নিখোঁজের প্রায় দেড় মাস পরেও বরিশাল মহানগর পুলিশের সাবেক এসআই আনোয়ার হোসেনের কোন সন্ধান মেলেনি। স্বামীকে ফিরে পেতে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের হস্তক্ষেপ কামনা করেছে নিখোঁজ আনোয়ারের স্ত্রী নাজমা সুলতানা।
পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি নিখোঁজ থাকায় দুই সন্তানের ভবিষ্যত নিয়ে চিন্তিত হয়ে পরেছেন নাজমা সুলতানা। একদিকে সংসার চালাতে কষ্ট, অন্যদিকে সন্তানদের শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধের উপক্রম হওয়ায় বরিশাল নগরীর ভাড়াটিয়া বাসা ছেড়ে সন্তানদের নিয়ে তিনি পটুয়াখালীর সবুজবাগ এলাকার স্বামীর গ্রামের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন। নাজমা সুলতানা জানান, বরিশাল মহানগর পুলিশের কাউনিয়া থানায় এসআই হিসেবে কর্মরত থাকাবস্থায় এলাকায় একটি বাসা ভাড়া নিয়ে দুই সন্তানকে সেখানকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি করা হয়। তাদের বড় ছেলে আয়াতুল্লাহ বরিশাল জেলা স্কুলের দশম ও ছোট ছেলে আলী নেওয়াজ বরিশালের একে সিরাজী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র। বর্তমানে বাবার অনুপস্থিতিতে তাদের শিক্ষা কার্যক্রম প্রায় বন্ধের উপক্রম।
নাজমা সুলতানা আরও জানান, গত বছরের ২৭ মে আনোয়ার হোসেন করোনায় আক্রান্ত হন। এরপর তিনি আরও বেশ কিছু জটিলরোগে আক্রান্ত হলে ডাক্তারের পরামর্শে চিকিৎসাধীন ছিলেন। এক পর্যায়ে চলতি বছরের ১ জানুয়ারি আনোয়ার হোসেনকে কাউনিয়া থানা থেকে রাঙ্গামাটির বাঘাইছড়ি থানায় বদলি করা হয়। তৎকালীন পুলিশ কমিশনারের কাছে ওই বদলির আদেশ বাতিল চেয়ে ম্যাসেঞ্জারে আবেদন করায় পুলিশ কমিশনার অসন্তুষ্ট হন। ওই ঘটনায় আনোয়ারের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা হয়। পরে আনোয়ার বাঘাইছড়ি থানায় যোগদান করলেও তিনি মানসিকভাবে অনেকটাই ভেঙে পড়েন।
পরবর্তীতে রাঙ্গামাটির পুলিশ সুপার তাকে ১৭ আগস্ট কুমিল্লা জেলায় বদলির ছাড়পত্র দেন। সেখান থেকে ২১ আগস্ট আনোয়ার হোসেন কাউনিয়ার ভাড়া বাসায় এসে স্ত্রী-সন্তানদের সাথে সময় কাটান। চারদিন পর ২৬ আগস্ট বিকেল থেকে আনোয়ার নিখোঁজ হন। এ ঘটনায় নাজমা সুলতানা বিএমপি’র কোতয়ালি থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। সেখানে নাজমা সুলতানা উল্লেখ করেন, ২৬ আগস্ট বিকেল চারটার দিকে তার সন্তানকে কোচিং থেকে নিয়ে বাসায় ফিরে এসে তার স্বামীকে আর দেখতে পাননি। পরে বিভিন্ন স্থানে খোঁজখবর নিয়েও স্বামীর সন্ধান পাওয়া যায়নি।
নাজমা সুলতানা বলেন, একদিকে স্বামী নিখোঁজ, অন্যদিকে সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছি। তারপর দুটি ছেলের শিক্ষা কার্যক্রমও বন্ধের পথে। সব মিলিয়ে এখন আমি নিজেও মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছি। তিনি সরকারের বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে তার স্বামীকে খুঁজে বের করে তার কাছে ফেরত দেবার আবেদন জানান।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন