চৌদ্দগ্রাম উপজেলা সংবাদদাতা : কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে বখাটে ছেলের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করে গ্রাম ছাড়া হয়েছেন আবদুল লতিফ নামের হতভাগা এক বৃদ্ধ বাবা। বৃদ্ধের মালিকাধীন কুয়া ও ফসলী জমি দখলে নিয়ে বাড়ির রাস্তা বন্ধ করে দিয়েছে সমাজপতিরা।
গত ৯ অক্টোবর কুমিল্লার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে দাখিকৃত অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার মুন্সিরহাট ইউনিয়নের লনিশ^র গ্রামের আলহাজ আবদুল লতিফ তার বড় ছেলেকে বেশ কয়েকবার বিদেশে পাঠান। বিদেশে কিছুদিন কাজ করার পর দেশে এসে সে বিভিন্ন অপকর্মে লিপ্ত হয়ে পড়ে। সে বিভিন্ন সময়ে মা-বাবার উপর নির্যাতন চালাত। একপর্যায়ে বাধ্য হয়ে আবদুল লতিফ তার দুই ছেলে আহসান ও হাবিব উল্ল্যাহর নামে কিছু জমি দানপত্র করে তাদের পৃথক করে দেয়। এ দানপত্রে বড় ছেলে আহসানকে ৩০ শতক জমি বেশি দেয়া হয়। আবদুল লতিফ স্ত্রীকে নিয়ে আলাদা বসবাস করতে থাকেন। কিন্তু আরো জমি অথবা নগদ ৫ লাখ টাকা দেয়ার জন্য আহসান উল্যাহ লতিফের উপর চাপ সৃষ্টি করে। জমি বা টাকা না দিলে মেরে ফেলার হুমকি-ধমকি দিতে থাকে। একপর্যায়ে গত ৭ অক্টোবর শুক্রবার সকালে আহসান উল্যাহ তার বাবা আবদুল লতিফকে আবারো জমি বা টাকা দেয়ার জন্য চাপ দিতে থাকলে তিনি দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে লতিফকে এলোপাতাড়ি মারধর শুরু করে। ছেলের হাত থেকে স্বামীকে রক্ষা করতে গিয়ে মা করবুলের নেসাও ছেলের হাতে মার খেয়ে আহত হন। তাদের চিৎকারে এলাকাবাসী এগিয়ে আসলে আহসান পালিয়ে যায়। যাওয়ার সময় সে তার বাবার আলমারী খুলে নগদ ১ লাখ ২০ হাজার টাকা নিয়ে যায়। এ ঘটনায় ৯ অক্টোবর কুমিল্লার আদালতে মামলা দায়ের করেন আবদুল লতিফ। আদালত আহসানের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন। আদালতে মামলা দায়ের করার জের ধরে আহসান কতিপয় প্রভাবশালীর যোগসাজশে তার বাবার চলাচলের পথ বন্ধ করে দিয়ে বিভিন্নভাবে হুমকি-ধমকি দিতে থাকে। ভয়ে বৃদ্ধ আবদুল লতিফ বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে এসে চৌদ্দগ্রাম পৌরসভার শ্রীপুর গ্রামে তার মেয়ের বাড়িতে আশ্রয় নেন। অপরদিকে লতিফের ছোট ছেলে হাবীব উল্যাহর ছোট ছোট ছেলে-মেয়েরা যে মক্তবে লেখা-পড়া করত সে মক্তব থেকে তাদেরকে বের করে দেয়া হয়। এছাড়া কামরুল ইসলাম ও এয়াছিনের নেতৃত্বে সমাজপতিরা লতিফের বাড়ির পাশের একটি কুয়ার মধ্যে ঝাঁক দিয়ে এবং ফসলী দখল করে নিয়েছে। এদিকে নিয়মিত হুমকি-ধমকি ও বৃদ্ধ স্বামীর চিন্তায় মানবেতর জীবন-যাপন করছেন করবুলের নেছাসহ পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা। এ বিষয়ে চৌদ্দগ্রাম থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) শুভ রঞ্জন চাকমা জানান, বিষয়টি আমি শুনেছি। বখাটে আহসানকে গ্রেফতার করতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন