারে ভয়াবহ। তাই গভীর সাগরে মাছ ধরার পারমিট দেয়ার বেলায় বাংলাদেশকে আরো হিসেবি হতে হবে। একই সাথে সোয়াচ অব নো গ্রাউন্ড নীল তিমি, শুশুক, ডলফিনের মত বিলুপ্তপ্রায় প্রাণিদের আবাসস্থল। সেসব স্থানকেও পরিপূর্ণ নিরাপত্তা দিতে হবে।
বিবৃতিতে আবদুর রহিম বলেন, ভারত এবং মিয়ানমার উভয় দেশই এখন বে অব বেংগলে মেরিটাইম সুপিরিয়রিটি অর্জন করেছে কিংবা শীঘ্রই অর্জন করবে (বার্মা)..সে তুলনায় ৪ টি আপগ্রেডেড মিগ-২৯ ই বর্তমান ভরসা। শুধুমাত্র জলজ সম্পদ দিয়েই বছরে ৩০০০ কোটি ডলারের সম্পদ পেতে পারে বাংলাদেশ। সেখানে তেল-গ্যাস আহোরন করে বাংলাদেশ কি পরিমাণ সম্পদ পেতে পারে তা কল্পনা করাও কষ্টকর।
মৎস্যজীবী দলের বিবৃতিতে বলা হয়, বাংলাদেশের সমুদ্রসীমা শুধু বাংলাদেশেরই, আর কারো নয়। তাই এ সীমার রক্ষা অত্যন্ত জরুরী। মহীসোপানে ইতোমধ্যে ভারতের নজর পড়েছে। আন্তর্জাতিক আদালতে এর বিচার হবে এবং বাংলাদেশ তার নায্য হিস্যাও আদায় করে নেবে। একই সাথে বাহিনীগুলোকে যুগোপযোগী করার কোন বিকল্প নেই। কননা আমাদের ৬৫% বাণিজ্যই হয় সমুদ্রপথে,তাই ভবিষ্যতের যুদ্ধ হবে সাগরে,স্থলে না।
অপর এক বিবৃতিতে মৎস্যজীবী দল ইলিশ ধরা বন্ধ থাকাকালীন সময়ে জেলেদের প্রয়োজনীয় পরিমাণ চাল বরাদ্দের পাশাপাশি নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের খরচ মেটানোর জন্য নগদ আর্থিক প্রণোদনা প্রদানের দাবি জানায়।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন