নড়াইল জেলা সংবাদদাতা : ৫০ শয্যা বিশিষ্ট নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসক সংকটে স্বাস্থ্য সেবা ভেঙ্গে পড়েছে। ফলে অত্র অঞ্চলের প্রায় ৩ লাখ মানুষ কাঙ্খিত চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। বর্তমানে এ হাসপাতালে মাত্র ৫ জন চিকিৎসক কর্মরত আছেন। পরিস্থিতি এতটাই নাজুক যে, এই কমপ্লেক্সটি নিজেই রোগী হয়ে দাঁড়িয়েছে।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, কাগজে কলমে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি ৫০ শয্যায় উন্নীত হলেও জনবল সংকটের কারণে বাস্তবে ৩১ শয্যার সেবা পাচ্ছে রোগীরা। মোট ২১ জন ডাক্তার থাকার কথা থাকলেও বর্তমানে হাসপাতালে মাত্র ৫ জন ডাক্তার কর্মরত। প্রতিদিন এই হাসপাতালে ৪’শ থেকে ৫’শ রোগী সেবা নিতে আসেন। আগত রোগীরা প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্য সেবা থেকে বঞ্চিত বলে সভার অভিযোগ রয়েছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ৫ জন চিকিৎসক কর্মরত থাকলেও মাত্র ৩ জন চিকিৎসক রোগীদের সেবা দিচ্ছেন। সকাল ১১টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত আউট ডোরে রোগীদের প্রচÐ ভিড় থাকে।
আউটডোরের চিকিৎসক মহিউদ্দিন বলেন, আমার মুল কর্মস্থল ইউনিয়ন স্বাস্থ্য সেবা কেন্দ্রে হলেও চিকিৎসক স্বল্পতার কারণে একই সাথে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও ইউনিয়ন স্বাস্থ্য সেবা কেন্দ্রে চিকিৎসা সেবা দিতে হচ্ছে।
হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা নিতে আসা গোপীনাথপুর গ্রামের রোজিনা খাতুন বলেন, ‘এত বড় হাসপাতালে ১ ঘন্টা অপেক্ষার পর লাইনে দাঁড়িয়ে টিকিট কাটতে পেরেছি। এখন ৫০জন রোগীর পেছনে ছোট বাচ্চাকে নিয়ে লাইনে দাঁড়িয়ে ডাক্তারের অপেক্ষায় রয়েছি’।
উপজেলার সত্রহাজারী গ্রামের কৃষক সবুর কাজী ক্ষোভের সাথে বলেন, ‘অনেক আশা নিয়ে চিকিৎসা প্রত্যাশী মানুষজন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আসলেও তারা প্রকৃত কোন চিকিৎসা সেবা পান না। কর্তব্যরত ডাক্তাররা তাদেরকে ঔষুধের পরিবর্তে পরামর্শ দিয়ে থাকেন’।
দীর্ঘদিন পড়ে থাকা এ সব সরঞ্জামাদি নষ্ট হওয়ার উপক্রম হয়েছে। তাছাড়া সনোলজিস্ট না থাকায় আলট্রাসনো সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে রোগীরা। হাসপাতালের এক্সরে মেশিনটি দীর্ঘদিন ধরে নষ্ট। যা দেখার কেউ নেই।
এ বিষয়ে উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ও লোহাগড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্থায়ী কমিটির সভাপতি বি এম কামাল হোসেন বলেন, উপজেলার মোট জনসংখ্যার তুলনায় হাসপাতালে ডাক্তারের সংখ্যা খুবই অপ্রতুল। এ সমস্যা সমাধানের জন্য আগামী সমন্বয় কমিটির সভায় বিষয়টি উপস্থাপন করা হবে।
এ ব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. লুৎফুন নাহার বলেন,্ বিষয়টি প্রতি মাসে প্রতিবেদন আকারে ঊর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে প্রেরণ করতে হয়। তাছাড়া একাধিকবার এ বিষয়ে অবহিত করেছি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন