কুড়িগ্রামের চিলমারীতে একটি এসএসসি পরীক্ষা কেন্দ্রের বাইরে বেশ কয়েকটি দুধের শিশুকে স্বজনদের জিম্মায় রেখে পরীক্ষা দিচ্ছেন মায়েরা। এরা এখনো ১৮ পেরোয়নি। অথচ এর মধ্যেই পেয়েছে মাতৃত্বের স্বাদ। রবিবার সকালে পরীক্ষা কেন্দ্রগুলোতে ঘুরে এই চিত্র দেখা যায়।
উপজেলার এ ইউ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রের ফটকে দেড় মাস বয়সি শিশু ফাহিমকে কোলে নিয়ে অপেক্ষা করছেন তার এক স্বজন। মা ফুলজান বেগম পরীক্ষা হলে ব্যস্ত সময় পার করছেন। কয়ারপাড় উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ফুলজানের বিয়ে হয়েছে দু’বছর আগে। স্বামী একই উপজেলার রানীগঞ্জ ইউনিয়নের ফকিরের হাট এলাকার বাসিন্দা। ফটকের পাশেই আল আমিন নামে ১৫দিন বয়সি এক শিশুকে নিয়ে অপেক্ষা করছেন তার নানী। তিনি জানালেন, ৭ম শ্রেণি পড়া অবস্থায় মেয়ে সুমির বিয়ে দিয়েছেন। গত ১৫দিন পূর্বে সিজারিয়ান করে সন্তানের জন্ম হয়। তাদের বাড়ী চিলমারী চর শাকাহাতি চরে। অসুস্থ্য শরীর নিয়ে পরীক্ষা দিচ্ছেন এই বাল্যবিবাহের শিকার মাতা। তাদের মতো এখানে বেশ কয়েকজন মা তাদের শিশু সন্তানকে নিয়ে পরীক্ষা দিতে এসেছেন।
বিষয়টি নিয়ে পার্শ্ববর্তী শরীফের হাট এম ইউ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুর রউফ বলেন, তার প্রতিষ্ঠানে শিখা আক্তার নামে এক পরিক্ষার্থী দু’দিন আগে সিজারিয়ান অপারেশনের মাধ্যমে সন্তান প্রসব করেছে। মাসহ সন্তান সুস্থ্য আছে। এই অবস্থায় শিশু সন্তানকে বাড়ীতে রেখে মেয়েটি পরীক্ষা দিতে এসেছে।
পরীক্ষা কক্ষে দায়িত্বরত কয়েকজন শিক্ষক জানান, করোনাকালিন সময়ে বিদ্যালয় বন্ধ থাকায় অনেকে মেয়ে শিশুর বিয়ে হয়েছে। এদের অনেকেরও কোল জুড়ে সন্তান এসেছে। এজন্য অভিভাবক, ইমাম ও কাজীরা দায়ী বলে জানান তারা।
এ ব্যাপারে উপজেলা মাধ্যমিক একাডেমীক সুপার ভাইজার আব্দুল হালিম বলেন, বৈশ্বিক মহামারির কারণে বিদ্যালয়ে পাঠদান বন্ধ থাকায় অভিভাবকরা পরিবেশ পরিস্থিতি ও আর্থিক দৈন্যতার কারণে তাদের মেয়ে শিশুদের বিয়ে দিয়েছেন। আমরা বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের নিয়ে সচেতনতামূলক কাজ করছি আগামীতে যাতে এ ধরণের ঘটনা না ঘটে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন