বরিশালের এয়ারপোর্ট থানার বিল্ববাড়ী এলাকা থেকে স্বামী, স্ত্রী ও ছেলেসহ তিন প্রতারককে আটক করেছে পুলিশ। আটককৃতরা বিএমপি কাউনিয়া থানার কাগাশুরার বাসিন্দা মৃত বারেক শেখের মেয়ে শাহিনুর বেগম, তার স্বামী আমিনুল ইসলাম সুমন মোল্লা ও তাদের ছেলে শাহারিয়ার ইসলাম শাকিল।
বিএমপি’র উপ-পুলিশ কমিশনার (উত্তর) মো. জাকির হোসেন মজুমদার জানান, বরিশালের কাউনিয়া থানার কাগাশুরায় বারেক শেখ সুপার মার্কেটে বন্ধুজন ফার্নিচার মেলা অ্যান্ড ভ্যারাইটিজ স্টোর নামে একটি দোকান খুলে শাহিনুর বেগম, তার স্বামী আমিনুল ইসলাম সুমন মোল্লা ও তাদের ছেলে শাহারিয়ার ইসলাম শাকিল। গত ১ বছর যাবত ফার্নিচার, গ্রোসারী জিনিস কম মূল্য কিস্তির মাধ্যমে দেবে বলে মানুষকে প্রলোভন দেখিয়ে এ পর্যন্ত প্রায় এক হাজার মানুষের কাছ থেকে সপ্তাহে ২০০ টাকা, আবার কারো কারো কাছ থেকে প্রতিদিন ৫০ টাকা নিয়ে তাদের মধ্যে দু’একজনকে তারা কিছু পণ্য দেয়। বাকিদেরকে আর কোন পণ্য না দেয়ায় গ্রাহকরা তাদের পণ্য দেবার জন্য বা টাকা ফেরত দেবার দাবি জানান। জনগণের দাবির প্রেক্ষিতে গত তিন মাস এসব প্রতারক পালিয়ে বেড়াচ্ছিল। তারা এখন আর কারো কাছ থেকে কোন টাকাও নিচ্ছে না। আর যে টাকা ইতোমধ্যে নিয়েছে সে টাকাও ফেরত দিচ্ছে না। এভাবে গত ১ বছরে জনগণের কাছ থেকে পণ্য দেয়ার নাম করে তারা কয়েক লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। তারা জনগণের বিশ্বাস অর্জনের জন্য টাকার রশিদ দিত। কিন্তু তাদের টাকা নেয়ার আইনত কোন ভিত্তি ছিলো না। এ সবই ছিল তাদের কৌশল মাত্র।
উপ-পুলিশ কমিশনার জানান, এটা ছিল ই-কমার্সের মিনি ভার্সন। পণ্যের মূল্য এককালীন পরিশোধ করতে না পারলে অল্প অল্প করে অর্ধেক মূল্য জমা দিয়ে মালামাল নিতে পারবেন এবং বাকি মূল্য মালামাল নেওয়ার পর আবার অল্প অল্প করে কিস্তিতে পরিশোধ করতে পারবেন বলেও প্রলোভন দেখাত। এছাড়া ৫ হাজার টাকা জমা হলে ১ লাখ টাকা ঋণ দেয়ার কথাও বলে আসছিল।
এ প্রেক্ষিতে গত সোমবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে শাহিনুর বেগম, তার স্বামী আমিনুল ইসলাম সুমন মোল্লা ও তাদের ছেলে শাহারিয়ার ইসলাম শাকিল টাকা উত্তোলন করে পূর্ব বিল্ববাড়ী হারুনের দোকানের সামনে আসলে ভুক্তভোগীরা তাদের ঘিরে ধরলে তারা দৌঁড়ে পালাবার চেষ্টা করে। এসময় ভুক্তভোগীরা তাদের আটকে রেখে এয়ারপোর্ট থানায় খবর দেয়। পুলিশ তাদেরকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়।
আটক আসামিদেরকে জিজ্ঞাসাবাদে এ ঘটনার প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া গেছে। ছেলে শাহারিয়ার ইসলাম শাকিল এখনও নাবালক থাকায় তাকে সমাজ সেবা অফিসের প্রবেশন অফিসারের জিম্মায় দেয়া হয়েছে। বাকি দু’জনকে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন