মাদারীপুরে সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানে আর্থিক অনুদান প্রদানে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। সাংস্কৃতিক কর্মীদের দাবি, অধিকাংশ বরাদ্দই দেয়া হয়েছে অস্তিত্বহীন প্রতিষ্ঠানের নামে। এতে করে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে প্রকৃত সংস্কৃতিসেবীদের।
জেলা প্রশাসক কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০২০-২০২১ অর্থবছরে চারুশিল্প, থিয়েটার খাত হতে মাদারীপুর জেলার ১৪টি প্রতিষ্ঠানকে আর্থিক অনুদান প্রদান করা হয়। প্রতিটি প্রতিষ্ঠানকে ৩০ হাজার টাকার চেক প্রদান করা হয়। অনুদানপ্রাপ্ত সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে- সাংস্কৃতিক মঞ্চ, স্বরলিপি সঙ্গীত শিক্ষা কেন্দ্র, উদয়ন খেলাঘর, উত্তরণ খেলাঘর, সারেগামা সঙ্গীত নিকেতন, সুরভী সাহিত্য সংসদ, সুর্যতরুণ সাংস্কৃতিক সংসদ, এমএসপি ইউনাইটেড, ক্ষ্যাপা ব্যান্ড ইত্যাদি।
সরেজমিন অনুসন্ধানে জানা গেছে, সাংস্কৃতিক মঞ্চ, চরমুগরিয়া নামে একটি সংগঠনের নামে চলতি অর্থবছরে অর্থ বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। সংগঠনের সভাপতি ইমরান হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক মাসুমা। মাদারীপুর পৌরসভার চরমুগরিয়া এলাকার কাউন্সিলর আবুল বাশার জানান, সাংস্কৃতিক মঞ্চ নামে কোন সংগঠন চরমুগরিয়া এলাকায় নেই। এদের কোন কর্মকান্ডও কখনও চোখে পড়েনি। যদি এদের অস্তিত্ব থাকতো তাহলে অবশ্যই চোখে পড়তো। সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানগুলো তো কোন আন্ডারগ্রাউন্ড প্রতিষ্ঠান না। এদের কর্মকান্ড থাকলে অবশ্যই চোখে পড়তো। জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে জমা দেয়া কাজগপত্র পর্যালোচনা করে জানা গেছে, এই সংগঠনের সভাপতি ইমরান হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক মাসুমা আপন ভাই বোন। মাদারীপুর শহরের চরমুগরিয়া এলাকায় সাংস্কৃতিক মঞ্চ নামে কোন সংগঠনের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়নি। এমন চিত্র অধিকাংশ সংগঠনের ক্ষেত্রেই। মাদারীপুর জেলা শিল্পকলা একাডেমির কালচারাল অফিসার সাইফুল হাসান মিলন বলেন, যেসব সংগঠনের অস্তিত্ব আছে তাদের অধিকাংশই কোন না কোনভাবে শিল্পকলা একাডেমির সাথে সম্পর্কযুক্ত। যাদের অস্তিত্ব আছে এবং কর্মকান্ড আছে সেইসব সংগঠনকে আমরা চিনতে পারবো। তিনি আরও বলেন, যেসব প্রতিষ্ঠানের কর্মকান্ড নেই, যাদের কোন অস্তিত্ব নেই তাদের বরাদ্দ পাওয়ার সুযোগ নেই। যদি বরাদ্দ পেয়ে থাকে তাহলে সাংস্কৃতিক মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ করে সংশোধন করার সুযোগ রয়েছে। মাদারীপুর সদর উপজেলাতে সাংস্কৃতিক মঞ্চ নামে কোন সাংস্কৃতিক সংগঠন আছে বলে জেলা শিল্পকলা একাডেমি মাদারীপুর অবগত নয়। এরা শিল্পকলা একাডেমি আয়োজিত কোন অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেছে বলে জানা নেই বলেও জানান তিনি। এছাড়াও ক্ষ্যাপা ব্যান্ড নামে কোন সংগঠন আছে বলেও জানা নেই বলেও জানান তিনি। তবে ক্ষ্যাপা সজল নামে একজন শিল্পীকে চিনেন বলে জানান তিনি।
মাদারীপুরের জেলা প্রশাসক ড. রহিমা খাতুন বলেন, অস্তিত্বহীন কোন সংগঠনের অনুদান পাওয়ার কথা নয়। যদি কোন সংগঠন অনিয়ম করে অনুদান নিয়ে থাকে তাহলে অনিয়মের তথ্য-প্রমাণ পেলে সেই সংগঠনের অনুদান বাতিল করা হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন