স্টাফ রিপোর্টার : দেশের বৃহত্তম সরকারী চিকিৎসা কেন্দ্র ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রোগীর তুলনায় অ্যাম্বুলেন্সের সংখ্যা কম। চিকিৎসকরা বলছেন, বর্তমানের কমপক্ষে ৪০টি অ্যাম্বুলেন্স প্রয়োজন। কিন্তু সেখানে আছে মাত্র ৫টি। তাও আবার একটি নষ্ট। এছাড়া হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের জন্য রয়েছে দুটি অ্যাম্বুলেন্স। ফলে কার্যত গোটা হাসপাতালে সরকারি অ্যাম্বুলেন্সের সংখ্যা ছয়টি।
দেশের সবচেয়ে বড় এই হাসপাতালে দিনে ৫শ’ রোগীর ভর্তি ও ছাড়পত্র পান। এদের মধ্যে ২৫ শতাংশ রোগীর অ্যাম্বুলেন্স সুবিধা দিতে হলেও প্রায় ৪০টি সরকারি অ্যাম্বুলেন্স প্রয়োজন বলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ মনে করছেন।
হাসপাতালের উপ-পরিচালক খাজা আবদুল গফুর বলেন, হাসপাতালে প্রতিদিন যে পরিমাণ রোগী ভর্তি হয় অথবা ছাড়পত্র দেয়া হয় সেই হিসাবে আমাদের পর্যাপ্ত অ্যাম্বুলেন্স নেই। আমরা অ্যাম্বুলেন্সের প্রয়োজনীয়তার কথা জানিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরকে একটি চিঠি দিয়েছি। কিন্তু আমরা কোনো কিছু পাইনি।
এদিকে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বারবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরকে আরও অ্যাম্বুলেন্সের ব্যবস্থা করার তাগিদ দিলেও অধিদপ্তর কোনো উদ্যোগ নেয়নি। ফলে হাসপাতালে আসা রোগী দর্শনার্থীরা প্রতিনিয়ত ভোগান্তিতে পড়ছেন। অপরদিকে হাসপাতালের কিছু কর্মী অ্যাম্বুলেন্স ব্যবসার একটি সিন্ডিকেট তৈরি করেছে। বাইরের কোনো অ্যাম্বুলেন্স এখানে ভিড়তে পারে না।
এ বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হাসপাতাল শাখার পরিচালক এ কে এম সাইদুর রহমান বলেন, রোগীর স্বার্থও দেখতে হবে। সরকারের সক্ষমতাও বুঝতে হবে। দুই এর সমন্বয় করেই উদ্যোগ নেবো আমরা। কেবল অ্যাম্বুলেন্স দিলেই চলবে না। এর চালক দিতে হবে। জ্বালানি খরচও রয়েছে। এ সবের সংস্থানের চিন্তাও করতে হবে। আবার যে কয়টি অ্যাম্বুলেন্স রয়েছে সেগুলোও চালানোর মতো পর্যাপ্ত চালক বা তার সহকারীরও অভাব রয়েছে। হাসপাতালে অ্যাম্বুলেন্সের চালক আছেন সাত জন। একটি শিফটে দুইজন করে ডিউটি করেন। এদের মধ্যে হাসপাতাল পরিচালকের গাড়ি চালায় একজন। ফলে কার্যত যে ছয়টি অ্যাম্বুলেন্স সচল আছে সেগুলোর সবগুলোও ২৪ ঘণ্টার জন্য পায় না রোগীরা।
রোগীদের অভিযোগ, এসব অ্যাম্বুলেন্স দিয়ে রোগী পরিবহন ছাড়াও হাসপাতালের চিকিৎসক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদেরও আনা-নেয়া করা হয়। এসব অ্যাম্বুলেন্সের জন্য ঢাকা মহানগরীর যে কোনো স্থানে ভাড়া ৩০০ টাকা। এর বাইরে অতিরিক্ত প্রতিকিলোমিটারের জন্য ভাড়া ১০ টাকা নির্ধারণ করা আছে। জরুরি বিভাগের সামনে সাইনবোর্ডে বড় করে সরকারি অ্যাম্বুলেন্স-সেবার কথা লেখা আছে। সেবা পেতে হলে কোথায় যেতে হবে, কার সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে তার নির্দেশনা নেই। ফলে রোগীরা আসলে জানেই না কখন কীভাবে এসব গাড়ি ভাড়া করতে হবে।
হাসপাতালের একজন কর্মকর্তা জানান, অ্যাম্বুলেন্স নষ্ট হলে তা মেরামত করতেও যথেষ্ট পরিমাণ জটিলতায় পড়তে হয়। ইচ্ছা করলেই হাসপাতাল তা মেরামত করতে পারে না। ওই কর্মকর্তা জানান, কোনো গাড়ি নষ্ট হলে প্রথমে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মেরামত সংস্থা টিমোর ক্লিয়ারেন্স নিতে হয়। পরে বিআরটির কাছ থেকে পরিবহন শাখায় পাঠানো হয়। এরপর বাজেট পাস করার পরে তা মেরামত করতে হয়।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন