শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সারা বাংলার খবর

পানিবদ্ধতায় দুর্ভোগের শিকার অর্ধলক্ষ মানুষ মীরসরাইতে খাল দখল করে বসতবাড়ি, মার্কেট নির্মাণ

প্রকাশের সময় : ১২ অক্টোবর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

আমিনুল হক, মীরসরাই (চট্টগ্রাম) থেকে : মীরসরাই উপজেলার পাহাড়ী এলাকা থেকে প্রাকৃতিকভাবে সৃষ্টি হওয়া বিশাল বিশাল খাল ছরাগুলো ছোট ও সংকীর্ণ হতে হতে অবশেষে ক্ষুদ্রাকায় নালার আয়তন লাভ করেছে। সরকারি এসব খালগুলো দখল করে যে যার মতো সব ঘরবাড়ি, দোকানপাট ইত্যাদি নির্মাণ করে গোটা উপজেলাকেই হুমকির মুখে পতিত করেছে। ইতিমধ্যে এই প্রবণতা বৃদ্ধি পেতে ও দেখা যাচ্ছে।
উপজেলার কয়েকটি ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি গ্রামের অন্তত অর্ধলক্ষ মানুষ প্রতি বছর জলাবদ্ধতার কবলে পড়ে পোহাচ্ছে সীমাহীন ভোগান্তি। স্ব-স্ব এলাকার প্রভাবশালীদের ম্যানেজ করে কিছু পরিবেশ অসচেতন লোক এই সরকারি খালগুলো দখল করছে। প্রতিবাদ বা প্রতিরোধে এগিয়ে আসছে না সচেতন মহল।
মিরসরাই উপজেলার ঐতিহাসিক খালগুলোর মধ্যে ইছাখালী খাল, ডোমখালী খাল, মঘাদিয়া খাল, সাহেরখালী খাল, হিঙ্গুলী খাল, গোভানিয়া ছরা, মহামায়া ছরা, দুর্গাপুর, কাটাছরা, মিঠানালা খাল সহ অগনিত খাল-এর আয়তন ছিল একসময় কয়েক শত ফুট প্রস্থের। এসব খাল সংকীর্ণ হতে হতে এখন কোথাও কোথাও ১০ ফুটের নালার মতো হয়ে গেছে। অথচ সরকারি সীটেসহ ভূমি বিভাগের সর্বত্র ছিল কয়েকশ’ ফুট আয়তনের।
আবু তোরাবের প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যক্তি অভিযোগ করে বলেন, দখলদারেরা স্থানীয় ভূমি অফিস থেকে শুরু করে প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে মোটা অংকের সুবিধা দিয়ে সরকারি এ খালটি অবৈধভাবে গ্রাস করেছে। এদের ভয়ে এলাকার কেউ প্রতিবাদ করতে সাহস পায় না। এদিকে, খালগুলো দখলের কারণে বিভিন্ন দিক দিয়ে পাহাড়ি ঢলের পানি খালগুলো হয়ে দ্রæত চলে যেতে পারে না সমুদ্রে। হাট-বাজারগুলোর বিভিন্ন অংশে খালগুলোর উপর দোকানপাট কোথাও ঘর-বাড়ি, কোথাও মার্কেটও নির্মাণ করে রেখেছে স্বার্থান্বেষী দখলদাররা। বিশেষ করে উপজেলার আবুতোরাব, শান্তিরহাট, বামনসুন্দর, আবুরহাট বাজারে। করেরহাট ও বারইয়াহাট বাজারের তো অনেক স্থানে খাল বা ছরার কোনো চিহ্ন ও নেই। যেখানে ইতিমধ্যে গড়ে উঠেছে বিলাসবহুল মার্কেট বা দোকানপাট। ইতিমধ্যে অনেককে বিভিন্ন স্থানে বাড়িঘরও নির্মাণ করতে দেখা যাচ্ছে।
এদিকে আবার উপজেলার খৈয়াছরা, ইছাখালী ও ওচমানপুর ইউনিয়নের অন্তত অর্ধলক্ষ মানুষ জলাবদ্ধতারও শিকার হচ্ছে। খৈয়াছরা ইউনিয়নের ফেনাফুনি গ্রামে প্রতি বছর জলাবদ্ধতার শিকার হয়ে হাজার হাজার পরিবার এর দুর্ভোগের অন্ত থাকে না। পুরো গ্রাম তলিয়ে যায় পাহাড়ি ঢলে। প্রায় টানা কয়েক মাস দুর্ভোগের সীমা থাকে না তাদের। ওচমানপুর ইউনিয়নের বাঁশখালী গ্রাম এবং ইছাখালীর কিছু অংশে ও দুর্ভোগের অন্ত থাকে না।
এসব সরকারি খাল রক্ষা ও অবৈধ দখলদারদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার বিধি নিয়ম থাকলেও প্রশাসনের নেই কোনো মাথাব্যথা। এতে দখলদার সরকারি ভূমি খেকোরা আরো বেপরোয়া হয়ে ওঠেছে। ফলে প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে জনমনে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
এই বিষয়ে মায়ানী ইউনিয়ন পরিষদ-এর চেয়ারম্যান কবির নিজামী-এর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন এসব অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ করতে প্রশাসন উদ্যোগ নিলে আমরা অবশ্যই সহযোগিতা করবো। এই বিষয়ে মিরসরাইয়ের সহকারি কমিশনার ভূমি আজগর আলী এর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন এভাবে সরকারি খাল দখল করার কোনো নিয়ম নেই। আমরা শীঘ্রই এইসব অবৈধ দখলদারদের তালিকা করে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করব।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন