শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সারা বাংলার খবর

ভাঙা সড়কে শঙ্কা

বরিশাল সিটি করপোরেশন

কামাল আতাতুর্ক মিসেল : | প্রকাশের সময় : ১৫ নভেম্বর, ২০২১, ১২:০১ এএম

দীর্ঘদিন ধরেই হচ্ছে না সড়কের সংস্কার। ফলে ভাঙাচোরা সড়ক মানুষের চরম কষ্টের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এসব সড়কে যানবাহন এবং পথচারীদের চলাচলে এখন দুরূহ অবস্থা। কিন্তু এখন ভাঙা সড়কের দুর্ভোগের সঙ্গে যোগ হয়েছে ধুলাবালি। প্রায় প্রতিটি সড়কেই এখন উড়ছে ধুলাবালি। বরিশাল নগরের প্রধান প্রধান সড়কগুলো সংস্কার ও পুনঃনির্মাণের মধ্য দিয়ে নির্বিঘ্নে চলাচলের উপযোগী করা হলেও বর্ধিত অঞ্চলের অবস্থা বেহাল। সেই সঙ্গে মূল শহরের পার্শ্ববর্তী ছোট-বড় অনেক সড়কেই খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে। বর্ষার সময় এসব সড়ক নাগরিকদের ভোগান্তির মাত্রা যেমনি বাড়িয়ে তোলে, তেমনি শুস্ক মৌসুমে ধুলাবালি বিরক্ত করে তোলে পথচারীদের। সড়কগুলো দিয়ে চলতে গেলে মনে হয় এগুলো সিটি কর্পোরেশনের রাস্তা নয়। সড়কগুলো যেন মরণফাঁদ। তবে বরিশাল সিটি করপোরেশন (বিসিসি) বলছে, গুণগত মান নিশ্চিত করে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বিভিন্ন সড়কের সংস্কার কাজ করা হয়েছে। কিছু সড়কের সংস্কার চলমান রয়েছে, আর বাকিগুলোর কাজও দ্রুত শুরু করা হবে।

নগরবাসী বলছে, বর্তমানে সিটি কপোরেশনের মেয়র সাদিক আব্দুল্লাহর হাত ধরে বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের এলাকার উন্নয়নের ছোঁয়া লাগবে বলে জনগণ তার দিকে তাকিয়ে আছেন। বর্ধিত অঞ্চলের রাস্তাঘাট খানাখন্দে ভরা। অসুস্থ রোগীকে এ রাস্তা দিয়ে নিয়ে গেলে রোগী মৃত্যু পথযাত্রী হয়ে যায়। গর্ভবতী মায়েরা এ রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করতে সীমাহীন বিড়ম্বনার শিকার হয়। এরা আরও বেশি অসুস্থ হয়ে যায়। সামান্য বৃষ্টিতে এলাকার রাস্তাঘাট পানিতে তলিয়ে যায়। ড্রেনেজ ব্যবস্থার কোনো উন্নয়ন না করায় পানি দীর্ঘক্ষণ জমে থাকে। এছাড়াও সম্প্রতি সড়ক উন্নয়ন কাজের ধীরগতি ও দীর্ঘদিন ধরে সংস্কারের ছোঁয়া না পাওয়ায় অনেক সড়ক নিয়ে হতাশায় রয়েছে তারা।
বরিশাল নগরীর আমানতগঞ্জের গৃহবধূ প্রাপ্তি মন্ডল। অবসরে পরিবার নিয়ে ঘুরতে যাওয়ার জন্য তার প্রিয় জায়গা নগরীর ত্রিশ গোডাউন এলাকার কীর্তনখোলা নদীর তীর। তিনি বলেন, আনন্দ নিয়ে ঘুরতে গেলেও বাড়ি ফিরতে হয়ে কোমরে ব্যথা নিয়ে।
নগরীর শ্রীনাথ লেনের বাসিন্দা কলেজ শিক্ষক মো. মনিরুজ্জাম বলেন, বৃষ্টি হলেই তাদের এলাকার সড়ক পানিতে তলিয়ে যায়। ফলে পানিবন্দি অবস্থায় চরম দুর্ভোগের মধ্যে স্থানীয়দের চলাচল করতে হচ্ছে। মতাশার এলাকায় বসবাসকারী মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন বলেন, বর্তমান পরিষদের মেয়াদে গত কয়েক বছরে বরিশাল শহরে যেটুকু সড়কের কাজ হয়েছে তার মান ভালো হয়েছে। বিশেষ করে নগরের আমতলার মোড় থেকে জিলাস্কুল মোড় হয়ে কাকলীর মোড়, আবার কাকলীর মোড় থেকে জেলখানার মোড় হয়ে নথুল্লাবাদ বাস টার্মিনাল পর্যন্ত সড়ক নির্মাণের পর গত কয়েক বছরে কোনো ভোগান্তি পোহাতে হয়নি নগরবাসীকে।
পশ্চিম কাউনিয়া এলাকার বাসিন্দা মোস্তাফিজুর রহমান জানান, নথুল্লাবাদ কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল থেকে কাউনিয়া মড়কখোলার পুল পর্যন্ত খালপাড়ের অধ্যাপক ইউনুস খান সড়কটির অবস্থা অনেকদিন ধরে বেহাল। এটি এখন পুরোপুরি যানবাহন চলাচলে অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। পাশের খালটি পরিষ্কারে উদ্যোগ নেওয়া হলেও তা এখনও শেষ হয়নি। নগরীর ব্যাপ্টিস্ট মিশন রোডের সড়কটিও চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পরেছে। এতে পথচারী এবং যানবাহন চলাচলে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। এ সড়কে প্রায়ই ঘটছে ছোটবড় দুর্ঘটনা। রাস্তার মধ্যে খানাখন্দের কারণে এ সড়ক দিয়ে রিকশা বা ইজিবাইকে চলাচল এখন চরম ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে।
এ বিষয়ে সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলন বরিশাল জেলার সাধারণ সম্পাদক কাজী এনায়েত হোসেন শিপলু বলেন, নগরীর অধিকাংশ সড়কের পাশে ড্রেন না থাকায় পানি নামতে পারছে না। খালের নাব্য না থাকায় এখন সড়কের বৃষ্টির পানিও আটকে যাচ্ছে। তিনি বলেন, খাল পরিস্কার করা যেমন দরকার, তেমনি খনন করা আরও জরুরি হয়ে পরেছে।
এ বিষয়ে বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী সৈয়দ মো. ফারুক হোসেন বলেন, অতিবর্ষণে সড়কের ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণে বিসিসি থেকে উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। পাশাপাশি জলাবদ্ধতা নিরসনে সিটি কর্পোরেশনের উদ্যোগে নগরীর খালগুলো পরিস্কারের কাজ অব্যাহত থাকায় মেয়রের নির্দেশে নতুন ব্যবস্থাপনায় ড্রেনেজ ব্যবস্থা সংস্কার করে সড়ক নির্মাণে কিছুটা বিলম্ব হচ্ছে। যদিও এতে সড়কের স্থায়িত্ব দীর্ঘস্থায়ী হবে বলে দাবি তাদের।
এ বিষয়ে বিসিসি মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ বলেন, নিজস্ব সম্পদ আর আয় দিয়েই সিটি করপোরেশনকে চালিয়ে নিতে হচ্ছে তাকে। এজন্য একসঙ্গে সব রাস্তার কাজ শুরু করতে পারেননি, পর্যায়ক্রমে সব রাস্তার কাজই শেষ করবেন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন