ফতুল্লায় একটি ভবনের ফ্ল্যাটে জমে থাকা গ্যাসের ভয়াবহ বিস্ফোরণে দুই নারী নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন কমপক্ষে আরও ১৫ জন। ঘটনাটি ঘটেছে গতকাল শুক্রবার ভোরে ফতুল্লার লালখাঁর মোড়ে মোক্তার মিয়ার পাঁচতলা ভবনের নিচতলায়।
নিহতরা হলেনÑ মায়া রানী ও মঙ্গলী রানী। নিহতরা কেউ দুর্ঘটনাকবলিত বাড়ির নয়। এদের মধ্যে মায়া রানী পাশের সুমির বাড়ির ভাড়াটিয়া আর মঙ্গলী রানী পথচারী। বিস্ফোরণে ওই ফ্ল্যাটের ৫টি কক্ষসহ পাশের আরও দুটি বাড়ির দেয়াল চূর্ণ হয়ে গেছে। আহতদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ বিভিন্ন হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ঘটনা তদন্তে জেলা প্রশাসন থেকে ১০ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ভোর ৬টার সময় বিকট শব্দে ফ্ল্যাটটিতে বিস্ফোরণ ঘটে। এতে পাশের আরও তিনটি বাড়ির ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। বিস্ফোরণে ফ্ল্যাটের পাঁচটি কক্ষ ও পাশের বাসার তিনটি বাড়ির তিনটি কক্ষের দেয়াল উড়ে গেছে। এ ঘটনায় ঘুমন্ত অবস্থায় মায়া রানী ঘটনাস্থলেই দেয়ালের নিচে চাপা পড়ে মারা যান। এসময় মায়া রানীর দুই মেয়ে বৃষ্টি, সৃষ্টি ও ছেলে নির্জয়সহ জুমা, রুমা, সোহেল, তুলশি ও দেড় বছরের শিশু বিশালী আহত হয়েছে। তাদের প্রত্যেককে ঢাকা মেডিকেলের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে তাদের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
বিস্ফোরণের সময় মঙ্গলী রানী তার মেয়ে পূর্ণিমাকে নিয়ে হেটে যাচ্ছিলেন। তখন বিস্ফোরণে দেয়ালের ইট বালু উড়ে এসে উপড়ে পড়ে। গুরুতর আহত হয় মঙ্গলী রানী। মাথায় ও পায়ে আঘাত পায় তার মেয়ে পূর্ণিমা। তাদের দু’জনকে শহরের ভিক্টোরিয়া হাসপাতালে নেয়া হলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মঙ্গলী রানী মারা যান এবং পূর্ণিমাকে চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়। ঘটনার সময় পাশের সুমির বাড়ির ভাড়াটিয়া বিনয় তার স্ত্রী নিপা ও তাদের দুই শিশু সন্তান ঘুমন্ত অবস্থায় দেয়াল চাপা পড়েন। এতে বিনয় ও তার শিশু কন্যার মাথায় আঘাত লেগে কেটে যায়। স্ত্রী ও আরেক শিশু পুত্র সামান্য আঘাত পেয়েছে।
নারায়ণগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের সহকারী উপপরিচালক আব্দুল্লাহ আল আরেফিন জানান, রান্নাঘরের গ্যাস কোনো কক্ষে জমে ছিল। তা থেকে এ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোস্তাইন বিল্লাহ জানান, বিস্ফোরণের ঘটনায় ১০ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এ কমিটি তদন্তের পর আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। ফতুল্লা মডেল থানার ওসি রকিবুজ্জামান জানান, দুই নারী নিহত হয়েছে। ৮ জন ঢাকা মেডিকেলের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন রয়েছে। এছাড়াও কয়েকজন আহত হয়েছে। তারা স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা নিয়েছে। বিষয়টি তদন্ত চলছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন