শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

মহানগর

অবিলম্বে তথ্য প্রতিমন্ত্রীর পদত্যাগ ও শাস্তি দাবি

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৬ ডিসেম্বর, ২০২১, ৮:৪৯ পিএম

বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া এবং তার নাতনি ব্যারিস্টার জাইমা রহমানের বিরুদ্ধে তথ্য প্রতিমন্ত্রীর অশালীন মন্তব্যের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বিভিন্ন সামাজিক, রাজনৈতিক ও পেশাজীবী সংগঠন। পৃথক বিবৃতিতে এসব সংগঠনের নেতারা অবিলম্বে তথ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসানের পদত্যাগ এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।
বিএনপি: জিয়া পরিবারের বিরুদ্ধে অশ্লীল মন্তব্যের প্রতিবাদ ও তথ্য প্রতিমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি করে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এক বিবৃতিতে সরকারের তথ্য-প্রতিমন্ত্রীর একটি বিকৃত এবং শিষ্টাচার বহির্ভূত নারী ও বর্ণবিদ্বেষী মন্তব্যে ক্ষোভ প্রকাশ করে অবিলম্বে রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব বহনকারী একজন ব্যক্তির এ ধরনের ঘৃন্য ও কুরুচিপূর্ণ আচরণের প্রতিকার দাবি করেছেন। বিবৃতিতে তিনি বলেন, ব্যক্তি হিসেবে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী যে দূর্বলতার মানুষই হোক না কেনো একজন জাতীয় পতাকাধারী ব্যক্তির এ ধরনের মনোবৈকল্য উৎসারিত বিকৃতি বিভিন্ন গণমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া সমগ্র জাতিকে স্মম্ভিত করেছে। সাবেক প্রধানমন্ত্রী ‘মাদার অব ডেমোক্রেসি’ খালেদা জিয়া বর্তমান সরকারের প্রতিহিংসামুলক আচরণের শিকার হয়ে এখনো বিদেশে সুচিকিৎসার সুযোগ না পেয়ে জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে আছেন। অথচ এই সময়ে খালেদা জিয়া ও তার পরিবারের একজন নারী সদস্য তথা পরিবারের বিভিন্ন জন সম্পর্কে এহেন অশ্লীল ঘৃণ্য অপপপ্রচার ইতিমধ্যেই নারী নেতৃত্বসহ দেশের সচেতন সকল মহলের ঘৃণা কুড়িয়েছে।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অবিলম্বে সরকারের তথ্য-প্রতিমন্ত্রীকে হীন রাজনৈতিক দূরভিসন্ধিমুলক এই নারী ও বর্ণবিদ্বেষী বিকৃত মন্তব্য প্রত্যাহার করে জনসমক্ষে ক্ষমা চেয়ে পদত্যাগ করার আহ্বান জানান। অন্যথায় ভবিষ্যতে যথাসময়ে এর দাঁতভাঙ্গা জবাব দেয়া হবে বলেও তিনি সুস্পষ্টভাবে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন।
ইউট্যাবের ৬২৫ জন শিক্ষকের বিবৃতি: বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া ও তার নাতনী ব্যারিস্টার জাইমা রহমান সম্পর্কে সরকারের তথ্য-প্রতিমন্ত্রীর শিষ্টাচার বহির্ভূত নারী ও বর্ণবিদ্বেষী মন্তব্যের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ এবং ঘৃণা প্রকাশ করেছে ইউনিভার্সিটি টিচার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ইউট্যাব)। সংগঠনের প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক ড. এবিএম ওবায়দুল ইসলাম ও মহাসচিব অধ্যাপক ড. মো: মোর্শেদ হাসান খান এক যুক্ত বিবৃতিতে বলেন, সরকারের তথ্য প্রতিমন্ত্রীর মন্তব্য শোনার মতো নয়। তার মন্তব্য সকল ভব্যতা ও শিষ্টাচারকে ছাড়িয়েছে। ডা. মুরাদ হাসান অত্যন্ত কুরুচিপূর্ণ, বাজে ও অশ্লীল ভাষায় নারীদের অবমাননা করেছেন। যা কোনো সুস্থ, স্বাভাবিক মানুষের কাজ নয়। তিনি গর্হিত অপরাধ করেছেন। এ ধরনের বক্তব্যে তথ্য প্রতিমন্ত্রীর নৈতিক স্খলন হয়েছে। তিনি ক্ষমার অযোগ্য ও শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন। আমরা শিক্ষক সমাজ অবিলম্বে সরকারের তথ্য-প্রতিমন্ত্রী মুরাদ হাসানকে হীন রাজনৈতিক দূরভিসন্ধিমুলক নারী ও বর্ণবিদ্বেষী বিকৃত মন্তব্য প্রত্যাহার করে জনসমক্ষে ক্ষমা চেয়ে পদত্যাগ করার আহ্বান জানাচ্ছি।
জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশন: বেগম খালেদা জিয়া ও তার নাতনি ব্যারিস্টার জাইমা রহমান সম্পর্কে তথ্য-প্রতিমন্ত্রী বিকৃত ও বর্ণবিদ্বেষী মন্তব্যের তীব্র ঘৃণা ও ক্ষোভ প্রকাশ করে জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশনের (জেডআরএফ) নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক ডা. ফরহাদ হালিম ডোনার এক বিবৃতিতে বলেন, তথ্য প্রতিমন্ত্রী শুধু দুই নারীই নয়, তিনি আফ্রিকার মানুষদের সম্পর্কেও বর্ণবাদী মন্তব্য করেছেন। নারীবিদ্বেষী ও বর্ণবাদী মনোভাবের জন্য তথ্য প্রতিমন্ত্রী মুরাদ হাসান অবশ্যই দোষী সাব্যস্ত হবেন। তিনি অত্যন্ত কুরুচিপূর্ণ, বাজে ও অশ্লীল ভাষায় নারীদের অবমাননা করেছেন। খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন ধরে রাজনীতি করছেন। দেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী। দেশের জনগণ একাধিকবার ভোট দিয়ে তাকে নির্বাচিত করেছেন। দেশে নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠায় রাজনীতিবিদ হিসেবে তিনি সামনের সারিতে আছেন। এই সময়ে জিয়া পরিবারের একজন নারী সদস্য তথা পরিবারের বিভিন্ন জন সম্পর্কে এহেন অশ্লীল ঘৃণ্য অপপ্রচার চরম নিন্দনীয় এবং অমার্জনীয় অপরাধ। আমি তার পদত্যাগের আহ্বান জানাই।
সমাজতান্ত্রিক নারী জোট: খালেদা জিয়া ও জাইমা রহমান সম্পর্কে তথ্য-প্রতিমন্ত্রীর অশ্রাব্য মন্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক নারী জোটের সভাপতি তানিয়া রব এক বিবৃতিতে বলেন, দুজন সম্মানিত নারীর বিরুদ্ধে তথ্য প্রতিমন্ত্রীর মুখনিঃসৃত বক্তব্য একেবারেই রুচিহীন ও শিষ্টাচারবহির্ভূত, যা অনভিপ্রেত, অনাকাক্সিক্ষত ও অগ্রহণযোগ্য। এই ধরনের বিদ্বেষ ও প্রতিহিংসা লালনকারী কেহ কোনোক্রমেই সাংবিধানিক দায়িত্ব পালন করার মতো ‘নৈতিক জগত’ সুরক্ষার উপযোগী নয়। নারীর মর্যাদা সুরক্ষার বিষয়ে রাষ্ট্রকে অবশ্যই অধিকতর সংবেদনশীল হতে হবে। খালেদা জিয়া ও জাইমা রহমানের বিরুদ্ধে ঘৃণা সৃষ্টি করে ও মর্যাদা বিনষ্ট করে তথ্য প্রতিমন্ত্রী নিজের মর্যাদা ও সম্মান হারিয়েছেন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন