মানিকগঞ্জের শিবালয়ের আরিচা ও পাটুরিয়া ঘাট বন্দর বাজারে অবাধে বিক্রি হচ্ছে ক্ষতিকর জেলি ভর্তি চিংড়ি মাছ। দাম একটু কম হওয়ায় ভালো চাহিদা বেড়েছে এ চিংড়ি মাছের। ফলে আড়ৎদারদের মাধ্যমে এ ক্ষতিকর চিংড়ি মাছ এনে বিক্রি করছে খুচরা দোকানদাররা। এ মাছ খেয়ে হুমকির মুখে পড়ছে মানুষের স্বাস্থ্য। জেলি মিস্ত্রিত এসব চিংড়ি মাছ খেলে কিডনি, লিভারসহ নানা বিধ রোগ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। চিংড়ি মাছ খেতে কে না চায়? আর তা যদি হয় গলদা-বাগদা বড় চিংড়ি তাহলে আর কোনো কোথায় থাকে না। আর এ সুস্বাদু চিংড়ির নামে আমরা কি খাচ্ছি। বাজার থেকে চিংড়ি কিনে এনে রান্নার জন্য তৈরি করতে গেলে দেখা যাচ্ছে কান ও লেজ ও ঘাড়ের মধ্য থেকে এক ধরনের সাদা জেলির মতো বিষাক্ত পদার্থ বের হয়ে আসছে। আর তা আমরা কিনে খাচ্ছি।
শিবালয় উপজেলার আরিচা ও পাটুরিয়া ঘাট বন্দর বাজার ঘুরে দেখা যায়, মাছের বাজারগুলোতে সাধারণ মাছের পাশাপাশি অবাধে বিক্রি হচ্ছে বিষাক্ত জেলি মিস্ত্রিত গালদা-বাগদা চিংড়ি। এসব চিংড়ি মাছ পাইকাররা দেশের দক্ষিণাঞ্চল খুলনা, বাগেরহাট, যশোর ও সাতক্ষীরা থেকে নিয়ে আসে। বরফে ঢাকা লোভনীয় এ মাছ দেখে কারোর বোঝার উপায় নেই যে, এর মধ্যে বিষাক্ত পদার্থ ঢুকিয়ে রাখা হয়েছে।
খুচড়া মাছ বিক্রেতারা বলেন, চিংড়ির ওজন বাড়ানোর জন্য ইনজেকশনের শিরিন্স দিয়ে জেলি ঢুকানো হয়। চিংড়ির গায়ের রঙের এসব জেলি সহজে বোঝা যায় না বলে ক্রেতারা ঠকছেন। একটু বড় আকারের চিংড়িতে এসব জেলি বেশি মেশানো হচ্ছে বলে তারা জানান।
ক্রেতারা জানান, পশ্চিম মানিকগঞ্জে মাছের জন্য ক্ষ্যাত আরিচা ও পাটুরিয়া ঘাট মৎস্য আড়ত। এ দুটি ঘাটের মাছের আড়তে প্রতিদিনই জেলি মিস্ত্রিত চিংড়ি অবাদে বিক্রি হচ্ছে। দামও অনেক বেশি এক কেজি চিংড়ি মাছ ৬শ’ ৭শ’ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এগুলো দেখার কেউ নেই। ফলে এসব বিষাক্ত চিংড়া মাছ বিক্রির প্রবনতা বাড়ছে।
মানিকগঞ্জ কর্ণেল মালেক মেডিক্যাল কলেজের কার্ডোলজি বিভাগের সহকারী প্রফেসর ডা. মোহাম্মদ আশরাফ হোসেন জানান, সিলিকন জেলি কোনো খাদ্য উপাদন নয়। এ জেলি পেটে গেলে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা তো হবেই। আস্তে আস্তে হার্ট ও কিডনীর ক্ষতি হবে। এটি স্বাস্বের জন্য খুবই ক্ষতিকর
ভোক্তভোগীরা জানান, বর্তমান বাজার যে সব গলদা চিংড়ি পাওয়া যাচ্ছে তার প্রত্যেকটির মাথার ভিতর এই জেলি পাওয়া যাচ্ছে। তারা আরো বলেন, এ ব্যাপারে মাছ বিক্রেতাদেরকে জেলির ব্যাপারে প্রশ্ন করলে তারা বলেন এ ব্যাপারে আমরা কিছুই জানি না। আমরা পাইকারদের নিকট থেকে কিনে এনেছি।
শিবালয় ইউপি সদস্য রফিকুল ইসলাম জানান, মানুষ এসব চিংড়ি মাছ কিনে প্রতারিত হচ্ছেন। গ্রামের অনেকেই জানেন না যে এসব চিংড়ি মাছে ক্ষতিকর জেলি মিসানো আছে। এ বিষয়ে প্রশাসনের নজর দেওয়া দরকার।
শিবালয় বাজার মৎস্য আড়ত ব্যাবসায়ী সমবায় সমিতি’র সভাপতি মো. আব্দুর রাজ্জাক জানান, আরিচা-পাটুরিয়া ও তরা মৎস্য আড়াতের কিছু লোকজন এ চিংড়ি মাছ এনে বিক্রি করছে। বিষয়টি আমি জানার পর আমার আরিচার যারা ব্যবসায়ী আছেন তাদেরকে জেলি মিস্ত্রিত চিংড়ি বিক্রি না করার জন্য বলে দিয়েছি। কারণ এটি স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর।
শিবালয় উপজেলা নির্বাহী অফিসার জেসমিন সুলতানা বলেন, এ ব্যাপারে খুব তাড়াতাড়িই তিনি উক্ত বাজারগুলোতে অভিযান চালাবেন। যেহুতু জেলি মিস্ত্রিত চিংড়ি মাছ স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। এটা বিক্রি করতে দেয়া হবে না বলে তিনি জানান।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন