বুধবার, ০১ মে ২০২৪, ১৮ বৈশাখ ১৪৩১, ২১ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

রাজধানীর বায়ুদূষণ কমানোর পাশাপাশি আন্তঃসীমান্ত বায়ুদূষণ বন্ধ করতে আঞ্চলিকভাবেও উদ্যোগ নিতে হবে -মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৩০ নভেম্বর, ২০২১, ৮:৪১ পিএম

ঢাকা সিটিকে দূলো ও দুষণমুক্ত রাখতে সিটি কর্পোরেশনের দায়বদ্ধতা শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে বলা হয়, ঢাকায় বায়ু দুষণের বর্তমান চিত্র বৈশ্বিক বায়ুর মান পর্যবে¶ণকারী সুইজারল্যান্ডভিত্তিক প্রতিষ্ঠান ‘আইকিউ এয়ারের’ প্রতিবেদন অনুযায়ী, বিশ্বে বায়ুদূষণে ২২ নভেম্বর ২০২১, সোমবার ‘ঢাকা’ শীর্ষে। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংস্থা এয়ার ভিজ্যুয়ালের বায়ুদূষণ পর্যবে¶ণ যন্ত্র দিয়ে বায়ুর মান মাপা হয়। মূলত বাতাসে অতি সূক্ষ্ম বস্তুকণা পিএম-২.৫-এর পরিমাণ পরিমাপ করে বায়ুর মান নির্ধারণ করা হয়। এয়ার ভিজ্যুয়ালের হিসাবে, বায়ুর মান ০ থেকে ৫০ থাকলে ওই স্থানের বায়ু ভালো। আর মান ২০০ থেকে ৩০০-এর মধ্যে থাকা মানে খুবই অস্বাস্থ্যকর। বায়ুর মান ৩০০এর বেশি থাকা মানে ওই স্থানের বায়ু ‘বিপজ্জনক’। ঐ দিন সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে রাজধানীর বায়ুর মান ছিল ১৮০, যাকে বায়ুমান সূচকে অস্বাস্থ্যকর বলা হয়। বায়ুমানের সূচক ২০০ অতিক্রম করলে একে ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’ বলে ধরা হয়। ঢাকায় বায়ুদূষণের উপাদান অতি সূক্ষ্ম বস্তুকণা পিএম-২.৫, এর উপস্থিতি স্বাভাবিক মাত্রার চেয়ে প্রায় ২৭ গুণ বেশি। ঢাকায় বায়ু দুষণের কারণ। বায়ুদূষণ নিয়ে কাজ করা গবেষক ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানগুলো বলছে, ঢাকার বায়ুদূষণের অন্যতম উৎস হচ্ছে ধুলাবালি।

আজ মঙ্গলবার বেলা ১১টায় রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের তোফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে নগর উন্নয়ন আন্দোলন ঢাকা মহানগর উত্তরের উদ্যোগে আয়োজিত “ঢাকা সিটিকে ধূলা ও দূষণমুক্ত রাখতে সিটি কর্পোরেশনের দায়বদ্ধতা”-শীর্ষক এক গোলটেবিল বৈঠকে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর নায়েবে আমীর মুফতী সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম শায়খে চরমোনাই। বৈঠকে নগর উন্নয়ন আন্দোলন ঢাকা মহানগর উত্তর সভাপতি অধ্য¶ হাফেজ মাওলানা শেখ ফজলে বারী মাসউদ-এর সভাপতিত্বে অন্যানের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ইসলামী আন্দোলনের মহাসচিব প্রিন্সিপাল হাফেজ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ, প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন, পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি প্রফেসর ড. আব্দুল লতিফ মাসুম, পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন প্রবার চেয়ারম্যান আবু নাসের খান, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ ও বিজ্ঞান বিভাগের প্রফেসর মোঃ জামাল উদ্দিন ও ড. মোঃ ইমাদুল হুদা, ইসলামী আন্দোলনের যুগ্ম মহাসচিব ইঞ্জিনিয়ার আশরাফুল আলম, মাওলানা আহমদ আবদুল কাইয়ূম, শেখ ফজলুল করীম মারূফ, ঢাকা দক্ষিণ সিটির মেয়রপ্রার্থী আলহাজ্ব আব্দুর রহমান, মুক্তিযোদ্ধা আবুল কাশেম, শ্রমিকনেতা হাফেজ ছিদ্দিকুর রহমান, আলহাজ্ব আনোয়ার হোসেন, ইঞ্জিনিয়ার মুরাদ হোসেন, মাস্টার অব. ওয়ারেন্ট অফিসার আমিনুল ইসলাম প্রমুখ।
গোলটেবিল বৈঠকে ১৭ দফা প্রস্তাবনা পেশ করা হয়। সে লক্ষে আগামী ২২ জানুয়ারী ২০২২ ঢাকা উত্তর সিটি মেয়র ভবনের সামনে দুষণমুক্ত নগর গড়ার দাবিতে দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।

স্থানীয়ভাবে ঢাকায় বায়ুদূষণ কমানোর পাশাপাশি আন্তঃসীমান্ত বায়ুদূষণ বন্ধ করার বিষয়ে আঞ্চলিকভাবেও উদ্যোগ নিতে হবে। তিনি বলেন, শুধু স্থানীয়ভাবে ঢাকায় বায়ুদূষণ কমালে কাজ হবে না। আন্তঃসীমান্ত বায়ুদূষণ বন্ধ করার বিষয়ে আঞ্চলিকভাবেও উদ্যোগ নেয়া জরুরী। নইলে এই অঞ্চলের কোনো দেশের বায়ু দূষণমুক্ত হবেনা। তাই দ¶িণ ও মধ্য এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে বায়ুদূষণ রোধে সমন্বিত পদ¶েপ নিতে হবে। এ জন্য সংশ্লিষ্ট দেশের সরকারের একত্রিত হয়ে কাজ করতে হবে। সরকারি পর্যায়ে এ ধরণের আলোচনা এখনো শুরু হয়নি। যদিও উদ্যোগ নেয়ার এটাই প্রকৃত সময়।

বক্তারা বলেন, দেশের অভ্যন্তরে ইটভাটা, শিল্প কারখানা ও যানবাহনের ধোঁয়া, মেয়াদোত্তীর্ণ গাড়ির কালো ধোঁয়া, বস্তিতে প্রায় চল্লিশ লাখ চুলায় আবর্জনা, কাঠ-কয়লা ও কেরোসিন দিয়ে রান্নার ধোঁয়া, ঢাকার বাইরে থেকে আসা হাজার হাজার ট্রাক ও দূরপাল্লার যানবাহনের ধূলা ও ধোঁয়া এবং রাস্তা খোড়াখুড়ি ও নির্মাণকাজের ধুলার পাশাপাশি আন্তঃসীমান্ত বায়ুদূষণের জন্য এখানকার বায়ু দূষিত হয়ে থাকে।
তারা বলেন, বাংলাদেশে যে বায়ুদূষণ ঘটছে, তার অন্যতম কারণ আন্তঃসীমান্ত বায়ুপ্রবাহ। ইরান, মঙ্গোলিয়া, আফগানিস্তানের শুষ্ক মরু অঞ্চল থেকে ধূলিকণা বাতাসে মিশে যায়। পশ্চিমা লঘুচাপের মাধ্যমে ওই ধূলিকণাসহ বাতাস ভারতে প্রবেশ করে। নভেম্বর থেকে ওই দূষিত বায়ু বাংলাদেশে প্রবেশ করে। আবার ভারতের কলকাতা, মুম্বাই, পাকিস্তানের করাচি ও বাংলাদেশের ঢাকায় অপরিকল্পিত নগরায়ণের ফলে মারাত্মক যানজট ও ধোঁয়া তৈরি হচ্ছে। অবকাঠামো নির্মাণের ফলে সেখানে প্রচুর পরিমাণে ধূলাবালিও বাতাসে মিশছে। ফলে সামগ্রিকভাবে ওই শহরগুলো এই অঞ্চলের বায়ুকে দূষিত করে ফেলছে।
বক্তারা আরও বলেন, ঢাকা শহরে যে যানবাহনগুলো চলে সেগুলো বেশিরভাগই ব্যবহারের অনুপোযোগী। অনেকগুলো গড়ি মেয়াদোত্তীর্ণ। গাড়িগুলোর যন্ত্রাংশের মেয়াদ শেষ হওয়ায় সেগুলো থেকে বিষাক্ত গ্যাস নিঃসরণ হয়। উন্নতবিশ্বেগাড়িতে যে জ্বালানি ব্যবহার করে এর সালফারের মাত্রা ৫০ এর নিচে আমাদের দেশে সেই মাত্রা ২০০০-এর উপরে। ফলে আমাদের গাড়িগুলো থেকে প্রচুর দূষণ হয়।
আলোচকরা বলেন, এখানে কোনো নিয়মনীতি ছাড়া একইভাবে দীর্ঘদিন ধরে নির্মাণ কাজ চলতে থাকে। এ কাজে ব্যবহৃত কাঁচামাল ওখানেই তৈরি হয় এবং তা ঢেকে রাখা হয় না। এখানে রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ি করা হয় সারা বছর ধরে এবং মাটিগুলো রাস্তার পাশেই রাখা হয়। ওগুলো বাতাসে ছড়িয়ে পড়ে। এখানে গার্মেন্টস এবং শিল্প কারখানাগুলোর বর্জ্য থেকেও দূষণ ছড়ায় ব্যাপকভাবে। উন্নত প্রযুক্তির মাধ্যমে তা নিয়ন্ত্রণ করা যায়।
তারা বলেন, ঢাকার আশেপাশে প্রচুর ইটভাটা রয়েছে এবং সেগুলো দূষণের জন্য কঠিনভাবে দায়ী। আমাদের এখানে “ইনডোর এয়ার পলুশন” বেশি হয়। আমাদের রান্নাঘর থেকেও প্রচুর বায়ুদূষণ হয়। এসব বিষয়ে যদি আমরা সচেতন হই তাহলে দূষণ কম হবে। কাজগুলো অল্প অল্প করে শুরু করতে হবে। এ জন্য সরকারি পর্যায় থেকে নানা পদ¶েপ নেয়া জরুরি বলে আমরামনেকরি।
তারা বলেন, এখানে সমন্বয়হীনভাবে গাড়ি ঘোরাঘুরি কমাতে হবে। বায়ু দূষণ নিয়ন্ত্রণের জন্য একটি কমিশন করা জরুরি। এটা হলে তারা দূষণ রোধে পরিকল্পিতভাবে কাজ করবে। ‘ক্লিন এয়ার অ্যাক্ট ২০১৯’ হওয়ার কথা। এটা এখনও হয়নি। এটা হওয়া জরুরি। এতে যারা দূষণ বাড়াচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া যাবে এবং বায়ু দূষণের পূর্বাভাসও দেয়া যেতে পারে।
বায়ুদূষণ রোধে বৈঠকে ১৬ দফা প্রস্তাবনার কথা উল্লেখ করা হয়। প্রস্তাবনাগুলো হলো নিম্নরূপ : আমাদের প্রস্তাবনা সমূহ। ১. ঢাকার রাস্তা খোড়াখুড়ির কাজ সমন্বিতভাবে দ্রুততম সময়ে করতে হবে। কাজের সময় ধুলো ও দুষণ প্রতিরোধ ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে হবে। ২. শীতের সময়টাতে নিয়মিত রাস্তায় পানি ছিটানোর ব্যবস্থা করতে হবে। এ ক্ষেত্রে মনিটরিং জোরদার করতে হবে। ৩. ঢাকার রাস্তাগুলো প্রতিদিন পরিস্কার করতে ঝাড়ু ব্যবহারের বিকল্প প্রযুক্তি ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। ৪. ঢাকায় যানবহনের চাপ কমাতে হবে। সে লক্ষ্যে মেট্রোরেলের পাশাপাশি গণ-পরিবহনকে সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার অধীনে এনে নিরাপদ, স্মার্ট ও সহজলভ্য করতে হবে। ৫. অবিলম্বে ঢাকা থেকে মেয়াদোত্তীর্ণ সকল যানবহন সরিয়ে দিতে হবে। ৬. যানবহনের জ্বালানীতে সালফারের পরিমান ৫০% এর নিচে নামাতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। ৭. যেকোন মূল্যে ইটের ভাটা ঢাকার চারপাশ থেকে সরিয়ে দিতে হবে। দেশের সকল ইটের ভাটায় পরিবেশবান্ধŸ প্রযুক্তি ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। ইটের বিকল্প ব্যবহার বাড়াতে হবে। ৮.শিল্পকারখানায় পরিবেশবান্ধব ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে হবে। যাতে শিল্পকারখানা থেকে কোন ধরণের দূষণ ছড়াতে না পারে। ৯. ঢাকার বাইরে থেকে ঢাকায় পণ্য পরিবহনে রেল ও নৌ পথের ব্যবহার বাড়িয়ে ঢাকায় দুরপাল্লার ট্রাক প্রবেশ সীমিত করতে হবে। ১০. ঢাকার বস্তিগুলোতে নিরাপদ গ্যাসের সংযোগ দিতে হবে। যাতে তাদের রান্না দূষণের কারণ না হয়। ১১.ঢাকার মেগা নির্মান প্রকল্পগুলোর কাজের গতি বাড়াতে হবে। অবশ্যই সেগুলোতে দূষণ প্রতিরোধ ব্যবস্থা বাধ্যতামূলক করতে হবে। ১২. ঢাকার রাস্তার পাশে প্রচুর ময়লা আবর্জনা পরে থাকে। তা অপসারনে সিটি কর্পোরেশনকে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে। ১৩. শহরকে পরিস্কার রাখতে নাগরিক সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে। ১৪. আন্তঃসীমান্ত দূষণরোধে বিশ্বমঞ্চে বাংলাদেশকে আরো জোড়ালো ভুমিকা রাখতে হবে। ঢাকার আইল্যান্ডে বৃ¶রোপন করে তা র¶ণাবে¶ণের যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে। মসজিদগুলোকে এই কাজে সম্পৃক্ত করা যেতে পারে। ১৫. ঢাকা থেকে সকল ধরণের শিল্প কারখানা সরিয়ে নেয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। ১৬. বায়ু দূষণ রোধ কমিশন গঠন করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
অপরিকল্পিত নগরায়ন।
এসব ধুলাবালির কারণ হলো:
ব্যক্তিগত নির্মান কাজে ধুলোবালি নিয়ন্ত্রনে কোন পদক্ষেপ না থাকা।
সড়ক ও ভবন নির্মাণসামগ্রী থেকে তৈরি ধুলা। কোনো নিয়মনীতি ছাড়া দীর্ঘদিন ধরে নির্মাণ কাজ চলতে থাকে।
মেঘা প্রকল্পে এ দুষণ রোধে কোন কোড মানা হয় না। এ কাজে ব্যবহৃত কাঁচামাল ওখানেই তৈরি হয় এবং তা ঢেকে রাখা হয় না।
রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ি করা হয় সারা বছর ধরে এবং মাটিগুলো রাস্তার পাশেই রাখা হয়। ওগুলো বাতাসে ছড়িয়ে পড়ে।
পানি ছিটানোর জন্য নির্দেশনা থাকলেও তা নির্দিধায় অমান্য করা। রাস্তা পরিস্কার করনে আদি পদ্ধতির ব্যবহার।
ক.ঢাকার বাইরে থেকে আসা হাজার হাজার ট্রাক ও দূরপাল্লার যানবাহনের ধূলা। ঢাকার ধুলাদূষণ নিয়ে একটি গবেষণায় দেখা গেছে, ঢাকা শহরের গাছপালায় প্রতিদিন ৪৩৬ মেট্রিক টন ধূলিকণা জমে। সেই হিসাবে প্রতি মাসে ১৩ হাজার মেট্রিক টন ধুলা জমার হিসাব পেয়েছেন গবেষকেরা। এই জমে থাকা ধুলা দিনের বেলা বাতাসের সঙ্গে মিশে যেমন দূষণ বাড়ায়, তেমনই রাতে গাড়ির অতিরিক্ত গতির সঙ্গে বাতাসে উড়তে থাকে। ফলে দিনের বেলার চেয়ে রাতের বেলায় বায়ুদূষণের মাত্রা বেড়ে যায়। ঢাকার চারটি পার্ক ও উদ্যানে বিভিন্ন প্রজাতির ৭৭টি গাছের পাতা সংগ্রহের পর গত বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে এই গবেষণা পরিচালনা করে গবেষক দল।
খ.ঢাকা শহরে যে যানবাহনগুলো চলে সেগুলো বেশিরভাগই ব্যবহারের অনুপোযোগী। অনেকগুলো গড়ি মেয়াদোত্তীর্ণ। গাড়িগুলোর যন্ত্রাংশের মেয়াদ শেষ হওয়ায় সেগুলো থেকে বিষাক্ত গ্যাস নিঃসরণ হয়। উন্নত বিশ্বে গাড়িতে যে জ্বালানি ব্যবহার করে এর সালফারের মাত্রা ৫০ এর নিচে আমাদের দেশে সেই মাত্রা ২০০০-এর উপরে। ফলে আমাদের গাড়িগুলো থেকে প্রচুর দূষণ হয়।
গ. আরেকটি উৎস হচ্ছে কয়লা ও জৈব জ্বালানি পোড়ানোর পাশাপাশি শহুরে যান্ত্রিকসহ নানা উৎস থেকে সৃষ্ট ধোঁয়া।
ঘ.গবেষকদের মতে, এসব ছাড়া বায়ুদূষণের অন্যতম কারণ হচ্ছে ইটভাটা, শিল্পকারখানার ধোঁয়া, যানবাহনের ধোঁয়া, মেয়াদোত্তীর্ণ গাড়ির কালো ধোঁয়া, বস্তিতে প্রায় চল্লিশ লাখ চুলায় আবর্জনা।
ঙ.আমাদের এখানে “ইনডোর এয়ার পলুশন” বেশি হয়। আমাদের রান্নাঘর থেকেও প্রচুর বায়ুদূষণ হয়।
বায়ুদুষনের বৈশ্বিক কারণ
বাংলাদেশে যে বায়ুদূষণ ঘটছে, তার অন্যতম কারণ আন্তঃসীমান্ত বায়ুপ্রবাহ। ইরান, মঙ্গোলিয়া, আফগানিস্তানের শুষ্ক মরু অঞ্চল থেকে ধূলিকণা বাতাসে মিশে যায়। পশ্চিমা লঘুচাপের মাধ্যমে ওই ধূলিকণাসহ বাতাস ভারতে প্রবেশ করে। নভেম্বর থেকে ওই দূষিত বায়ু বাংলাদেশে প্রবেশ করে।
ভারতের কলকাতা, মুম্বাই, পাকিস্তানের করাচি ও বাংলাদেশের ঢাকায় অপরিকল্পিত নগরায়ণের ফলে মারাত্মক যানজট ও ধোঁয়া তৈরি হচ্ছে। অবকাঠামো নির্মাণের ফলে সেখানে প্রচুর পরিমাণে ধূলাবালিও বাতাসে মিশছে। ফলে সামগ্রিকভাবে ওই শহরগুলো এই অঞ্চলের বায়ুকে দূষিত করে ফেলছে।
বায়ু দুষণের প্রভাব:
বিশ্বসাস্থ সংস্থার তথ্যমতে কেবল বায়ুদুষনের ফলে প্রতিবছর বিশ্বব্যাপী-৭০ লক্ষ মানুষ মারা যায়।
গবেষকেরা বলছেন, ঢাকার এমন বায়ু স্বাস্থ্যের ওপর নানাভাবে প্রভাব ফেলছে। ফুসফুসের নানা রোগ, নিউমোনিয়া, অ্যাজমা, শ্বাসকষ্টসহ বিভিন্ন জটিলতায় পড়ছে ঢাকাবাসী।
সিটি কর্পোরেশনে দায়।
উল্লিখিত সমস্যাগুলো দূর করতে করনীয় সবগুলো কাজ সিটি কর্পোরেশনের এখতিয়ারভুক্ত না হলেও দুষণমুক্ত নগর গড়ার জন্য মেয়রের অঙ্গিকার পূরনার্থে তাকেই অন্যদের সাথে সমন্বয় করে এগুলো আঞ্জাম দিতে হবে। এজন্য আমরা মেয়র বরাবর এ সব প্রস্তাবনা পেশ করছি।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন