স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেছেন, ক্ষুধা, দারিদ্র্য ও বৈষম্যমুক্ত সমৃদ্ধশালী সোনার বাংলাদেশ বিনির্মানে সকলকে একত্রে কাজ করতে হবে। তিনি বলেন, স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনের পাশাপাশি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী মুজিববর্ষ উদযাপন করছে বাংলাদেশ। সকল বাধা-বিপত্তি অতিক্রম করে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শোষণ-বঞ্চনামুক্ত, ক্ষুধা-দারিদ্র্য- নিরক্ষরতামুক্ত, অসাম্প্রদায়িক চেতনার সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ বিনির্মান করতে হবে। এক্ষেত্রে মাগুরা জেলা প্রশাসন কর্তৃক মাগুরা মুক্ত দিবস ও মহান স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানটি সকলকে অনুপ্রাণিত করবে।
মাগুরা জেলা প্রশাসন থেকে মাগুরা মুক্ত দিবস ও মহান স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে স্পিকার এসব কথা বলেন। তিনি অনুষ্ঠানের উদ্বোধন ঘোষণা করেন।
স্পিকার বলেন, পাক বাহিনীর বিরুদ্ধে তৎকালীন মাগুরা মহকুমায় ব্যাপক প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে তোলার ক্ষেত্রে সর্বদলীয় সংগ্রাম পরিষদ অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছিল। মাগুরাকে শত্রু মুক্ত করতে বীর মুক্তিযোদ্ধারা ব্যাপক সাহসী ভূমিকা নিয়ে পাক সেনা ও স্থানীয় রাজাকার, আল বদর বাহিনীর সাথে প্রাণপণ যুদ্ধ করে। গেরিলা বাহিনীর ব্যাপক আক্রমণে ও মিত্রবাহিনীর ভয়ে পাকিস্তানী সেনারা রাতারাতি মাগুরা শহর ত্যাগ করতে বাধ্য হয়। ৭ ডিসেম্বর শত্রুমুক্তির আনন্দে মাগুরার মুক্তিকামী মানুষের ঢল নেমে আসে সারা শহরে।
ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে ১৯৪৮ থেকে ৫২ এর ভাষা আন্দোলন, ৬৬ এর ছয় দফা, ৬৯ এর গণঅভ্যুত্থান, ৭০এর নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠ বিজয়, ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ভাষণ, ২৫ মার্চ নৃশংস গণহত্যা, ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কর্তৃক স্বাধীনতার ঘোষণা, ১৭ এপ্রিল মুজিবনগর সরকার গঠন এবং এক রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে ১৬ ডিসেম্বর ১৯৭১ পাক সেনাদের আত্মসমর্পনের মাধ্যমে চূড়ান্ত বিজয় অর্জিত হয়। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশ পুনর্গঠনের পাশাপাশি অল্প সময়ের মধ্যে বিশ্বনন্দিত ও অনন্য সংবিধান প্রণয়ন ইতিহাসে একটি মাইলফলক।
স্পিকার বলেন, বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে অপ্রতিরোধ্য গতিতে আজ এগিয়ে চলেছে বাংলাদেশ। স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তিতে বাংলাদেশ আজ উন্নয়ন বিস্ময়। ডিজিটাল প্রযুক্তি কাজে লাগিয়ে ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ প্রতিষ্ঠা বর্তমান সরকারের মূল পরিকল্পনা। ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকলে ২০৪১ সালে বাংলাদেশ হবে দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম উন্নত দেশ। ইতোমধ্যে জাতি স্বল্পন্নোত দেশের কাতার থেকে বেরিয়ে উন্নয়নশীল দেশের স্বীকৃতি অর্জন করেছে জাতিসংঘের কাছ থেকে।
তিনি বলেন, নারীর ক্ষমতায়নে বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে শীর্ষে। দারিদ্র্য হ্রাস, খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন, শতভাগ বিদ্যুতায়ন, গৃহহীন ৯৯ লাখ মানুষকে ঘর তৈরি করে দেয়া, সামাজিক নিরাপত্তা কার্যক্রম, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা দক্ষতা, শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তি, মানবসম্পদ উন্নয়নসহ প্রতিটি ক্ষেত্রে সফলতা অর্জন করেছে বর্তমান সরকার। অর্থনীতির প্রতিটি সূচকে অগ্রগতি সাধিত হয়েছে।
মাগুরা জেলা প্রশাসক ড. আশরাফুল আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে গৃহায়ন ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ, মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি শাহজাহান খান, মোঃ সাইফুজ্জামান এমপি, ড. বীরেন শিকদার এমপি ও ফাহমী গোলন্দাজ বাবেল এমপি বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠানে বিভিন্ন গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ও গণমাধ্যমকর্মীগণ উপস্থিত ছিলেন।
সূত্র: বাসস
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন