শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সারা বাংলার খবর

বরিশাল বন্দর সচল রাখতে ড্রেজিং শুরু

অপসারিত পলি নদীতেই ফেলায় কির্তনখোলার তলদেশ উঁচু হয়ে নগরীর পয়ঃনিস্কাশন বিপর্যস্ত

বরিশাল ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ৮ নভেম্বর, ২০২১, ১:২০ পিএম

নাব্যতা অব্যাহত রাখার পাশাপাশি বন্দর সচল রাখতে বরিশাল নদী বন্দরে এবারো লক্ষাধীক ঘনমিটার পলি অপসারণ করে নদীতেই ফেলা হচ্ছে। তবে গত এক যুগেরও বেশী সময় ধরে মূল টার্মিনাল এলাকার পলি অপসারণ করে তা কির্তনখোলার মধ্যভাগ থেকে পূর্ব প্রান্তে অপসারণ করায় বন্দরের দক্ষিণ অংশের বিশাল এলাকায় কির্তনখোলা নদীর তলদেশ ক্রমশ উচু হয়ে যাচ্ছে। গত ২৫ বছরে এ বন্দর থেকে প্রায় ৩০ লাখ ঘন মিটার পলি অপসারন করে কির্তনখোলাতেই ফেলা হয়েছে।
ফলে বরিশাল মহানগরী সংলগ্ন কির্তনখোলা নদী নগরীর ড্রেন ও খালগুলোর পানি গ্রহন করতে পারছে না। এমনকি বন্দরের মূল অংশের অপসারিত পলি কির্তনখোলার মধ্যভাগে অপাসারন করায় দক্ষিণ প্রান্তে ভাটারখাল, চাঁদমারী খাল ও সাগরদী খাল থেকে শুরু করে দপদপিয়া পর্যন্ত নগরীর সাথে সংযুক্ত সবগুলো খালের মোহনাও অনেকটাই উচু হয়ে যাওয়ায় নগরীর পয়ঃনিস্কাশন ব্যবস্থা বিপর্যস্ত হয়ে পড়ছে। এখন নগরীর বেশীরভাগ পাকা ড্রেনও বার মাসই উপচে পড়ার অবস্থা। অবশ্য এজন্য নগরীর ড্রেনগুলো নিয়মিত পরিস্কার না করার বিষয়টিও জড়িত।

গত প্রায় ২৫ বছর ধরে সেপ্টেম্বরের শেষ ভাগ থেকেই বরিশাল বন্দরে নাব্যতা সংকট শুরু হয়। বিআইডবিøউটিএ প্রতিবছরই অক্টোবরের মধ্যে বন্দরে ড্রেজিং শুরু করে। এবারো অক্টোবরের শেষভাগ থেকে নাব্যতা উন্নয়নে ড্রেজিং শুরু হয়েছে। বিআইডবিøউটিএ’র ড্রেজিং পরিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী এম এ মতিন জানিয়েছেন, বরিশাল বন্দর সচল রাখতে এবারো ১লাখ ঘন মিটার পলি অপসারন করা হচ্ছে। তবে বন্দরের সামনের পলি নদীতেই অপসারন করায় কির্তনখোলার তলদেশ উচু হয়ে যাবার বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষন করা হলে বিষয়টি নিয়ে মডেল স্ট্যাডি করলেই সমাধান সূত্র মিলতে পারে বলে জানান তিনি।
তবে গত প্রায় ২৫ বছর ধরে শুষ্ক মৌসুমের শুরুতেই এ বন্দরে ড্রেজিং করা হলেও আজ পর্যন্ত কোন ‘মডেল স্ট্যাডি’ করে স্থায়ী সমাধান সূত্র খোজা হয়নি। এ বিষয়ে বিভিন্ন সময়ে বিআইডবিøউটিএ সহ নৌ পরিবহন মন্ত্রনালয়ের উচ্চ পর্যায়ে দৃষ্টি আকর্ষন করা হলেও কোন অগ্রগতি হয়নি। কয়েক মাস অগে বরিশাল সার্কিট হাউজে নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রীর উপস্থিতিতে দক্ষিণাঞ্চলের নদ-নদীর নাব্যতা নিয়ে জরিপ সংক্রান্ত এক অবহিত করণ সভায়ও বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে। এমনকি বরিশাল নদী বন্দর উন্নয়ন প্রকল্পেও কির্তনখোলা নদীর নাব্যতা নিয়ে একটি মডেল স্ট্যাডির কথা থাকলেও পারে আর তা হয়নি।

কিন্তু প্রতিবছর লক্ষাধিক ঘন মিটার পলি এ নদী বন্দরের সামনে ও পূর্বপ্রান্তে কির্তনখোলা নদীতে অপসারন করায় তা নদীর প্রবাহ থেকে শুরু করে বরিশাল মহানগরীর জন্য নতুন সংকট তৈরী করতে শুরু করেছ। প্রতিবছরই বন্দর সচল রাখার নামে এ ড্রেজিং সাময়িকভাবে বন্দরকে নাব্য রাখতে সহায়তা করলেও কির্তনখোলার প্রবাহ সহ এ নদীর একটি বড় এলাকার নাব্যতা সহ বরিশাল মহানগরীর পয়ঃনিস্কাশনে দীর্ঘ মেয়াদী ক্ষতি বয়ে আনছে বলে মনে করছেন নদী বিশেষজ্ঞগন।

এ ব্যাপারে পানি উন্নয়ন বোর্ডের দক্ষিণাঞ্চলীয় প্রধান প্রকৌশলী মোঃ নুরুল ইসলাম সরকারের সাথে আলাপ করা হলে তিনি বিষয়টির সাথে সহমত পোষন করে বলেন, বরিশাল বন্দরের বিষয়টি ক্রমে সমস্যা তৈরী করতে যাচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে বিআইডব্লিউটিএ’র সাথে কথা বলতে বরিশালের নির্বাহী প্রকৌশলীকে বলা হবে বলেও জানান তিনি। বরিশাল সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার সাথে আলাপ করা হলে তিনিও বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, কির্তনখোলার তলদেশ ভড়াট হয়ে যাওয়ায় নগরীর ড্রেন ও খালের পানি নিস্কাশন ব্যহত হচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে বিআইডবিøউটিএ’র সাথে যোগাযোগ করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন