শুধু নামের মিল থাকায় প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধার মৃত্যুর পরেও সমাজসেবা অফিসের যোগসাজসে অবসরপ্রাপ্ত এক প্রভাষকের বিরুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধা সেজে ভাতার টাকা উত্তোলনের অভিযোগ উঠেছে। বরিশালের গৌরনদী উপজেলার সরিকল গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা মরহুম নুরুল ইসলাম একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে ২০০৪ সালে উপজেলাভিত্তিক মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাইয়ের সভায় চূড়ান্তভাবে তালিকাভুক্ত হন। তিনি ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে সরকার প্রদত্ত সম্মানী ভাতা উত্তোলন করে আসছিলেন।
নুরুল ইসলামের ছেলে নাছির জানান, ২০০৫ সালে মুক্তিযোদ্ধা গেজেট প্রকাশিত হলে তার পিতা নুরুল ইসলামের পিতার নাম মৃত আমজেদ আলী হাওলাদারের স্থানে ভুলক্রমে মৃত মোসলেম উদ্দিন হিসাবে প্রকাশিত হয়। যা পরবর্তীতে ভুল সংশোধনের জন্য আবেদন করা হয়। ২০২০ সালের ৮ আগস্ট বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুল ইসলাম মৃত্যুবরণ করার পর ২৪ আগস্ট পিতার মুক্তিযোদ্ধা সম্মানী ভাতা ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা উত্তোলনের জন্য উপজেলা সমাজসেবা অফিসে তিনি কাগজপত্র জমা দেন। পরবর্তীতে তার পিতার মুক্তিযোদ্ধা ভাতার টাকা তার সঞ্চয়ী হিসাবের মাধ্যমে উত্তোলন করে আসছিলেন।
নাছির জানান, এরই মধ্যে এমআইএস ফরমের ভুলক্রটি সংশোধনের জন্য অনলাইন থেকে পুনরায় ফরম উত্তোলন করতে গিয়ে সেখানে অপরিচিত লোকের ছবি দেখতে পান। এর কিছুদিন পর তার মৃত পিতা নুরুল ইসলামের নামধারী সরিকল নিজামউদ্দিন কলেজের অবসরপ্রাপ্ত প্রভাষক ও মুলাদী উপজেলার গাছুয়া এলাকার বাসিন্দা নুরুল ইসলাম তার পিতার গেজেট নম্বর দিয়ে নিজেকে মুক্তিযোদ্ধা হিসাবে দাবি করেন।
মুক্তিযোদ্ধার পুত্র দিনমজুর নাছির অভিযোগ করেন, উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের অফিস সহকারী নুরুজ্জামানের যোগসাজসে ইতোমধ্যে ওই ভুয়া ব্যক্তি তার পিতার আট মাসের মুক্তিযোদ্ধা ভাতা উত্তোলন করে নিয়েছেন। নাছির তার মৃত পিতার মুক্তিযোদ্ধা ভাতা বন্ধ থাকায় গত ১৭ আগস্ট বিষয়টি সমাধানের জন্য মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কমন্ত্রী বরাবরে আবেদন করেন। মন্ত্রী বিষয়টি তদন্ত করে রিপোর্ট প্রদানের জন্য উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে ইতোমধ্যে নির্দেশ প্রদান করেছেন।
নাছির জানান, উপজেলা নির্বাহী অফিসার উভয়পক্ষকে শুনানিতে অংশগ্রহণের নির্দেশ প্রদান করলে অবসরপ্রাপ্ত প্রভাষক নুরুল ইসলাম ভুয়া হিসেবে আখ্যায়িত হয়েছেন। কিন্তু নুরুল ইসলাম স্থানীয় কতিপয় ব্যক্তির সহায়তায় তাকে বিভিন্নভাবে হয়রানি করছেন বলেও অভিযোগ করেছে নাছির। দীর্ঘদিন মুক্তিযোদ্ধা বাবার সম্মানী ভাতা বন্ধ থাকায় পরিবার-পরিজন নিয়ে এখন তিনি মানববেতর জীবনযাপন করছেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন