সংস্কারের চার মাসের মাথায় ফের দেবে গেছে কুষ্টিয়া-রাজবাড়ী আঞ্চলিক মহাসড়কের দুইপাশ। সড়কের কুমারখালী বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন গোলচত্বর এলাকা দেবে গিয়ে অনেকটা চিকন খালের মতো সৃষ্টি হয়েছে। এতে স্বাভাবিক চলাচলে বিঘ্ন হচ্ছে। বাড়ছে দুর্ঘটনার ঝুঁকি।
স্থানীয়দের অভিযোগ, কয়েক মাস আগে গোলচত্বর এলাকায় সড়কটি দেবে গিয়েছিল। বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পর কর্তৃপক্ষ সেটি মেরামত করে। কিন্তু মাত্র ৪ মাসের মাথায় সড়কটি আবারও দেবে গেছে। তাদের দাবি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কর্তৃক নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের কারণেই বার বার সড়কটি দেবে যাচ্ছে।
সরেজমিনে বাসস্ট্যান্ড এলাকায় দেখা যায়, গোলচত্বর সংলগ্ন পশ্চিম-উত্তর মহাসড়কের কিছু অংশ দেবে গেছে। কোনো কোনো স্থানে এক ফুটেরও বেশি জায়গা দেবে চিকন খালের মতো তৈরি হয়েছে। দেবে যাওয়া ওই অংশ দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে যানবাহন। এতে যে কোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনার সম্ভাবনা রয়েছে।
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, আঞ্চলিক এ মহাসড়কটি দিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার বাস, ট্রাক, প্রাইভেটকার, মাইক্রোবাস, ব্যাটারিচালিত অটো, সিএনজি, মোটরসাইকেল, বাইসাইকেলসহ বিভিন্ন প্রকারের ছোট বড় যানবাহন চলাচল করে। বাসস্ট্যান্ডটি উপজেলার মধ্যভাগে অবস্থিত হওয়ায় সব যানবাহন এ স্থান দিয়ে চলাচল করে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, আট মাস আগে মহাসড়কটি পুনঃনির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে। এর কয়েক মাসের মধ্যে চলতি বছরের জুনে গোলচত্বর এলাকায় সড়ক দেবে যায়। পরে গত ২০ জুন দেবে যাওয়া ওই অংশ ফের মেরামত করা হয়। কিন্তু বর্তমানে আবারও সড়ক দেবে চলাচলে ঝুঁকি সৃষ্টি হয়েছে।
বাসচালক ইলিয়াস হোসেন জানান, প্রতিদিন এ মহাসড়ক দিয়ে বাস নিয়ে যান। কিন্তু বেশ কিছু দিন ধরে দেখা যাচ্ছে সড়কের দুই দিকে দেবে গেছে। এতে যে কোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। তাদের ঝুঁকি নিয়ে এ মহাসড়ক দিয়ে যাতায়াত করতে হচ্ছে।
কুমারখালী পৌরসভার ৫নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর এসএম রফিক জানান, গোলচত্বর এলাকাটি তার নির্বাচনী এলাকায়। কয়েকবার একই স্থান দেবে গিয়ে খালের মতো সৃষ্টি হয়েছে। তার অভিযোগ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের কারণে বার বার এ অবস্থার সৃষ্টি হচ্ছে।
কুষ্টিয়া সড়ক ও জনপথ বিভাগ সূত্র জানায়, প্রায় ১৯০ কোটি টাকা ব্যয়ে মহাসড়কের এ কাজের ঠিকাদার মেহেরপুরের জহুরুল ইসলাম কনস্ট্রাকশন। নানা কারণে জহুরুল ইসলাম কনস্ট্রাকশন নামের প্রতিষ্ঠানটি বিতর্কিত। এ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের নির্মাণাধীন কুষ্টিয়া মেডিক্যাল কলেজের ছাদ ধ্বসে শ্রমিকের মৃত্যুর ঘটনা ঘটে।
কিন্তু অজ্ঞাত কারণে একের পর এক জেলার অধিকাংশ উন্নয়নমূলক কাজ বাগিয়ে নিচ্ছেন জহুরুল ইসলাম কনস্ট্রাকশন নামের বিতর্কিত এ প্রতিষ্ঠানটি।
কুষ্টিয়া সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৗশলী মো. শাকিরুল ইসলাম জানান, কুমারখালী বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন গোলচত্বরে কিছুদিন আগে সংস্কার করা হয়েছিল। কিন্তু পুনরায় দেবে গেছে। সেখানে এখন ঢালাই দিয়ে সংস্কার করা ছাড়া বিকল্প কোনো পথ নেই।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন