শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সারা বাংলার খবর

বেহাল সড়কে দুর্ভোগ

সোনাডাঙ্গা বাইপাস ও শিপইয়ার্ড সড়ক

কামাল আতাতুর্ক মিসেল : | প্রকাশের সময় : ২১ নভেম্বর, ২০২১, ১২:০৪ এএম

দীর্ঘদিন সংস্কারের অভাবে খুলনা নগরীর সোনাডাঙ্গা বাইপাস সড়ক ও শিপইয়ার্ড সড়কের বেহাল দশা দীর্ঘদিনের। ভাঙা সড়কে যানবাহন এবং পথচারীদের চলাচলে এখন দুরূহ অবস্থা। ফলে লক্ষাধিক মানুষের চলাচলের জন্য নির্মিত এ সড়ক এখন মানুষের গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে সড়কের কাজ দ্রুত শুরুর আশ্বাস দিয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। খুলনায় প্রবেশের দুটি গুরুত্বপূর্ণ সড়ক শিপইয়ার্ড ও সোনাডাঙ্গা বাইপাস রোড। ২০১৩ সালে বাইপাস সড়কের কাজ শেষে খুলনা সিটি করপোরেশনের কাছে তদারকির দায়িত্ব হস্তান্তর করে কেডিএ। কিন্তু বেহাল দশা হওয়ার পরও গত কয়েক বছরে দু’পক্ষের সমন্বয়হীনতার কারণে সড়কটি তদারকির বাইরে। এ অবস্থায় সোনাডাঙ্গা বাইপাস সড়কের যান চলাচল প্রায় বন্ধের পথে।
গাড়ির চালক ও নগরবাসীর অভিযোগ, এই সড়ক চলাচলের জন্য একেবারেই অনুপযোগী। সড়কের বিভিন্ন স্থানে অসংখ্য গর্ত ও খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে। সড়কটিতে হেঁটে চলাও দায় হয়ে পড়েছে। প্রায় প্রতিদিনই কোনো না কোনো দুর্ঘটনা ঘটছে। এই সড়কে চলাচল করতে গিতে নষ্ট হচ্ছে যানবাহনও। এ সড়কে নিয়মিত যাতায়াতকারী ব্যবসায়ী আমজাদ হোসেন দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, এসড়কে প্রাইভেটকার নিয়ে প্রায় প্রতিদিনই সিটি বাইপাস সড়কে আমার প্রজেক্টে যেতে হয়। প্রতিদিনই গাড়ির কোন না কোন ক্ষতি হয়। সড়কের প্রায় ৯০ ভাগ অংশই এখন ভাঙা। সিংহভাগ জায়গার পিচ ও ইটের খোয়া উঠে গেছে। ফলে সৃষ্টি হয়েছে ছোট-বড় অসংখ্য গর্ত ও খানাখন্দের। সড়কটিতে হেঁটে চলাও দায় হয়ে পড়েছে। দীর্ঘদিন সড়কটির বেহাল দশা থাকলেও কেউ সংস্কার করছে না। তাই বলা যায়, অভিভাবকহীন হয়ে পড়ে আছে সড়কটি। শামসুল ইসলাম নামের অপর ব্যবসায়ী বলেন, সড়কের বেহাল দশার কারণে সড়কের পাশের দোকানদারদেরও ব্যবসা বন্ধ হওয়ার উপক্রম। বেহাল দশা রূপসা ব্রিজ সংলগ্ন শিপইয়ার্ড রোডেরও এই সড়কটি এখন নানা দুর্ঘটনার কেন্দ্রস্থল। কেডিএ’র মাধ্যমে এ সড়ক চারলেনে প্রশস্ত করার প্রকল্প থেমে থাকায় ভোগান্তি বেড়েছে দ্বিগুণ। প্রতিদিনিই কেউ না কেউ এ সড়কে দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন। একাধিক বাস চালক জানান, সড়কটি যেন মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে। দীর্ঘদিন সংস্কারের কোনো ছোঁয়া পায়নি সড়কটি। ভাঙা এ সড়কে প্রতিনিয়ত ঘটছে দুর্ঘটনা ঘটছে। এতে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে যানবাহন চালক ও যাত্রীদের।
সরেজমিনে দেখা গেছে, সোনাডাঙ্গা বাস টার্মিনাল থেকে জয়বাংলার মোড় পর্যন্ত প্রায় ৩ কিলোমিটার সড়ক যেন মরণফাঁদ। এ যেন দেখার কেউ নেই। ভোগান্তির কারণে যাত্রীরা প্রতিনিয়ত দুষছে সংশ্লিষ্ট জনপ্রতিনিধিদের। খানাখন্দে পরিপূর্ণ থাকায় সড়কটিতে দুর্ঘটনা নিত্যদিনের সঙ্গী হয়ে দাঁড়িয়েছে। সড়কটির অনেক স্থানে শুধু পিচই ওঠেনি, সড়কের ইটও উঠে এখন ফাঁকা প্রায়। একটু বৃষ্টি হলেই সড়কের গর্তে জমে হাঁটুপানি। এরপরও জনপ্রতিনিধিদের চোখে পড়েনি। খলিলুর রহমান ও রবিউল নামের দুই ট্রাকচালক জানান, বৃষ্টি আর নির্মাণ ত্রুটির কারণে সড়কটিতে আজ এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। ফলে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটছে। আর ঝুঁকি নিয়ে সড়কটি ব্যবহার করতে হচ্ছে চালক ও সাধারণ যাত্রীদের। তবে সড়কগুলোর এমন অবস্থার জন্য কেডিএ ও কেসিসির সমন্বয়হীনতাকেই দুষছেন নাগরিক নেতারা। খুলনার নাগরিক নেতা অ্যাডভোকেট কুদরত-ই-খুদা বলেন, কেসিসি ও কেডিএ জনমানুষের দুর্ভোগ লাঘবে কোনো কার্যকরী পদক্ষেপ না নেওয়ায় রাস্তাঘাট খানাখন্দক, খাল ডোবায় পরিণত হয়েছে। তাদের সমন্বয়হীনতার কারণে নগরবাসীর এই ভোগান্তি বেড়েছে। আর নগরবাসীর এ দুরাবস্থায় সিটি করপোরেশন ও খুলনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ কেউই রাস্তা সংস্কারের দায়িত্ব নিতে নারাজ।
এ বিষয়ে খুলনা সিটি করপোরেশনের মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক বলেন, আমরা যে সড়কগুলো টেক-আপ করেছি, সেগুলোর দায়িত্ব আমাদের। এগুলো আমরা মেইনটেন্যান্স করব। কিন্তু তাদের (কেডিএ) অধীনে যেগুলো আছে, সেগুলোর দায়িত্ব আমরা নিতে পারব না। সে সক্ষমতাও আমাদের নেই। খুলনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাহবুবুল ইসলাম বলেন, সড়কের জায়গা অধিগ্রহণ করা আছে। আশা করছি, আগামী মার্চের মধ্যে বাসস্ট্যান্ড থেকে বাইপাস পর্যন্ত সড়ক সুন্দর হয়ে যাবে। আর শিপইয়ার্ড সড়ক কন্টাক্ট প্রসেসে আছে। আশা করছি, মাসখানেকের মধ্যে এটারও একটা সুরাহা হয়ে যাবে। খুলনা শিপইয়ার্ড সড়কের ব্যয় ৯৮ কোটি টাকা থেকে বাড়িয়ে দ্বিতীয় দফায় ২৫৯ কোটি টাকা করা হয়েছে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন