রাজবাড়ী জেলা সদরের আলাদীপুরে অবস্থিত জেলার সব চেয়ে বড় জুট মিল রাজবাড়ী জুট মিল। গতকাল শুক্রবার ভোর ছয়টায় জুট মিলে লাগা অগ্নিকান্ডে চার ঘণ্টায় পুড়ে ছাই হয়েছে হাজার হাজার শ্রমিক ও মালিকের স্বপ্ন। পুরে গেছে মেশিনারিজ, পাট ও পাট দিয়ে তৈরি পণ্য, হাজার হাজার বেল সুতা। এতে কয়েক শত কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে দাবি করেছে মিল কর্তৃপক্ষ। ফায়ার সার্ভিস বলছে মিলের তেল সরবরাহকারী ইমারেশন প্লান্ট থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে। যা ফায়ার সার্ভিসের ৫টি ইউনিট চেষ্টা করে নিয়ন্ত্রণে আনে।
জানা গেছে, দশজন মালিক মিলে গড়ে তোলা রাজবাড়ী জুট মিলে তিন শিফটে আড়াই হাজার শ্রমিক, নিরাপত্তাকর্মী ও কর্মকর্তাসহ মোট ৪ হাজার পরিবার জড়িত। রাজবাড়ী জুট মিলের জেনারেল ম্যানেজার আলী আহম্মেদ বলেন, গতকাল শুক্রবার ভোর ছয়টায় শেষ হয় নাইট শিফটের কাজ। শ্রমিকরা একে একে মিল থেকে বের হয়ে গেলে ফজরের নামাজ পড়তে মসজিদে যান নিরাপত্তাকর্মীরা। সকাল ছয়টা দশ মিনিটে এসে তারা দেখতে পান মিলের তেল সরবরাহকারী ইমারেশন প্লান্টের উপরে আগুন জ্বলছে। এরপর পর্যায়ক্রমে আগুন ছড়িয়ে পড়ে বৈদ্যুতিক মটর, মিলের ১ ও ৩ নম্বর প্লান্টে। পরে ফায়ার সার্ভিসে খবর দেওয়া হয়।
রাজবাড়ী জুট মিলের শ্রমিক আনোয়ার হোসেন বলেন, মিল পুড়েনি পুড়েছে একেকটি পরিবারের স্বপ্ন। সপ্তাহভিত্তিক কাজ করে পরিবারের খরচ চালানো এই শ্রমিকগুলো এখন কর্মহীন। তাই ছলছল চোখ নির্বিকার দাড়িয়ে দেখছে মিলের ধ্বংসস্তুপ।
রাজবাড়ী জুটমিলের দশজন মালিকের ২ জন মালিক কাজী দিদার আহম্মেদ সুজাউদ্দিন আহম্মেদ সুরুজ বলেন, এই মিলটি প্রতিটি শ্রমিকের ঘামের উপর নির্ভর করে গড়ে উঠেছে। তাও এক দিনে নয় বছরের পর বছর চেষ্টা করে আজ এই পর্যায়ে আশা মিলটি পুরে ছাই হয়ে গেল। আগামীকাল সকাল ছয়টার পর থেকে শ্রমিকের ভাগ্যে কি আছে তা নিয়েও দুশ্চিন্তায় আছেন তারা। মিলের ১ ও ৩ নম্বর ইউনিট পাশাপাশি স্টোর রুমের মারাত্বক ক্ষতি হয়েছে। এতে শত শত কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করেছেন তারা।
ফায়ার সার্ভিসের ফরিদপুর অঞ্চলের উপ সহকারী কর্মকর্তা মো. নজরুল ইসলাম জানান, খবর পেয়ে প্রথমে রাজবাড়ীর ৪টি ইউনিট কাজ শুরু করে। পরে যোগ হয় ফরিদপুরের আরো একটি ইউনিট। ৫টি ইউনিটের ৪ ঘণ্টা চেষ্টায় সকাল ১০টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। তবে এখনও ক্ষয়-ক্ষতির পরিমাণ জানা যায়নি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন