স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক জানিয়েছেন, মহামারি করোনভাইরাসের সংক্রমণ রোধে টিকার বুস্টার ডোজের প্রয়োগে অ্যাপ আপডেট ও তালিকা তৈরির কাজ শিগগিরই শেষ হবে। এরপরই শুরু হবে বুস্টার ডোজ প্রয়োগ।
গতকাল রাজধানীর একটি হোটেলে প্রতিবেদনটি প্রকাশ করে জরিপকারী সংস্থা সেন্টার ফর ইনজুরি প্রিভেনশন অ্যান্ড রিসার্চ, বাংলাদেশ (সিআইপিআরবি)। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্বাস্থ্যমন্ত্রী এ কথা বলেন। ন্যাশনাল আই কেয়ারের প্রযুক্তিগত ও আর্থিক সহায়তায় সিআইপিআরবি বয়স্ক মানুষের অন্ধত্ব ও দৃষ্টি প্রতিবন্ধকতার প্রবণতা এবং তার কারণ অনুসন্ধানে বিভিন্ন সময় গবেষণা বা জরিপ করে থাকে। গতকাল প্রকাশিত জরিপ প্রতিবেদনটির শিরোনাম ছিল, ‘দেশব্যাপী অন্ধত্ব সমীক্ষা ২০২০’। অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্যসচিব লোকমান হোসেন মিয়া, স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক আবুল বাশার খুরশীদ আলম উপস্থিত ছিলেন। এতে সভাপতিত্ব করেন ন্যাশনাল আই কেয়ারের সভাপতি প্রফেসর গোলাম মোস্তফা।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, আমাদের স্কুল কলেজ খুলেছে। আমি বুঝতে পারি না যার পিছনে যে কঠিন পরিশ্রম লোকজনে করছে। অনেক চেষ্টার ফলে আজকে আমরা স্বাভাবিক জীবন-যাপন করছি এটা বারবার ভুলে যাই। যখন আমরা যখন কষ্টে পড়ি, তখন সমালোচনা করি। কিন্তু সমালোচনা করা প্রয়োজন সেটা গঠনমূলক সমালোচনা। আপনি একটা লোককে বিচার করবেন সে কি বলল, এটা বড় কথা না সে কি করল সেটা বড় কথা।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, যেসব ডাক্তার চোখের সেবা দিয়ে থাকেন তারা এখানে উপস্থিত আছেন। বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় বড ডাক্তার তারা এখানে আছে। আমাদের সার্ভেটা খুবই প্রয়োজন এর মাধ্যমে আমরা জানতে পারি কতগুলো লোক এখানে অন্ধত্ববরণ করেছে। আমরা জানতে পারলাম বাংলাদেশের সাড়ে ৭ লাখ অন্ধ আছে। আরও জানতে পারি কিভাবে অন্ধত্ববরণ করেন। আমরা কারণটা জানলে সেটি রোধ করার ব্যবস্থা সম্পর্কেও জানতে পারব।
জাহিদ মালেক বলেন, সার্ভে রিপোর্টে আমরা শুনলাম খুবই ভালো একটা রেজাল্ট। প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে বাংলাদেশের সকল ক্ষেত্রে এগিয়ে আছে। বিদ্যুতে, খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ লেখাপড়ায় অনেক এগিয়ে গেছে আমাদের আইটি সেক্টর উন্নত হয়েছে হয়েছে, রফতানি বেড়েছে।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, স্বাস্থ্য খাতে বিপুল পরিমাণ উন্নত হয়েছে আমরা বুঝতে পারি না। যখন করোনা হলো তখন সব বন্ধ ছিল কিন্তু তখন মানুষ কি করেছে, চিকিৎসা কোথায় নিয়েছে। দেশের ১৭ কোটি লোকের চিকিৎসা হচ্ছে অর্থাৎ সব ক্ষেত্রে চিকিৎসা অনেক উন্নয়ন হয়েছে। চিকিৎসা ব্যবস্থা একটা ব্যাপক এটা অন্যান্য জিনিসের সাথে তুলনা করলে ভুল হবে। এই মন্ত্রণালয়ের কাজগুলোকে একটি সমুদ্রের মতো সেই কমিউনিটি ক্লিনিক থেকে শুরু হয় এবং ইউনিভার্সিটি পর্যন্ত আমাদের কাজ চলে। কাজে বিরাট একটা এরিয়াতে কাজ চলে যা মানুষ ধারণাই করতে পারে না। সরকারিভাবে তিন লাখ আর বেসরকারিভাবে আরও পাঁচ লাখ লোক কাজ করে।
অনুষ্ঠানে উপস্থাপিত প্রতিবেদনে জানানো হয়, গত ২০ বছরে দেশে অন্ধত্বের হার ৩৫ শতাংশ কমেছে। দেশে অন্ধত্বের হার অনুসন্ধানে এর আগে ১৯৯৯ সালে একটি জরিপ করা হয়। সে প্রতিবেদনে দেখা যায়, দেশে ছানিজনিত অন্ধ রোগী ছিল ৬ লাখ ৫০ হাজার। ২০২০ সালের জরিপে এ সংখ্যা কমে হয়েছে ৫ লাখ ৩৪ হাজার। যদিও এ সময়ের মধ্যে দেশের জনসংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে ৪৫ শতাংশ। একই সঙ্গে মানুষের গড় আয়ু বেড়েছে। জরিপের অংশ হিসেবে ২০২০ সালের নভেম্বর থেকে ২০২১ সালের জানুয়ারির মধ্যে ৬৪টি জেলার শহর ও গ্রামাঞ্চলের ১৮ হাজার ৮১০ জন অংশগ্রহণকারীর কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহ করা হয়। প্রতিবেদনে বলা হয়, ছানি থেকে অন্ধত্ব হয়েছে এক শতাংশ মানুষের বা ৫ লাখ ৩৪ হাজার জনের।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন