বৃহস্পতিবার ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৮ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সারা বাংলার খবর

রস সংগ্রহকারীরা আদমদীঘিতে ঘুরে বেড়াচ্ছে

হালকা শীতের আবহে সাজছে খেজুর গাছ

মো. মনসুর আলী, আদমদীঘি (বগুড়া) থেকে | প্রকাশের সময় : ২৯ অক্টোবর, ২০২১, ১২:০১ এএম | আপডেট : ৮:৩৫ এএম, ২৯ অক্টোবর, ২০২১

শীতের দেখা পেতে এখনো বড্ড দেরি। তাতে কী, হেমন্তের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকেই দেশের উত্তরের অনেক এলাকায় মধ্যরাতের পর হালকা দেখা মিলছে। গ্রামাঞ্চলে হালকা শীতের আবহে বসে নেই খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহকারীরা। আদমদীঘি উপজেলা সদরসহ পাশ্ববর্তী এলাকার গ্রামে শুরু হয়েছে খেজুর গাছ ছিলার কাজ।

বছর ঘুরে শীত এলেই খেজুর গাছ নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করেন গাছিরা। শীতের দেখা পেতে দেড় থেকে দুই দু’মাস অপেক্ষা করতে হবে। কিন্তু বর্তমানে মধ্যরাতের পর হালকা শীতই ব্যস্ততা বাড়িয়েছে গাছিদের। স্থানীয় গাছিদের পাশাপশি ৩ মাসের জন্য গাছ মালিকদের গুড় ও অর্থ দেওয়ার চুক্তি করে দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকেও গাছিরা আদমদীঘিতে এসে রস সংগ্রহের জন্য গাছ ছিলার কাজে নেমে পড়েছেন।

স্থানীয় গাছিরা জানান, এলাকায় খেজুর গাছ আগের চেয়ে অনেক কম। বাড়ি-ঘর, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠায় শুধু খেজুর গাছ নয়, অন্যান্য ফলজ-ওষুধি গাছ কমেছে। এক সময় এলাকায় খেজুর গাছ অনেক বেশি থাকলেও এখন আর আগের মত নেই। তারপরও যেসব এলাকায় গাছের সংখ্যা বেশি সেসব এলাকায় গাছিদের বিচরণও বেশি দেখা যায়।

খেজুর গাছের মাথার অংশে একটি নির্দিষ্ট জায়গায় চ্যাচ দিয়ে বাঁশের বা লোহার নলি পুতে দিলে তা দিয়ে ফোঁটা ফোঁটা করে মিষ্টি রস বের হতে থাকে। গাছের সাথে বেঁধে দেওয়া ছোট কলসি রাতভর ঠান্ডায় ফোঁটা ফোঁটা রসে পরিপূর্ণ হয়। সকালে গাছ থেকে কলসি নামিয়ে রস বাজারে বিক্রির পাশাপাশি গুড়ও তৈরি করা হয়।
খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহের জন্য বিভিন্ন রকমের পরিচর্যায় ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন গাছিরা। ছোট-বড় খেজুর গাছে অত্যান্ত ঝুঁকি নিয়েই কোমরে মোটা রশি বেঁধে গাছিদের ঝুলে ছিলা চ্যাচার কাজ করতে হয়। বর্তমানে গাছ প্রস্তুত করার কাজ চলছে। রসের দেখা পেতে আরো দুই থেকে তিন সপ্তাহ অপেক্ষা করতে হবে।

গাছিরা জানান, পুরো শীত মৌসুমে রস বিক্রি এবং গুড় তৈরির পর বাজারে বিক্রি করে বেশ ভালো আয় হয়। গাছিদের পাশাপাশি গাছ মালিকদের কেউ কেউ গুড় আবার কেউ অর্থ পেয়ে লাভবান হন।
অতীতে খেজুর রসের যে সুখ্যাতি ছিল তা ক্রমেই কমে যাচ্ছে। আগের মতো মাঠে ঘাটে ও রাস্তার পাশে সারিবদ্ধ খেজুর গাছ দেখা যায় না। তারপরও শীতের সকালে গ্রাম-গঞ্জে খেজুর রসের জন্য অপেক্ষায় থাকে সব বয়সের মানুষ। রস দিয়ে তৈরি পায়েস ও হরেক রকমের লোভনীয় পিঠা, পাটালি এবং খেজুর গুড় বাঙালির সংস্কৃতির একটা অংশ। আর তাই খেজুর গাছের রসের কদর এখনো কমেনি।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন