কুমিল্লার নানুয়ার দীঘিরপাড়ের পূজামণ্ডপে পবিত্র কুরআন অবমাননার পেছনে কারা জড়িত তা নিয়ে এক চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছেন বাংলাদেশের হিন্দু মহাজোট মহাসচিব গৌবিন্দ প্রামানিক। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি টকশোতে কুমিল্লার ঘটনা প্রসঙ্গে তার দেওয়া একটি বক্তব্য ভাইরাল হয় ফেসবুকে। বহু মানুষ বক্তব্যটি শেয়ার করে তাকে সমর্থনও জানিয়েছেন। আবার তার এই তথ্যে অবাক হয়েছেন বলেও মত দিয়েছেন কেউ কেউ।
শনিবার ফেসবুকে সরাসরি প্রচারিত ওই টকশো অনুষ্ঠানে কুমিল্লায় পবিত্র কুরআন অবমাননা ও হামলার ঘটনায় কারা জড়িত থাকতে পারে বলে মনে করেন- এমন প্রশ্ন করা হয় হিন্দু মহাজোট মহাসচিব গৌবিন্দ প্রামানিককে। উত্তরে তিনি বলেন, স্থানীয়দের সাথে কথা বলে সব খবর নিয়ে যাচাই-বাছাই করে জানতে পেরেছেন স্থানীয় আওয়ামী লীগ সংসদ সদস্য এবং স্থানীয় মেয়রের মধ্যকার দ্বন্দের জের ধরে তারাই ঘটনাটা ঘটিয়েছে। কোন প্রকার টুপি পরা দাঁড়িওয়ালা মানুষ ওই ঘটনার সাথে যুক্ত ছিলেন না এটাও বলেন তিনি।
কুমিল্লার ঘটনা সাম্প্রদায়িক নাকি রাজনৈতিক এমন প্রশ্নর জবাবে বাংলাদেশের হিন্দু মহাজোটের এই শীর্ষ নেতা বলেন, ‘‘আমরা যাদেরকে দাঁড়িওয়ালা-টুপিওয়ালা বলি তারা এই ঘটনার সাথে জড়িত ছিল না। স্থানীয় সরকারদলীয় এমপি ও মেয়রের দ্বন্দের ফল এই ঘটনা ঘটানো হয়েছে। সামনে নির্বাচনে সুবিধা নিতে এই ঘটনা ঘটানো হয়েছে।
গৌবিন্দ প্রামানিক এটাও বলেছেন, অতীতে সুনামগঞ্জের শাল্লা, যশোরের অভয়নগর, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসির নগরে ঘটনাও একই রকম ছিল।
মিরাজ শরিফ তার এই বক্তব্য শেয়ার করে লিখেছেন, ‘‘সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্টের পেছনে যে ঘৃন্য রাজনীতি এবং এর সাথে কারা জড়িত এই বিষয়ে কোন হিন্দু-মুসলিম বিবেকবান মানুষের আর কোন সন্দেহ থাকার কথা না। কারণ কোনো প্রকৃত হিন্দু বা প্রকৃত মুসলমান কখনোই এ কাজ করবে না।’’
গৌবিন্দ প্রামানিককে সমর্থন করে আরিফুর রহমান লিখেছেন, ‘‘এটা শুধু ওখানকার (কুমিল্লা) মানুষের কথা নয়। এটা বাংলাদেশের সবাই বিশ্বাস করে, ব্যাপারটার সাথে সরকারী দলের কেউ জড়িত। কারন সিসিটিভি ফুটেজ দেখে পুলিশ বের করতে পেরেছে বা পারবে, কোন ব্যক্তি কোরআন শরিফকে মূর্তির পায়ের কাছে রেখেছিল।এরপর আম জনতা সেই ব্যক্তির পরিচয় জানতে পারে নাই। কিন্তু ব্যাপারটা তখনই জনগণ বুঝে গেছে। কে বা কারা এই বাজে ও জঘন্য কাজটি করেছে। এটা আসলে রাজনৈতিক চালবাজি।এর আগেও সরকারি দলের লোকজন হিন্দুদের বাড়ীতে আগুন দিয়েছিল (সুনামগঞ্জ), তা পত্র-পত্রিকায় এসেছিল।তবে সরকারের উচিৎ হবে দোষীদের কঠোর সাজা দেওয়া। এতে সরকারের ভাবমূর্তি বাড়বে।’’
রাকেশ রায়ের মন্তব্য, ‘‘নিঃসন্দেহে বাংলাদেশ একটি সামপ্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ, অস্থিরতা সৃষ্টি করে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির রাজনীতি করাই এই ঘটনার মূল উদ্দেশ্য। সবধর্ম মিলেমিশে থাকলে তো আর ধর্মনিরপেক্ষতার রাজনীতি করার মানে হয়না। ধর্মনিরপেক্ষতার রাজনীতি করতে হলে ধর্মের মাঝে বিরোধ সৃষ্টি করতেই হবে। আর বিরোধ বা অস্থিরতা ঘটলেই ব্যবসা চাঙ্গা। ঘটনাটা ঘটিয়েছে তারাই যারা কোনো ধর্মকেই বিশ্বাস করেনা। যারা ধর্মনিরপেক্ষ তারা সব ধর্মের শত্রু। তারা হিন্দুরো.. মারে, মুসলমানেরো ...মারে, খৃষ্টানেরো... মারে অর্থাৎ ধর্ম নিয়ে বিজনেস বা ব্যবসা করে।’’
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন