সুনামগঞ্জের ছাতকে স্টিলের স্কেল দিয়ে তিন এতিম ছাত্রকে পেটানোর ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম-ফেসবুকে প্রচার হওয়ায় অবশেষে গ্রেফতার হলেন সেই সুপার। গতকাল সকালে উপজেলার গোবিন্দগঞ্জ এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করে থানা পুলিশ।
গ্রেফতারকৃত মাওলানা আবদুল মুকিত উপজেলার ইসলামপুর ইউনিয়নের রহমতপুর গ্রামের আবদুল গণির পুত্র। তিনি কালারুকা ইউনিয়নের রামপুর গ্রামে অবস্থিত হাজী ইউসুফ আলী এতিমখানা হাফিজিয়া দাখিল মাদরাসার সুপার। থানা পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গত বছরের ২০ ডিসেম্বর রাতে ঘুমন্ত অবস্থায় মাদরাসা কক্ষে প্রকৃতির ডাকে সাড়া দেয় হিফজ শাখার ছাত্র আবু তাহের (৯), রবিউল ইসলাম নিলয় (১০) ও কাজী শফিউর রহমান সাফি (১১) নামের এ তিন এতিম শিশু। পরদিন সকালে বিছানায় প্রশ্রাব করার অভিযোগে অফিস কক্ষে ডেকে নিয়ে তাদেরকে স্টিলের স্কেল দিয়ে বেধড়কভাবে পেটান মাদরাসার সুপার মাওলানা আবদুল মুকিত। এসময় সহকারী শিক্ষক জুবায়ের আহমদ সানি, মোহাম্মদ আবু বক্কর, হাফেজ মিছবাহ উদ্দিন উপস্থিত ছিলেন।
নির্যাতনের ভিডিও মোবাইলে ধারণ করেন হাফেজ বিভাগের শিক্ষক হাফেজ মিছবাহ উদ্দিন। উপস্থিত শিক্ষকরা শিশুদের মারধরে কোন বাধা প্রদান করেননি সুপারকে। ঘটনাটি এখানেই থেমে যায়। কিন্তু ঘটনার ভিডিও রেকর্ড যত্ন করে রাখেন মিছবাহ। বিভিন্ন বিষয় নিয়ে সুপারের সাথে হাফেজ মিছবাহর বিরোধ দেখা দেয়। এ সুযোগটা তিনি হাতছাড়া করেননি। তাকে ঘায়েল করতে দীর্ঘ ১০ মাস পর তার মোবাইলে ধারণকৃত ভিডিওটি গত ৫ নভেম্বর সায়মন আনোয়ার নামের এক ফেসবুক আইডিতে দুই মিনিট ৬ সেকেন্ডের ভিডিওটি আপলোড করা হয়। ভিডিওটি আপলোডের সাথে সাথেই ভাইরাল হয়ে যায়। দেশ-বিদেশে আলোচনা-সমালোচনাসহ নিন্দার ঝড় উঠে।
ছাতক থানার ওসি মিজানুর রহমান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, থানার উপ-পরিদর্শক হাবিবুর রহমান বাদী হয়ে শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে তাকে সুনামগঞ্জ আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। অন্য আসামিদের গ্রেফতারে চেষ্টা অব্যাহত আছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন