সকালের দুর্বা ঘাস কিংবা ফসলের সবুজ ডগায় বিন্দু বিন্দু শিশির কণা, মাঠে-প্রান্তরে ভোরবেলা শিশির মাখা ধানের ডগা জানান দিচ্ছে শীতের আগামনী বার্তা। ঋতু পরিবর্তনের সাথে প্রকৃতিও তার পরিবর্তিত রূপ নিয়ে শীতের আগমনী বার্তা নিয়ে এসেছে। আর তাই গোটা উত্তরাঞ্চল জুড়েই প্রকৃতি নিয়ে এসেছে শীতের আমেজ।
শরতের শেষে শীতের আগমনী বার্তা নিয়ে প্রকৃতিতে আসে ঋতুরাণী হেমন্ত। হেমন্তের আগমনে প্রকৃতিও সাজে অপরুপ সাজে। আর তাই হেমন্তকে বলা হয় ঋতুর রাণী। ঋতু রাণীর আগমনের সাথে সাথেই শুরু হয় শীতের আগমন। বিকেল থেকে হিমেল বাতাস, সন্ধ্যার মৃদু কুয়াশা, রাতের রানী শিউলী ফুলের মন মাতানো ঘ্রাণ, সকালে সবুজ ঘাসের মাথায় জমে থাকা শিশির কণাই জানান দেয় প্রকৃতিতে হেমন্তের আগমন। হেমন্তর আগমনে অনেকটাই যেন শান্ত হয়ে যায় উত্তপ্ত প্রকৃতি। গ্রীষ্ম ও শীতের মধ্যে হেমন্ত অপরূপ এক সেতুবন্ধন। সকালের শিশিরভেজা ঘাস, ভোরে ও সন্ধ্যায় কুয়াশার চাদরে ঢাকা প্রকৃতি। শীতের আগাম সবজি খেতে কৃষকের হাজারো ব্যস্ততা। কার্তিকের মাঝামাঝি সময়েই সন্ধ্যা থেকে ভোর পর্যন্ত শীতল হাওয়া আর বিকেলে ঝরতে থাকা হাল্কা ধুসর কুয়াশা। ভোরে সূর্যের আলো মাখামাখি করে মাকড়সার জালে আটকে পড়ে এক অপরূপ আবেশ তৈরি করে বিন্দু বিন্দু শিশির কণা।
রংপুরসহ উত্তর জনপদের প্রতিটি জেলাতেই শীতের আগমনী বার্তা চলে এসেছে। ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে সন্ধ্যা থেকে মৃদু হিমেল বাসাত সাথে হাল্কা কুয়াশা। বাড়ির ছাদে ছোট ছোট টবে ফুলের গাছের পাতায় কিংবা ডগায় শিশির কনা, গ্রামের মেঠো রাস্তার দুই ধারে দুর্বা ঘাসের ওপর পড়ে থাকা শিশির কণা, মাঠে সোনালী রোপা ধানের শীষে শিশির কনা জানান দিচ্ছে হেমন্ত তার প্রকৃতিতে এনে দিয়েছে শীত। শীতের আগমনে সবখানেই শুরু হয়েছে লেপ-তোষক তৈরীর কাজ। বাজারেও শুরু হয়ে গেছে পুরাতন কাপড় বিক্রয়। ইতিমধ্যেই চলে এসেছে শীতের আগাম সবজি। গ্রাম বাংলার মানুষের জীবনে হেমন্ত মানেই নবান্নের আমেজ।
হেমন্তের আগমনে মাঠে মাঠে ফসলও তার রং পরিবর্তন করতে শুরু করেছে। আর কয়দিন পরেই কৃষকের ঘরে ঘরে উঠবে ঘাম ঝরানো ধান। আর এই নতুন ধানের চাউল থেকে বাংলার গৃহবধূরা তৈরি করবেন হরেক রকমের পিঠা।
মূলত, অগ্রাহায়ণের প্রথম থেকেই ধান কাটার মৌসুম শুরু হয়। গ্রামের ঘরে ঘরে ফসল তোলার আনন্দ। নতুন ধানের গন্ধে অন্যরকম আবহাওয়া বইতে থাকে। ধান ভানার গান ভেসে বেড়ায় বাতাসে। নবান্ন আর পিঠেপুলির আনন্দে মাতোয়ারা হয় সবাই। আর ক’দিন পরেই সে আনন্দে মাতোয়ারা হবে উত্তর জনপদের কৃষাণ-কৃষাণীরা।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন