ভাড়ায় মোটরসাইকেল চালিয়ে সংসারের হাল ধরতে চেয়েছিলেন হতদরিদ্র পরিবারের সন্তান বাপ্পী মোল্লা (২৫)। তবে তার বাবা তাকে মোটরসাইকেল কিনে দেননি। তাই নিজের কিডনি বিক্রি করে মোটরসাইকেল কেনার সিদ্ধান্ত নেন বাপ্পী। কিডনি বিক্রির জন্য তিন দিন ধরে তিনি এক হাসপাতাল থেকে আরেক হাসপাতালে ক্রেতা খুঁজে বেড়াচ্ছেন। কিডনি বিক্রির বিষয়টি বেআইনি জেনেও নিরুপায় হয়ে ক্রেতার খোঁজ করছেন বাপ্পী। রোববার বিকেলে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতাল থেকে পুলিশ তাকে আটক করেছে। বর্তমানে তিনি যশোর কোতোয়ালি মডেল থানা পুলিশের হেফাজতে রয়েছেন।
বাপ্পী মোল্লা জানান, চার-ভাই বোনের মধ্যে বাপ্পী সবার বড়। বাপ্পী ও তার হতদরিদ্র বাবা এলাকার পরের জমিতে কৃষি দিনমজুর হিসাবে কাজ করে। গত চার মাস আগে মাগুরা জেলার বারাসি গ্রামের শরীফ হোসেনের মেয়ে সুমাইয়া খাতুনের সাথে তার বিয়ে হয়। বিয়ের পরে কৃষি কাজ করে সংসার খরচ ভালোমতো না চলায়; বউ পরামর্শ দেয় মোটর সাইকেল ভাড়া চালাতে। সেই পরামর্শেই বাপ্পী তার বাবার কাছে মোটর সাইকেল কেনার টাকা চায়। কিন্তু বাপ্পীকে মোটর সাইকেল কিনে না দিয়ে বাবা তার ছোট ভাই সাগরকে মোটর সাইকেল কিনে দেয়। এতে গত (৪ নভেম্বর) বাবার সাথে তার বাগবিতন্ডা হয়। সেই দিনই তার বউ সুমাইয়া পারিবারিক কলহে বাবার বাড়িতে চলে যায়।
তার পরেও বাবার প্রতি রাগ করে মোটরসাইকেল কিনেই বাড়িতে ফিরবেন তিনি প্রতিজ্ঞা করেন। এর পরে গত তিন ধরে ঝিনাইদহ ও যশোরের বিভিন্ন হাসপাতাল ও ক্লিনিক ঘুরে বেড়াচ্ছেন কিনডি ক্রেতার খোঁজে। সেই ধারাবাহিকতায় রোববার সকাল থেকে যশোর জেনারেল হাসপাতালে বিভিন্ন ওয়ার্ডে কিনডি ক্রেতা খুঁজতে থাকে। এক পর্যায়ে তার চলাফেরা সন্দেহ হলে ওয়ার্ডবয়রা বাপ্পীকে হাসপাতালে দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যদের হাতে তুলে দেয়।
হাসপাতালে দায়িত্বরত কনস্টেবল সৌরভ বলেন, ঝিনাইদহের এক যুবক নিজের কিনডি বিক্রি করবেন বলে ক্রেতা খুঁজে বেড়াচ্ছে জানতে পেরে তাকে আটক করে যশোর কোতয়ালী মডেল থানায় হসান্তর করা হয়েছে। এই বিষয়ে জানতে রাত ৮টা পর্যন্ত যশোর কোতয়ালী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তাজুল হোসেন ও ওসি (তদন্ত) শেখ তাসমিমের দাপ্তরিক নাম্বারে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলে ফোন রিসিভ না করায় তাদের বক্তব্য সংযোজন করা যায়নি। আর বাপ্পীর পরিবারের কারোও কোন মোবাইল নাই দাবি করায় তার পরিবারেরও কারোও বক্তব্য সংযোজন করা যায়নি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন