শনিবার ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সারা বাংলার খবর

হেফাজত মহাসচিবের ইন্তিকালে আমীরে হেফাজত আল্লামা মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরীর শোক প্রকাশ

ফটিকছড়ি উপজেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২৯ নভেম্বর, ২০২১, ৪:৫৫ পিএম

হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব, ফটিকছড়ির কৃতিসন্তান, ঢাকার জামিয়া মাখজানুল উলূম খিলগাঁও মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা-পরিচালক ও শায়খুল হাদীস আল্লামা হাফেজ মুহাম্মদ নূরুল ইসলাম জিহাদীর ইন্তিকালে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন আমীরে হেফাজত, ফটিকছড়ির জামিয়া আজিজুল উলূম বাবুনগরের মহাপরিচালক আল্লামা শাহ মুহাম্মদ মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী।
আজ (২৯ নভেম্বর) সোমবার সংবাদ মাধ্যমে প্রেরিত এক শোকবার্তায় আমীরে হেফাজত আল্লামা শাহ মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী বলেন, আল্লামা নূরুল ইসলাম জিহাদী (রাহ.) দেশের সর্বজন শ্রদ্ধেয় ও শীর্ষ একজন প্রবীণ আলেমেদ্বীন ছিলেন। ইসলামি আন্দোলনের ময়দানে তিনি ছিলেন একজন বীর সিপাহসালার। বাংলাদেশের জন্য তিনি ছিলেন রত্নতুল্য। তার ইন্তিকালে দেশের ইলমি আকাশে একটি উজ্জ্বল নক্ষত্র ঝরে পড়েছে। ইলমের ময়দানে তিনি ছিলেন একজন বিজ্ঞ আলেমেদ্বীন। দেশবাসী হারিয়েছে একজন নিবেদিতপ্রাণ মুখলিছ আলেমে দ্বীনকে৷ তাঁর ইন্তিকালে আমি গভীরভাবে শোকাহত।
হেফাজত আমীর আরো বলেন, আল্লামা জিহাদী (রাহ.) হক ও ন্যায়-নীতির ওপর অটল-অবিচল একজন নিষ্ঠাবান আলেম ছিলেন। দেশীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ইসলাম বিরোধী যে কোনো কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে জোরালো প্রতিবাদ জানাতেন তিনি। হকের উপর ছিলেন দৃঢ় ও মজবুত। বাতিলের সাথে কখনো আপোষ করেননি তিনি। তাঁর ইন্তিকালে ইসলামি অঙ্গনে যে শূণ্যতা সৃষ্টি হয়েছে তা কখনো পূরণ হবার নয়। ইতিহাস তাঁর অমর কীর্তি চিরকাল স্মরণ রাখবে।
আমীরে হেফাজত আল্লামা বাবুনগরী আরো বলেন, লোভ-লালসা ও ব্যক্তি স্বার্থের ঊর্ধ্বে থাকতেন আল্লামা নূরুল ইসলাম জিহাদী। আমরণ তিনি এখলাছ ও নিষ্ঠার সাথে দ্বীনের বহুমুখী খেদমতের আঞ্জাম দিয়েছেন। ইসলাম-মুসলমান, দেশ ও জাতির পক্ষে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের প্রতিটি আন্দোলন-সংগ্রামে আল্লামা নূরুল ইসলাম জিহাদী (রাহ.) বলিষ্ঠ নেতৃত্বের মাধ্যমে সাহসী ভূমিকা পালন করেছেন। ইসলামি আন্দোলন-সংগ্রামে আল্লামা জিহাদী (রাহ.) এর বলিষ্ঠ নেতৃত্ব ও ত্যাগ তিতিক্ষা ইতিহাসের পাতায় স্বর্ণাক্ষরে লিপিবদ্ধ থাকবে।
হেফাজত আমীর বলেন, আল্লামা নূরুল ইসলাম জিহাদী অনেক বছর অত্যন্ত দক্ষতা ও বিচক্ষণতার সাথে জামিয়া মাখজানুল উলূম ঢাকার মহাপরিচালক ও শায়খুল হাদীসের গুরুদায়িত্ব আঞ্জাম দিয়েছেন। দীর্ঘদিন হাদীসের সর্বোচ্চ কিতাব বুখারী শরীফের পাঠদান করেছেন। হাজার হাজার মুহাদ্দীসীনরা তাঁর ছাত্র। তিনি বিভিন্ন মাদ্রাসায় পাঠদান করেছেন। বিশেষ করে কয়েকবার জামিয়া আজিজুল উলুম বাবুনগরের সিনিয়র উস্তাদ ছিলেন। সাবলীল উপস্থাপনা, মধুময় বাক্যশৈলী ও সর্ববোধগম্য দরস প্রদানে আল্লামা নূরুল ইসলাম জিহাদী ছিলেন একজন আদর্শ উস্তাদ। দরস-তাদরীস ও বাতিলবিরোধী আন্দোলনের লাইনে মেহনতের পাশাপাশি মুসলিম উম্মাহর ঈমান আকিদা রক্ষায় ওয়াজ-নসিহতের ময়দানেও অসাধারণ খেদমত করে গেছেন তিনি। পাশাপাশি তিনি ছিলেন আন্তর্জাতিক মজলিসে তাহাফফুজে খতমে নুবুওয়াতের আমির। আল্লামা নূরুল ইসলাম জিহাদী (রাহ.) তাঁর বর্ণাঢ্য জীবনীতে দ্বীন ও ইসলামের বহুমুখী খেদমত করে গেছেন।
আমীরে হেফাজত আরো বলেন, আল্লামা নূরুল ইসলাম জিহাদী (রাহ.) এর সাথে আমার গভীর হৃদ্যতা ছিলো। তিনি আমাকে খুব বেশি মুহাব্বত করতেন এবং আমিও তাঁকে মুহাব্বত ও স্নেহ করতাম। আল্লামা জিহাদী (রাহ.) এর দাওয়াতে তাঁর প্রতিষ্ঠিত ও পরিচালিত জামিয়া মাখজানুল উলূমে বহুবার গিয়েছি। বর্তমান এই নাজুক পরিস্থিতিতে দেশ ও জাতীর এই সংকটময় মুহূর্তে হেফাজত মহাসচিব আল্লামা নূরুল ইসলাম জিহাদী (রাহ.) এর মতো হক ও ন্যায় নীতির উপর অটল-অবিচল, নিষ্ঠাবান আলেম আমাদের জন্য খুবই প্রয়োজন ছিলো। কিন্তু আল্লাহ তাআ’লার হুকুমে আজ আমাদেরকে কাঁদিয়ে তিনি চলে গেলেন না ফেরার দেশে।
আমীরে হেফাজত আল্লামা বাবুনগরী মরহুমের শোকসন্তপ্ত পরিবারবর্গের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে বলেন, মহান রবের দরবারে আমি দু'আ করি- আল্লাহ তাআলা যেন তাঁর সকল দ্বীনি খেদমতকে কবুল করেন। তাঁর প্রতিষ্ঠিত মাদরাসা জামিয়া মাখজানুল উলূম ঢাকা ও তাঁর প্রাণের আন্দোলন খতমে নুবুওয়াতের আন্দোলনকে আল্লাহ তাআলা কিয়ামত পর্যন্ত কায়েম রাখুন এবং ত্রুটি-বিচ্যুতি ক্ষমা করে তাঁকে জান্নাতের সর্বোচ্চ স্থান দান করুন, আমিন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন