শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

শিবালয়ে টিএসপি সারের অভাব বিপাকে কৃষক

আরিচা সংবাদদাতা : | প্রকাশের সময় : ১৫ নভেম্বর, ২০২১, ১২:০০ এএম

শিবালয়ে টিএসপি সারের অভাবে বিপাকে পড়েছেন কৃষকরা। রবি মৌসুমের শুরুতেই কৃষকের চাহিদা অনুযায়ী টিএসপি সার দিতে পারছেন না ডিলাররা। ফলে সরিষা, পিয়াজসহ রবি শষ্য আবাদ করতে গিয়ে বিপাকে পড়েছেন স্থানীয় কৃষকরা। বর্তমানে এ উপজেলায় সরিষা, পিয়াজ এবং ধানের বীজ বোপন শুরু হয়েছে। এ অঞ্চলের কৃষকরা এখন বীজ তলা তৈরি ও বপনে ব্যস্ত সময় পার করছেন। রবি আবাদে অন্যান্য সারের মধ্যে ইউরিয়া, টিএসপি এবং পটাশ (এমওপি) সারের চাহিদা বেশি। ইউরিয়া, পটাশ সার পাওয়া গেলেও টিএসপি সারের বরাদ্দ কম এবং আমদানিকারকদের নিকট থেকে ডিলাররা সময় মতো সরবরাহ না পাওয়ায় রবি মৌসুমের শুরুতেই কৃষকরা কাক্সিক্ষত সার পারছেন না বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। ফলে জমিতে সরিষার বীজ বপনে দেরি হচ্ছে। এতে চিন্তিত হয়ে পড়েছেন কৃষকরা। এ অবস্থা অব্যাহত থাকলে এবার সরিষার উৎপাদন ব্যহত হওয়ার আশঙ্কা করছেন তারা। এ পরিস্থিতি মোকাবেলায় কৃষি সম্প্রসারণসহ সংশ্লিষ্ট বিভাগের দৃষ্টি আকর্ষণ করছেন ভুক্তভোগীরা।

জানা যায়, সারের সুষ্ঠু বণ্টন এবং কৃষক যাতে অতি সহজেই সার ক্রয় করতে পারেন সে জন্য সরকার নানা ধরণের পদক্ষেপ নিয়েছেন। সারের তদারকি করার জন্য উচ্চ পর্যায় থেকে শুরু করে স্থানীয় পর্যায় পর্যন্ত একাধিক মনিটরিং টিম কাজ করছেন। এছাড়া শিবালয় উপজেলার সাতটি ইউনিয়নে ৮টি বিসিআইসি (আমদানিকারক) এবং ১০টি বিএডিসি’র ডিলার রয়েছে। এছাড়া সাতটি ইউনিয়নের ৫৪টি ওয়ার্ডে ৫৪টি সাব ডিলার রয়েছে। প্রতি বছর এদের মাধ্যমে কৃষকরা অতি সহজেই সার পেয়ে থাকেন। এসব ডিলারদের অক্টোবরের বরাদ্ধকৃত সার বিক্রি হয়েছে অনেক আগেই। নভেম্বরের বরাদ্ধকৃত টিএসপি সার আমদানিকারকদের নিকট পাচ্ছেন না ডিলাররা। এতে কৃষকদের চাহিদা অনুযায়ী টিএসপি সার দিতে না পাড়ায় সমস্যা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ডিলাররা।
জমদুয়ারা এলাকার কৃষক মো. রূপ চাঁন জানান, সারের জন্য তিন থেকে চার দিন স্থানীয় ডিলারের নিকট ঘুরেও সার পাননি। অবশেষে বাধ্য হয়ে অন্য এলাকা থেকে বেশি দামে সার ক্রয় করে আনেন তিনি। দাম বেশির কথা জিজ্ঞেস করলে বলেন, সারই নেই, দাম কম বেশি কি।

শিবালয়ের কৃষক মো. রহিজ উদ্দিন জানান, দাম বেশি দিলে সার পাওয়া যায়। অনেক দিন ঘুরে বেশি দামে কিছু সার সংগ্রহ করেছি। এ দিয়ে আমার চার বিঘা জমির মধ্যে আড়াই বিঘা জমিতে সরিষার আবাদ করেছি। টিএসপি, পটাশ সার না পাওয়ায় বাকী জমি আবাদ করতে পারছি না।
উথলী এলাকার কৃষক মামুন মিয়া বাচ্চু জানান, আমি প্রতি বছর জমিতে সরিষার আবাদ করি। এবার মাত্র তিন বিঘা জমিতে সরিষার আবাদ করেছি। টিএসপি এবং পটাশ সারের অভাবে বাকী জমিতে সরিষার আবাদ করতে পারছি না। আমি সারের জন্য নয়াবাড়ি, জাফরগঞ্জ, বাড়াদিয়া বাজার ঘুরে সার না পেয়ে অবশেষে আরিচাতে এসেছি। এখানেও দেখি টিএসপি, পটাশ নেই। এক সপ্তাহ ধরে আমি সারের জন্য ঘুরছি। অতি জরুরি ভিত্তিতে যেন টিএসপি, পটাশ সার সরবরাহের জন্য বিনীত অনুরোধ জানাচ্ছি।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন সারের ডিলার জানান, তারা আরো এক সপ্তাহ আগে নভেম্বরের বরাদ্ধকৃত টিএসপি ও পটাশ সারে জন্য ডিও জমা দিয়ে আমদানিকারকদের নিকট টাকাও পাঠিয়েছেন। কিন্তু আমদানিকারকরা যে কি কারণে সার পাঠাতে কালক্ষেপণ করছেন তা বলতে পারছেন না ডিলাররা। এদিকে, কৃষকদের চাপ সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছেন তারা। এব্যাপারে শিবালয় উপজেলা কৃষি অফিসার মো. রিয়াজুর রহমান জানান, এ বছর সারের কোনো সঙ্কট নেই, পর্যাপ্ত সার আছে। এ অঞ্চলে জমি থেকে দ্রুত পানি নেমে যাওয়ায় আগাম সরিষার চাষ শুরু হয়েছে। বিধায় এক সাথে সারের চাহিদা বেড়েছে। যে কারণে একটু সমস্যা হচ্ছে। পরিবহণে সমস্যার কারণে নভেম্বরের বরাদ্ধটা পেতে একটু সময় লাগছে। ইতোমধ্যে ডিলাররা ডিও জমা দিয়েছে এবং আমদানিকারকদের নিকট টাকাও পাঠানো হয়েছে। আশা করি দু’এক দিনের মধ্যেই সার পৌঁছে যাবে। এছাড়া আমরা প্রতিনিয়ত বাজার মনিটরিং করছি কোনো ব্যবসায়ী কৃষকদের কাছ থেকে বেশি মূল্যে সার বিক্রি করলে এবং সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে অবশ্যই তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন