শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

আন্তর্জাতিক সংবাদ

আইএস-কে’তে যোগ দিচ্ছে মার্কিন-প্রশিক্ষিত আফগানরা

যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্বাসযোগ্যতা আঞ্চলিক ভাবমর্যাদা প্রশ্নবিদ্ধ

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৪ নভেম্বর, ২০২১, ১২:০০ এএম

ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল জানিয়েছে, মার্কিন-প্রশিক্ষিত আফগান বাহিনী একে একে ‘ইসলামিক স্টেটের খোরোসান (আইএস-কে)-এর আফগান অংশে যোগ দিতে শুরু করেছে। সাম্পতিক এক প্রতিবেদনে সংবাদ সংস্থাটি জানায়, ‘তালেবানদের বিরুদ্ধে ব্যর্থ এ মার্কিন-প্রশিক্ষিত আফগানরা এখন যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার জন্য বিশ্বের সবচেয়ে কুখ্যাত সন্ত্রাসী সংগঠনটিতে যোগ দিচ্ছে।’

আফগানিস্তানে যুক্তরাষ্ট্র কেবল প্রায় দুই দশকের যুদ্ধে হেরেই যায়নি, সেইসাথে আগস্টের শেষের দিকে তালেবানের আফগানিস্তান দখলের পর তারা তালেবানদের তাড়া খেয়ে সম্ভাবত সবচেয়ে অপমানজনক উপায়ে সেনা প্রত্যাহার করে নিয়েছে। পাশাপাশি, এটি তার অনেক আফগান মিত্রদের এবং এমনকি তার নিজের কিছু নাগরিককেও পরিত্যাগ করেছে, যারা পশ্চিমা জোটের সেনা প্রত্যাহার শেষ করার পর যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটিতে আটকা পড়েছিল। এটি যুক্তরাষ্ট্রের আঞ্চলিক ভাবমর্যাদা আরো প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। ফলে এটা কল্পনা করা কঠিন যে, এসব ঘটার পরেও কেউ যুক্তরাষ্ট্রকে বিশ্বাস করবে।

এদিকে, ইতোমধ্যেই অভ্যন্তরীণ মার্কিন রাজনীতিতে পুরো বিষয়টি নিয়ে সমালোচনা শুরু হয়ে গেছে। রিপাবলিকানরা আগামী বছরের মধ্যবর্তী মেয়াদের আগে ডেমোক্র্যাটদের বিরুদ্ধে বিজয়ী হতে এই ইস্যুটিকে ব্যবহার করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। মনে রাখা উচিত যে, তৎকালীন প্রেসিডেন্ট প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং তার দল ২০১৬ সালের প্রচারণার সময় প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা কীভাবে সিরিয়া এবং ইরাকে আইএসআইএস-এন বিস্তারকে আস্কারা দিয়েছিলেন, সেই বিষয়টি তুলে ধরেছিলেন। সম্ভবত ২০২৪ সালের নির্বাচনের জন্য চূড়ান্ত রিপাবলিকান প্রার্থীও আইএস-কে’র সাথে বাইডেনের সম্পর্ক নিয়ে একই কথা বলবেন।

মার্কিন মাটিতে যত বেশি এই কেলেঙ্কারি নিয়ে কথা উঠবে, আন্তর্জাতিক মঞ্চে এটি তত বেশি বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জন করবে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিদ্বন্দ্বীরা দেশটির ক্ষুণ্ন আঞ্চলিক মর্যাদায় একটি ভারী আঘাত করার জন্য এই অস্ত্রটিকে ব্যবহার করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এর অর্থ হ’ল যে, বিশ্বের এই অংশে মার্কিন ভাবমর্যাদা আগামী বছরগুলোতে অত্যন্ত নেতিবাচক থাকবে।

অন্যদিকে, কয়েক বছর ধরে জল্পনা চলছিল যে, যুক্তরাষ্ট্র গোপনে আইএস-কে সমর্থন করছে। রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা জুলাইয়ের শেষ দিকে এই বিষয়ে তার দেশের উদ্বেগ প্রকাশ করেন। ক্রেমলিন আশা করতে পারে যে, শিগগিরই তারা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে তাদের পূর্ববর্তী সতর্কতার কথা মনে করিয়ে দেবে। অনেকের মনে করছেন, ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের সাম্প্রতিক প্রতিবেদনের পর যুক্তরাষ্ট্রের চেয়ে রাশিয়াকে আঞ্চলিক অংশীদার হিসাবে অনেক বেশি নির্ভরযোগ্য হিসাবে দেখা হতে পারে।

যুক্তরাষ্ট্র প্রকৃতপক্ষে এবং অন্তত পরোক্ষভাবে আইএস-কে-কে সমর্থন করেছে। কারণ, যে আফগান বাহিনীকে তারা প্রশিক্ষণ দিয়েছিল, তারা সেই সন্ত্রাসী গোষ্ঠীতে যোগদান করেছে। এ মুহূর্তে এটি বিবেচ্য নয় যে, এ জাতীয় ফলাফল আগে থেকেই পরিকল্পিত ছিল কি না, বা এটি অনিচ্ছাকৃত ভুল সিদ্ধান্তের আরেকটি উদাহরণ কিনা। এর ফলাফলটি এক এবং সেটি হ’ল, যুক্তরাষ্ট্রের আঞ্চলিক বিশ^াসযোগ্যতা আরও হ্রাস পেয়েছে। যেহেতু এই কেলেঙ্কারিতে রিপাবলিকানরা এবং মার্কিন প্রতিদ্বন্দ্বীরা আনন্দের সাথে মনোনিবেশ করেছে, সম্ভবত যুক্তরাষ্ট্রের খ্যাতি কখনই আর পুরোপুরি পুনরুদ্ধার করা সম্ভবপর হবে না। সূত্র : ট্রিবিউন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (5)
Md Bashar ১৪ নভেম্বর, ২০২১, ১২:৫৯ এএম says : 0
এটা আমেরিকার নতুন একটা ফাঁদ ওরা লাভ ছাড়া কখনো কিছু করেনা নতুন পাঁয়তারা করতেছে মুসলমানদেরকে নষ্ট করার জন্য
Total Reply(0)
Aainul Shobooz ১৪ নভেম্বর, ২০২১, ১২:৫৯ এএম says : 0
খৃষ্টান ও ইহুদীরা, ইসলামি রাষ্ট্র গুলোক কে দখল, ও নিজের নিয়ন্ত্রণে আনতে মারিয়া হয়ে পড়ে। স্বার্থের জন্য সবকিছুই করতে পারে, পরাজিত হয়ে পরাজয় স্বীকার করে না, বরং নতুন কৌশল অবলম্বন করে স্বার্থ হাসিলের জন্য।
Total Reply(0)
Sujon ১৪ নভেম্বর, ২০২১, ১২:৫৯ এএম says : 0
বিশ্বের একমাত্র পরাশক্তি, বিশ্বে অপ্রতিদ্বন্দ্বী ক্ষমতা ধর ভারত এখন কি করবে
Total Reply(0)
Shahadat Hussain ১৪ নভেম্বর, ২০২১, ১:০০ এএম says : 0
এইটাই হলো রাজনৈতিক কৌশল আমেরিকা সরাসরি সমর্থন না করে কাতারে উপর দিয়ে সমর্থন করে গেলেন স্বার্থের কাছে জিম্মি হয়ে আছে সারা দুনিয়া। আবার কেউ কেউ এঁকে অপরের সাথে বৈরিতা ও প্রকাশ করে থাকে কিন্তু ছোট ছোট দেশের নাগরিক ও রাষ্ট্রের প্রধানরা ইয়েস স্যার আর ইয়েস স্যার বলেই খুব বেশি খুশি হয়ে থাকবেন এটাই বাস্তবতা।
Total Reply(0)
Jhon Gomes ১৪ নভেম্বর, ২০২১, ১:০০ এএম says : 0
আমেরিকা সত্যিই কোন লজ্জা নাই। ২০ বছর ধরে যাদের ধ্বংস করার চেষ্টা করল যখন কোন কিছু হল না তখন নির্লজ্জভাবে তাদের সাথে কুটনৈতিক সম্পর্ক গড়ার আরেক প্রচেষ্টা।বারবার পরাজয়।গায়ের চামড়া মোটা হয়ে গেছে আমেরিকার।
Total Reply(0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন