খুন, গুম, ধর্ষণ ত্রাণ আত্মসাত, আওয়ামী লীগ নেতা শরবত আলী হত্যাসহ ১৫ মামলার আসামি সাতক্ষীরা আশাশুনি উপজেলার খাজরা ইউপি চেয়ারম্যান শাহনেওয়াজ ডালিমের ফাঁসি এবং আওয়ামী লীগ থেকে বহিস্কারের দাবিতে ফুঁসে উঠেছেন ইউনিয়নবাসী। গতকাল বুধবার দুপুরে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে শত শত এলাকাবাসী মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ এবং বিক্ষোভ মিছিল করে তার কুশপুত্তলিকা দাহ করে।
মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশে খাজরা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. রুহুল কুদ্দুসের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন বীর মুুক্তিযোদ্ধা শাহবুদ্দিন সরদার, ৬ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি ইসমাইল হোসেন, আওয়ামী লীগ নেতা অশীথ ঘোষ, মাসুদর রহমান প্রিন্স, সিরাজুল ইসলাম, গনেষ মন্ডল, জাকিরুল ইসলাম, ইসমাইল হোসেন প্রমুখ।
এসময় বক্তরা বলেন, ইউপি চেয়ারম্যান শাহনেওয়াজ ডালিমের বাবা মোজাহার উদ্দিন সরকারের গেজেটভুক্ত একজন কুখ্যাত রাজাকার। ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় শাহনেওয়াজ ডালিমের পিতা মোজাহার উদ্দিন গদাইপুর গ্রামের নওশের আলী সরদারকে মেলেটারি ও রাজাকার ক্যাম্পে তুলে নিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করে। ইউপি চেয়ারম্যান ডালিমও তার পিতার মত ঘের দখলকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগ নেতা শরবত মোল্লাকে হত্যা করে। তার বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগ নেতা শরবত, টুম্পা ধর্ষণ ও হত্যাসহ ১৫টি মামলা রয়েছে। অবিলম্বে সন্ত্রাসী দুর্নীতিবাজ ইউপি চেয়ারম্যান শাহনেওয়াজ ডালিমকে গ্রেফতারসহ আওয়ামী লীগ থেকে বহিস্কার এবং মহান স্বাধীনতার বিজয়ের এই মাসে রাজাকার সন্তানকে ইউপি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের দলীয় নৌকা প্রতিকের মনোনয়ন না দেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আর্কষণ করেন। পরবর্তীতে আওয়ামী লীগ থেকে বহিস্কারসহ স্বাধীনতার বিজয়ের মাসে একজন রাজাকারের সন্তান হিসাবে শাহনেওয়াজ ডালিমের খাজরা ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ দলীয় নৌকার মনোনয়ন না দেওয়ার দাবি জানিয়ে শহরে বিক্ষোভ মিছিল করে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে সাংবাদিক সম্মেলন করেন।
সাংবাদিক সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বীর মুক্তিযোদ্ধা খাজরা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. রুহুল কুদ্দুস মোল্লা।
লিখিত বক্তব্যে তিনি জানান, আশাশুনি উপজেলার সরকারি গেজেটভ‚ক্ত রাজাকারের তালিকায় ১২ নং ক্রমিকে ও সংশোধিত তালিকায় ১৭৬ নং ক্রমিকে ইউপি চেয়ারম্যান শাহনেওয়াজ ডালিমের পিতা মোজাহার উদ্দিন সরদারের নাম তালিকাভুক্ত রয়েছে। তার বড় ভাই আব্দুল আলিম আশাশুনি উপজেলা বিএনপির আহŸায়ক ছিলেন। তার অপর ভাই জুলফিকার জুলি উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহŸায়ক ও অপর ভাই আব্দুস সালাম বাচ্চু, উপজেলা বিএনপির কার্য নির্বাহী পরিষদের সদস্য। ১৪ বছর আগে শাহনেওয়াজ ডালিম তার আপন ফুফাত ভাই আশাশুনি উপজেলার চাপড়া গ্রামের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী রাশেদ আহম্মেদ খোকার মৎস্য ঘেরের কর্মচারী ছিলেন। ডালিম আপদমস্তক বিএনপি পরিবারের লোক হয়ে স্থানীয় এমপির হাত ধরে ২০০৮-২০০৯ সালে আশাশুনি উপজেলা ছাত্রলীগের কমিটিতে যুগ্ম আহবায়ক হিসাবে পদার্পণ করেন। পরবর্তীতে আশাশুনি থানা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকের পদ পেয়ে যান।
রাজনৈতিক আশ্রয়-প্রশ্রয়ে চাকরি তদ্বীর থেকে শুরু করে টেন্ডারবাজী, ঘের দখল, ঘের মালিক ও সংখ্যালঘু ঘের মালিকদের হারীর টাকা আত্মসাত, ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হয়ে টি.আর, জি.আর, কাবিখা, কাবিটা, বিধবা ভাতা, বয়স্কভাতাসহ বিভিন্ন প্রকল্পের অর্থ আত্মসাত করেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন