স্বাধীনতার ৫০ বছরেও রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি পায়নি সিলেটের জকিগঞ্জ উপজেলা। স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধাদের ভাষ্য অনুযায়ী, ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে ৪ নং সেক্টরের অন্তর্গত ছিলো সীমান্তবর্তী জনপদ জকিগঞ্জ। ১৯৭০ সালের নির্বাচনের আগে জকিগঞ্জ সফরে আসেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তাঁর বক্তব্যেই স্বাধীনতার চেতনায় উজ্জীবীত হয় জকিগঞ্জবাসী। বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক রেসকোর্স ময়দানের ভাষণের পর থেকেই মুক্তিসংগ্রামের প্রস্তুতি শুরু হয় জকিগঞ্জে। ২৫ মার্চের হত্যাকাকন্ডের পরদিনই স্বাধীনতাকামী ছাত্র-যুবক-জনতা পাকিস্তানের পতাকা পুড়িয়ে বাংলাদেশের মানচিত্র খচিত পতাকা উত্তোলন করে। ১৮ এপ্রিল, ১৯৭১ হানাদার বাহিনী জকিগঞ্জে প্রবেশ করে। তৎকালীন প্রশাসন জকিগঞ্জে ১৪৪ ধারা জারি করে। জকিগঞ্জকে মুক্ত করতে মুক্তিবাহিনী ও মিত্রবাহিনীকে তিনটি দলে বিভক্ত করা হয়। এই তিনটি দল ১৯৭১ সালের ২০ নভেম্বর জকিগঞ্জে সাঁড়াশি অভিযান চালায়। মিত্রবাহিনী জকিগঞ্জে প্রবেশ করেছে শুনে পাকিস্তানিরা আটগ্রাম সড়ক দিয়ে পালাতে চেষ্টা করে। করিমগঞ্জ কাস্টমঘাটে অবস্থানকারী দলসহ তিনটি দল যখন জকিগঞ্জে পৌঁছে যায় তখন পাকিস্তানিরা গুলি বর্ষণ শুরু করে। হানাদারবাহিনীর ছোঁড়া গুলিতে নিহত হন মিত্রবাহিনীর মেজর চমন লাল ও তার দুই সহযোগী। ২১ নভেম্বর ভোরে জকিগঞ্জের মাটিতে উড়ানো হয় স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা তখন জকিগঞ্জকে দেশের প্রথম মুক্তাঞ্চল করে মুক্তিযোদ্ধারা সহ স্থানীয় জনতা। স্বাধীনতার পাঁচ দশক হলেও প্রথম মুক্তাঞ্চলের স্বীকৃতি পায়নি জকিগঞ্জ। প্রথম মুক্তাঞ্চলের স্বীকৃতির জন্য সরকারের সুদৃষ্টি একান্ত কাম্য।
জকিগঞ্জ, সিলেট।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন