বগুড়ার সান্তাহার পৌরসভার বশিপুর গ্রামের বিদ্যুৎ অফিসের পাশে চালকলের বিকট শব্দ ও বয়লারের ধোঁয়ায় অতিষ্ট হয়ে পড়েছে সেখানকার বাসিন্দরা। এ ঘটনায় স্থানীয় এক সবজি ব্যবসায়ী নিরাপদ আবাসে বসবাসের দাবি নিয়ে প্রায় তিন বছর ধরে প্রশাসনের দোরগোড়ায় ধর্ণা দিয়েও পাচ্ছেন না প্রতিকার।
অবৈধ চালকল বন্ধ ও চাতাল সরিয়ে নেয়ার আবেদন নিয়ে পরিবেশ অধিদফতর, জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে বছরের পর বছর ঘুরে কোন প্রতিকার পাচ্ছেন না বলে তিনি জানান। পরিবেশ অধিদফতর ওই চালকলসহ চাতালের সকল প্রকার কার্যক্রম বন্ধ করে প্রতিষ্ঠানটি অন্যত্র সরিয়ে নেয়ার নির্দেশ দেয়ার পরও সরকারি আদেশ অমান্য করে চালকল মালিক আব্দুল হামিদ চালকলটি চালু রেখেছেন।
অভিযোগে জানা যায়, সান্তাহার শহরের বিদ্যুৎ অফিসের পাশে তার বাড়ি ঘেঁষে উপর পৌওতা গ্রামের চাল ব্যবসায়ি আব্দুল হামিদ অবৈধভাবে চালকলসহ চাতাল নির্মাণ করেন। চালকলের বিকট শব্দ ও চাতালের বয়লারের ধোঁয়ায় ওই এলাকার পরিবেশ বিষাক্ত হয়ে ওঠে। এটি শহরের আবাসিক এলাকায় হওয়ায় ওই এলাকার প্রায় ২০টি পরিবার ভয়াবহ পরিবেশে দূষণের শিকার হচ্ছেন। চালকলটি বন্ধের জন্য মখলেসার রহমান নামে ঐ ব্যবসায়ী ২০১৯ সালে বগুড়ায় পরিবেশ অধিদফতরের বিভাগীয় পরিচালক বরাবর একটি আবেদন করেন। আবেদনের প্রেক্ষিতে পরিবেশ অধিদপ্তরের একটি দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে অভিযোগের সত্যতা পান। তদন্তে সময় চালকল মালিক পরিবেশ অধিদফতরের ছাড়পত্রসহ কোন প্রকার বৈধ কাগজপত্র দেখাতে ব্যর্থ হন। পরে বিভাগীয় পরিচালক আশরাফুজ্জামান চালকল মালিক আব্দুল হামিদকে দেয়া এক পত্রে সাত দিনের মধ্যে চালকল ও চাতালের সকল প্রকার কার্যক্রম বন্ধ করে প্রতিষ্ঠানটি পরিবেশ সম্মত জায়গায় স্থানান্তর করার নির্দেশ প্রদান করেন।
পরিচালকের নির্দেশ অমান্য করে চালকল মালিক অবৈধভাবে চালকলের কার্যক্রম অব্যাহত রাখলে বিষয়টি আবারো বগুড়া জেলা প্রশাসক ও পরিবশে অধিদফতরকে অবহিত করা হয়। এর প্রেক্ষিতে চলতি বছরের ৬ জানুয়ারী জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নাসিম রেজা আদমদীঘি উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে চালকল মালিকের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করে চিঠি পাঠান।
মখলেসার রহমান বলেন, পর পর তিনজন ইউএনও’র কাছে এ বিষয়ে তিনবার আবেদন করেন কিন্তু তাদের পক্ষ থেকে কোন সাহায্য পাওয়া যায়নি। তারা জেলা প্রশাসকের নির্দেশকেও তোয়াক্কা করছেন না। বিষয়টি নিয়ে পরিবেশ অধিদফতরের পরিচালক নিজে তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ প্রদান করলেও ইউএনও’র কার্যালয় থেকে দুই দফায় উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা, উপজেলা খাদ্য কর্মকর্তাকে দিয়ে আবারো তদন্ত করানো হয়। প্রতিটি তদন্ত প্রতিবেদনে চালকলটি অবৈধ উল্লেখ করে ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করা হলেও কোন ইউএনও চালকল বন্ধ বা মালিকের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহন করেননি।
বর্তমান ইউএনও শ্রাবণী রায় বলেন, এ বিষয়ে মখলেসার রহমানকে আদালতের শরানপন্ন হওয়ার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। এবিষয়ে চালকল মালিকের ছেলে মনিরুল ইসলাম বলেন, চালকলের বেশির ভাগ অংশের কাজ বন্ধ রয়েছে। দ্রুত পরিবশে অধিদফতরের ছাড়পত্র নিয়ে পুরো চালকলের কার্যক্রম চালু করা হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন