শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সারা বাংলার খবর

যশোরে ক্লিনিক-ডায়াগনস্টিক ২৫৬টি হালনাগাদ লাইসেন্স নেই

একাধিক প্রতিষ্ঠান সিল করার পরও অবৈধভাবে চলছে

যশোর ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ১৩ নভেম্বর, ২০২১, ৬:৫৯ পিএম | আপডেট : ৭:১১ পিএম, ১৩ নভেম্বর, ২০২১

যশোর জেলার ২৫৬ বেসরকারি হাসপাতাল ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের হালনাগাদ লাইসেন্স নেই। এরমধ্যে ৫৫টি আগেই সিলগালা করেছে স্বাস্থ্য বিভাগ। বাকি ২০১ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে অনেকেই হালনাগাদ লাইসেন্স পেতে স্বাস্থ্য অধিদফতরে আবেদন করেছেন। তবে নিজস্ব বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক-সেবিকা, প্যাথলজিস্ট ও উন্নত চিকিৎসাসেবা পরিবেশ না থাকলে কোন প্রতিষ্ঠান হালনাগাদ লাইসেন্স পাচ্ছে না বলে নিশ্চিত করেছেন যশোরের সিভিল সার্জন ডা.শেখ আবু শাহীন। তিনি জানান, বর্তমানে জেলায় ৩২ ক্লিনিক-ডায়াগনস্টিক সেন্টার হালনাগাদ লাইসেন্স নিয়ে কার্যক্রম চলছে। এরমধ্যে যশোর শহরে রয়েছে ২০ টি। বাকি ১২ ক্লিনিক- ডায়াগনস্টিক সেন্টার রয়েছে বিভিন্ন উপজেলায়।

সিভিল সার্জন অফিস সূত্রে জানা গেছে, যশোর জেলায় মোট ২৮৮ টি ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার রয়েছে। এরমধ্যে হালনাগাদ লাইসেন্স করতে ২৩ সেপ্টেম্বর একযোগে যশোর জেলার ১৬৩টি বেসরকারি হাসপাতাল ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার মালিককে ১৫ দিনের আল্টিমেটাম দিয়ে চিঠি পাঠান সিভিল সার্জন। পরে আরও ৭০ প্রতিষ্ঠানে পাঠানো হয় শোকজ নোটিশ। অনেকেই শোকজের জবাব দেয়ার পাশাপাশি হালনাগাদ লাইসেন্স পাওয়ার জন্য অনলাইনে আবেদন করেছেন। সূত্রটি জানায়, নিজস্ব বিশেষজ্ঞ চিকিৎসব সেবিকা না থাকা, নি¤œমানের অস্ত্রোপচার কক্ষ, প্যাথলজি বিভাগ নোংরা পরিবেশ ছাড়াও পরীক্ষার নামে মানুষকে জিম্মি করে অর্থ আদায়, অনুমোদনের চেয়ে অতিরিক্ত বেড ব্যবহার ও অপচিকিৎসা এবং মেয়াদ উত্তীর্ণ লাইসেন্সের কারণে বিগত দিনে সিভিল সার্জনের নেতৃত্বে জেলার ৫৫টি বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার সিলগালা করা হয়। অনিয়ম ও ক্রটি সংশোধন না হওয়া পর্যন্ত তাদের কার্যক্রম বন্ধ থাকবে বলেও নির্দেশনা দিয়েছিলেন। স্বাস্থ্য বিভাগের নজর এড়িয়ে সিলগালা হওয়া অনেক ক্লিনিক-ডায়াগনস্টিক সেন্টারে কার্যক্রম চালানো হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নিউ মাতৃসেবা ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার, হাসনা আকবর মেমোরিয়াল, হেলথ ফোরটিস, রজনী ক্লিনিক, পল্লী ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার, জোহরা ক্লিনিক , ল্যাবজোন ডায়াগনস্টিক সেন্টার, মা-মনি ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার, মুক্তি ক্লিনিক, বাঁকড়া সার্জিক্যাল ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার, সায়রা সার্জিক্যাল, ছুটিপুর প্রাইভেট ক্লিনিক, সালেহা ক্লিনিক, সীমান্ত ডায়াগনস্টিক সেন্টার, মায়ের দোয়া পাইভেট ক্লিনিক, মনোয়ারা ক্লিনিক, ফাতেমা ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার, কপোতাক্ষ সার্জিক্যাল ক্লিনিক, রিজু হাসপাতাল, রাজগঞ্জ ক্লিনিকে গোপনে কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। নি¤œমানের এসব প্রতিষ্ঠানে নানা অনিয়ম ও ত্রুটির মধ্যে রোগীর অস্ত্রোপচার, চিকিৎসা ও পরীক্ষা নিরীক্ষা করা হচ্ছে। অথচ মানসম্মত যন্ত্রপাতি বা ল্যাব টেকনোলজিস্ট নেই কারো। নিউ মাতৃসেবা ক্লিনিকের মালিক একজন এমবিবিএস চিকিৎসক। তিনি একাই করছেন রোগীর চিকিৎসা ও অস্ত্রোপচার। বিশেষজ্ঞ ডিগ্রি না থাকলেও তিনি একাই একশ’। অন্য ক্লিনিকগুলো ভাড়াটিয়া চিকিৎসক ডেকে অপারেশন করানো হচ্ছে। এরপর আর কোন খোঁজ থাকেনা ডাক্তারের। সিলগালা ঘোষণার পর কয়েকদিন বন্ধ থাকার পর ফের কার্যক্রম চালু করা নিয়ে নানা প্রশ্নের সৃষ্টি হয়েছে।
যশোরের সিভিল সার্জন ডা. শেখ আবু শাহীন জানান, যশোর জেলার কোন কোন হাসপাতাল ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার হালনাগাদ লাইসেন্স আছে তা নিশ্চিত হওয়া গেছে। আর কারা লাইসেন্স পাওয়ার জন্য অনলাইনে আবেদন করেছেন তা যাচাই বাছাইয়ের পর পর্যায়ক্রমে পরিদর্শন করা হচ্ছে। পরিদর্শনের পর প্রতিষ্ঠানের চালচিত্র জানানো হচ্ছে স্বাস্থ্য অধিদফতরকে। নিজস্ব বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক, সেবিকা ও প্যাথলজিস্ট ছাড়া কোন প্রতিষ্ঠান হালনাগাদ লাইসেন্স পাবেনা। সেবার নামে কাউকে প্রতারণার সুযোগ দেয়া হবেনা। হালনাগাদ লাইসেন্স করতে ব্যর্থ হলেই সেইসব ক্লিনিক-ডায়াগনস্টিক সেন্টার বন্ধ ঘোষণা করা হবে। আর বিগত দিনে বন্ধ ঘোষণা করার পরও যদি কোন ক্লিনিক ডায়াগনস্টিক সেন্টারে কার্যক্রম চালু করা হলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান সিভিল সার্জন ডা. শেখ আবু শাহীন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন