মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০২৪, ০৫ চৈত্র ১৪৩০, ০৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

ব্যবসা বাণিজ্য

ইচ্ছা আর পরিশ্রমে সফলতা প্রমাণ করেছেন রূমা বেগম

প্রকাশের সময় : ১২ অক্টোবর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

মাগুরা থেকে সাইদুর রহমান : উদ্যম ও সাহস কঠিন কাজ কে অনেক সময় সহজ করে তোলে। ইচ্ছাশক্তি আর অদম্য পরিশ্রমের কাছে ধরা দেয় সফলতা, হার মানে দারিদ্র্য। তারই এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত রেখেছে মাগুরা পৌরসভার ১নং ওয়ার্ডের আবালপুর গ্রামের রূমা বেগম। স্বামী, একছেলে, দুই মেয়ে এবং শাশুড়িসহ ছয় সদস্যর সংসার রূমা বেগমের। তার স্বামী একজন দর্জি শ্রমিক। স্বামীর একার আয়ে সংসারের সকল প্রয়োজন মেটানো সম্ভব হয় না। অভাব অনটন যেন তাদের সংসারে নিত্যদিনের সাথী। বসতভিটা ছাড়া আবাদি জমিও তেমন নেই। নিরুপায় রূমা বেগম ভাবতে থাকেন কিভাবে সংসারে সচ্ছলতা আনা যায়। কিভাবে ঘরে বসে বাড়তি আয় করা যায় সে চিন্তা তার মাথায় সব সময়। এরই মধ্যে মনবল নিয়ে স্থির করেন, বাড়ীতে গরু মোটা তাজা করবেন এমন ইচ্ছা তার অনেক দিনের। ঠিক তখনই অর্থের প্রয়োজন দেখা দেয়। টাকার জন্য হন্যে হয়ে দুয়ারে দুয়ারে ঘুরতে থাকেন। কিন্তু কে দেবে তাকে আর্থিক সহায়তা। তাই তিনি অর্থের জন্য দিশেহারা হয়ে পড়েন। ঠিক এই মুহূর্তে সে আন্তর্জাতিক সাহায্য সংস্থা মুসলিম এইড বাংলাদেশ মাইক্রো ফাইন্যান্স প্রোগ্রামের সন্ধান পান। রূমা বেগম ২০০৭ সালে মুসলিম এইড এর সদস্য হয়। সংস্থাটি থেকে কোন সুদ ছাড়া দশ হাজার টাকা সাহায্য পেয়ে উক্ত টাকা দিয়ে শুরু হয় তার জীবনযুদ্ধে টিকে থাকার সংগ্রাম। এরপর তাকে আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। মুসলিম এইড বাংলাদেশ মাগুরা শাখা থেকে পর্যায়ক্রমে তিনি নয় বারে মোট চার লাখ পঞ্চান্ন হাজার টাকার ঋণ সুবিধা নিয়ে বাড়ীতে একটি গরু কিনে মোটা তাজাকরণ শুরু করেন। এখন তার এক লাখ টাকা বিনিয়োগ চলছে। বর্তমানে তার খামারে চারটি গরু আছে, সেখানে তিনি নিজে ও স্বামী পরিশ্রম করেন, ইহা ছাড়াও তিনি বাড়ীর পাশে স্বামীকে একটি ঘরে কিছু ছিট কাপড়সহ দোকান সাজিয়ে দেন, দোকানে কাজের অডার ও মালামাল বিক্রি ভালই হয়। রূমা বেগম এক ছেলে ও এক মেয়েকে স্কুলে লেখাপড়া করাচ্ছেন। বর্তমানে প্রতি মাসে তার সংসার খরচ পরিচালনার পরে বাড়তি আয় ১০ হাজার থেকে ১২ হাজার টাকা। তার ইচ্ছা ছেলেমেয়েদের শিক্ষিত করবেন, মানুষের মত মানুষ করবেন। রূমার সঙ্গে আলাপ কালে তিনি বলেন, বর্তমান সমাজে টাকা-পয়সা।
লেনদেনে যেভাবে সুদপ্রথার প্রচলন শুরু হয়েছে তাতে জড়িয়ে পড়েছে আমাদের মত গরীব সাধারণ অসহায় মানুষরা এর মাঝে মুসলিম এইড বাংলাদেশ এর নাম মাত্র সার্ভিস চার্জ (১৩%) সমাজে ব্যাপক ভূমিকা পালন করছে, রূমা আরও বলেন, মুসলিম এইড যদি আমাকে আরও ঋণ দেয় তাহলে আমি আমার গরুর ফার্মটি আরও সম্পসারণ করতে সক্ষম হব এবং মুসলিম এইড-এর প্রতি চিরকৃতজ্ঞ থাকব। মুসলিম এইড মাইক্রো ফাইন্যান্স প্রোগ্রামের মাগুরা সদর শাখা ব্যবস্থাপক মোঃ আশরাফুল আলম বলেন আমরা সমাজের সাধারণ মানুষের পাশে থাকার চেষ্টা করে যাচ্ছি এবং ঋণ বিতরণের পাশাপাশি সমাজে বাল্যবিবাহ, মাদকের কুফল, নারী ও শিশু পাচার, ইভটিজিং এবং সাস্থ্য স্যানিটেশন সম্পর্কে সচেতন করছি। রূমার মত অনেকেই মুসলিম এইডের ঋণ গ্রহণ করে স্বাবলম্বী হওয়ার স্বপ্ন দেখছে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন