বৃহস্পতিবার ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৮ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় সংবাদ

দারাজের ভূয়া ওয়েবসাইট দিয়ে প্রতারণা

একজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ

বিশেষ সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২৬ নভেম্বর, ২০২১, ১২:০৬ এএম

ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান দারাজের নামে ভূয়া ওয়েবসাইট বানিয়ে প্রতারণার মাধ্যমে লাখ লাখ হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগে একজনকে গ্রেফতার করেছে ডিএমপির কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি)। তার নাম আল ইমরান জুয়েল। গত মঙ্গলবার রাতে বিশেষ অভিযান চালিয়ে নোয়াখালী থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। এ সময় তার হেফাজত থেকে প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত একটি মোবাইল সেট, একটি ডেস্কটপ, বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ইলেকট্রনিক কার্ড ও শতাধিক প্রি-অ্যাক্টিভেটেড সিম কার্ড জব্দ করা হয়।

সিটিটিসি কর্মকর্তারা বলছেন, গ্রেফতার জুয়েলকৃত একজন দক্ষ ওয়েব ডেভেলপার এবং সে এই চক্রের প্রধান ও ওয়েবসাইটের ডিজাইনার। জুয়েলের নেতৃত্বাধীন প্রতারক চক্র ইতোপূর্বে বিভিন্ন স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠানের নামের সাথে সামঞ্জস্য রেখে ভূয়া ওয়েবসাইট ওয়ালটন ডটকম, বেস্টজোন ডটকম বিডি বানিয়ে সাধারণ ভোক্তাদের সাথে প্রতারণা করেছে। সিটিটিসি সূত্রে জানা যায়, তথ্য প্রযুক্তিভিত্তিক সেবার ব্যাপক প্রসার ও করোনাকালীন উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সাধারণ মানুষের মধ্যে অনলাইন শপিংয়ের ওপর নির্ভরতা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। নতুন এই বাজার ব্যবস্থার সুযোগ নিচ্ছে অনলাইন প্রতারকচক্র।
ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশনস বিভাগের ডিসি মো. ফারুক হোসেন জানান, অনলাইন মার্কেটপ্লেস দারাজ-এর অনুকরণে দারাজ সিএল নামক ভূয়া ওয়েবসাইট ও দারাজ বাংলাদেশ পেজ বানিয়ে একটি চক্র বেশ কিছুদিন ধরে সাধারণ ভোক্তাদের কাছে পণ্য বিক্রয়ের নামে অর্থ আত্মসাৎ করে আসছিল। সম্প্রতি বিষয়টি আন্তর্জাতিক ই-কমার্স জায়ান্ট আলিবাবার মালিকানাধীন অনলাইন মার্কেটপ্লেস দারাজ বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষের নজরে এলে তাদের অভিযোগের ভিত্তিতে বনানী থানায় ২২ নভেম্বর একটি মামলা হয়। মামলার তদন্ত শুরু করে সিটি সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন বিভাগ। তদন্তকালে উন্নত প্রযুক্তির সহায়তায় প্রতারক চক্রটিকে শনাক্তপূর্বক ও মূলহোতা জুয়েলকে গ্রেফতার করা হয়।
সিটিটিসির একজন কর্মকর্তা জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, প্রতারক চক্রের সদস্যরা ওপেক্স কম থেকে ডোমেইন ও হোল্ডিং ক্রয় করে দারাজ কম বিডি এর অনুকরণে দারাজ সিএল নামে একটি ওয়েবসাইট তৈরি করে। এরপর বিভিন্ন পণ্যে ৫০ থেকে ৭০ শতাংশ পর্যন্ত আকর্ষণীয় ছাড়ে চটকদার বিজ্ঞাপন দিয়ে ক্রেতাদের আকৃষ্ট করত। বিজ্ঞাপন তৈরিতে অন্যান্য ই-কমার্স সাইটের ক্লোন ছবি ব্যবহৃত হতো। ভোক্তাদের বিভ্রান্ত করার উদ্দেশ্যে তারা দারাজ বাংলাদেশ নামে একটি ফেসবুক পেজও তৈরি করেছিল। সাধারণ মানুষ এই ওয়েবসাইট ও ফেসবুক পেইজকে প্রকৃত এর মনে করে কেনাকাটা করার জন্য দারাজ সিএল ওয়েবসাইটে দেয়া ‘নগদ’ নাম্বারে টাকা পরিশোধ করত। ওয়েবসাইটটি কারিগরি দিক বিবেচনায় এতটাই দক্ষতার সঙ্গে তৈরি করা হয়েছিল যে সাধারণ মানুষ সহজেই প্রতারিত হতেন। নিজেদের আড়াল করার জন্য প্রতারক চক্রটি সাধারণ গ্রাহকদের হেল্পলাইন নম্বর হিসেবে অনলাইন টেলিফোন সার্ভিস ব্রিলিয়ান্টয়ের একটি নম্বর সরবরাহ করেছিলেন। এছাড়া বিশ্বাসযোগ্যতা বাড়ানোর জন্য তারা দারাজ সিএল ওয়েবসাইটে দাফতরিক একটি ঠিকানাও প্রদান করেছিল।
ওই কর্মকর্তা আরো বলেন, চতুর চক্রটি অর্থ পরিশোধের মাধ্যম হিসেবে নকল ওয়েবসাইটে একেক সময় একেক ‘নগদ’ নম্বর প্রদান করে অর্থ আত্মসাৎ করত। এভাবে খুব অল্প সময়েই চক্রটি প্রতারণার মাধ্যমে ১০ লক্ষাধিক টাকা হাতিয়ে নিয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে স্বীকার করেছে। গ্রেফতার জুয়েলকে বনানী থানায় দায়ের করা মামলায় রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন