শুক্রবার ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ৩০ কার্তিক ১৪৩১, ১২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সারা বাংলার খবর

নিজ ড্রাইভারের পরিকল্পনায় খুন হন ইডেন কলেজের সাবেক শিক্ষক

প্রকাশের সময় : ১৯ অক্টোবর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : নিজস্ব গাড়িচালকের পরিকল্পনা ও সহযোগিতায় খুন হন ইডেন মহিলা কলেজের সাবেক শিক্ষক অধ্যাপক আলী হোসেন মালিক। অর্থ লুট করার জন্যই তাকে খুন করা হয়েছে। এ ঘটনায় নিহতের গাড়িচালক মাসুদ মল্লিকসহ তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকি দু’জন হলোÑ সায়েদ ফকির সাইফুল ও সুজন। গতকাল মঙ্গলবার র‌্যাব-৪ এর কার্যালয়ে ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক অতিরিক্ত ডিআইজি খন্দকার লুৎফুল কবির এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান।
উল্লেখ্য, গত ১১ অক্টোবর বনানী ডিওএইচএসের ২ নম্বর সড়কের ৫৩/এ অফিস কক্ষে ইডেনের সাবেক এই শিক্ষক খুন হন। এ ঘটনায় ভাষানটেক থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন নিহতের স্বজনরা। র‌্যাব এ ঘটনার ছায়া তদন্ত শুরু করে।
র‌্যাবের অধিনায়ক বলেন, শিক্ষকতা থেকে অবসরে যাওয়ার পর আলী হোসেন সৈয়দ গ্রæপ অব কোম্পানির জেনারেল ম্যানেজার (জিএম) হিসেবে কাজ করতেন। কাজের চাপ বেশি থাকলে তিনি মাঝে মধ্যে অফিসেই থাকতেন। এই কোম্পানির মালিক ও তার ছেলে মালয়েশিয়াতে থাকেন। ১১ অক্টোবর ঘটনার দিনও তারা দেশের বাইরে ছিলেন। র‌্যাবের এ কর্মকর্তা আরো বলেন, ৯ অক্টোবর আলী হোসেন একটি ব্যাংক থেকে ১৯ লাখ টাকা তোলেন। গাড়িচালক মাসুদ তা দেখতে পায়। যখনই তিনি টাকা তুলতেন তা গাড়িচালক জানত। সে দীর্ঘদিন ধরে টাকা উত্তোলনের বিষয়টি খেয়াল করত। সে টাকা হাতিয়ে নেয়ার পরিকল্পনা করে। ৯ অক্টোবর টাকা তোলার পর নিজের গাড়িতে করেই বনানীর অফিসে যায় আলী হোসেন। এরপর গাড়িচালক ওই ভবনটির কেয়ারটেকার মো: সায়েদ ফকির সাইফুল ও তার চাচাতো ভাই সুজন টাকা হাতিয়ে নেয়ার ষড়যন্ত্র করেন। ওই দিন বিকালে বাড়িতে থাকা অন্যান্য কর্মচারী, বাবুর্চি আলমগীর হোসেন, সিকিউরিটি গার্ড মো: জুয়েল, বাসার কুকুর পালনকারী আশিকুল ও সেলিমকে কোকের সঙ্গে ঘুমের ওষুধ খাওয়ায়। যাতে তারা রাতে ঘুমিয়ে থাকে। ৯ অক্টোবর রাতে আলী হোসেন অফিসে থাকেননি। তিনি বাসায় চলে যান। এরপর ১১ অক্টোবর আবারও অন্য স্টাফদের কোকের সঙ্গে তারা ফের ঘুমের ওষুধ খাওয়ায়। রাত সাড়ে ১১টার দিকে সাইফুল ও সুজন আলী হোসেনের দরজা নক করে। দরজা খোলার পরই তারা ভেতরে প্রবেশ করে দু’জন মিলে হাত-পা বেঁধে মুখে স্কচটেপ লাগিয়ে ছুরিকাঘাত করে হত্যা করে। এরপর ওই কক্ষ থেকে নিচতলার অফিস কক্ষের ও সিন্দুকের চাবি নিয়ে আসে। এ সময় গাড়িচালক মাসুদ নিচেই ছিলেন। সিন্দুক থেকে এক লাখ ৪০ হাজার টাকা নেয়। তারা ফের চার তলায় গিয়ে আলী হোসেনের মানিব্যাগ থেকে ২৫০০ টাকা নেয়। তারা টাকা ভাগ-বাটোয়ার করার পর ভোর সাড়ে ৫টার দিকে চাবি দিয়ে গেট খুলে সাইফুল ও তার চাচাতো ভাই সুজন বাসা থেকে বের হয়ে যায়। সায়েদ ফকির সাইফুল ও তার চাচাতো ভাই সুজন ঘটনার পর তাদের গ্রামের বাড়ি বরিশালের গৌরনদী চলে যায়। সেখান থেকেই তাদের গ্রেফতার করা হয়। অপরদিকে গাড়িচালক মাসুদ মল্লিককে ক্যান্টনমেন্ট থানার ইসিবি চত্বর এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়। তাদের কাছ থেকে এক লাখ ২৭ হাজার টাকা ও তিনটি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়েছে।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃতরা আলী হোসেন খুনের সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে। গ্রেফতারকৃতদের কাছ থেকে লুণ্ঠিত টাকা ও মোবাইল সেট উদ্ধার করা হয়েছে।

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন