মধ্যপ্রাচ্যের দেশ আরব আমিরাতে দেশীয় শ্রমিক সঙ্কটে প্রবাসী ব্যবসায়ীদের ব্যবসা-বাণিজ্য পরিচালনায় চরমভাবে হিমশিম খেতে হয়েছিল। তবে ভিজিট ভিসায় আমিরাতে আসা বাংলাদেশীদের ভিসা পরিবর্তন করে নিয়োগ ভিসা লাগানোর সুযোগ হওয়ায় সঙ্কট কিছুটা হলেও নিরসন হয়েছে। প্রবাসীদের ব্যবসা-বাণিজ্যে প্রাণচাঞ্চল্য ফিরে আসতে শুরু করেছে।
পর্যাপ্ত সংখ্যায় দেশীয় শ্রমিক প্রয়োজনের কথা উল্লেখ করে ব্যবসায়ীরা বলেছেন, ভিজিট ভিসায় দেশটিতে আসা বাংলাদেশীদের ভিজিট ভিসা পরিবর্তন করে কোম্পানির ভিসা লাগানোর এ সুযোগটি ভালোভাবে কাজে লাগাতে হবে। তবেই ব্যবসায়ীদের শ্রমিক সঙ্কট নিরসনের পাশাপাশি বাংলাদেশিদের নতুন কর্মসংস্থান হবে আরো ব্যাপক।
প্রবাসী ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, বাংলাদেশের চট্টগ্রাম ও সিলেট বিমানবন্দরে পিসিআর ল্যাব না থাকায় ঢাকার হযরত শাহজালাল (রহ.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর দিয়েই সকল যাত্রীকে আসতে হচ্ছে। এতে যেমন ৬/৭ ঘণ্টা আগে বিমানবন্দরে যাত্রীদের উপস্থিতির পাশাপাশি পিসিআর টেস্টসহ বিভিন্নভাবে হয়রানি ও দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
অপরদিকে বিমানবন্দরের কতিপয় অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারি আমিরাতের ভিজিট ভিসাধারীদের নানা অজুহাতে আটকে দিয়ে হয়রানি ও কন্ট্রাক্ট বাণিজ্য করে যাচ্ছে। এতে করে আমিরাতে বাংলাদেশের শ্রমবাজার সম্প্রসারণের ক্ষেত্রে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, আমিরাতের বৈধ ভিজিট ভিসাসহ যাবতীয় ট্রাভেল ডকুমেন্ট থাকার পরও ঢাকায় বিমানবন্দরে কতিপয় অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সাথে একশ্রেণীর অসাধু ট্রাভেল এজেন্সীর যোগসাজশ রয়েছে।
এই সিন্ডিকেট আমিরাতে ভিজিট ভিসায় আসা লোকদের কাছ থেকে টিকেটের মূল্যের সাথে এয়ারপোর্ট কন্ট্রাক্টের নামে আরও ৪৫ থেকে ৫০ হাজার টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। যারা কন্ট্রাক্ট করতে পারছেন শুধুমাত্র তারাই আমিরাতে আসতে পারছেন। আর যারা কন্ট্রাক্ট করতে পারছেন না তাদেরকে নানা অজুহাতে আসতে দেয়া হচ্ছে না।
বাংলাদেশ থেকে ৪০-৫০ হাজার টাকা বিমান ভাড়ায় আমিরাতে আসার বদলে সিন্ডিকেটের কন্ট্রাক্ট বাণিজ্যের কারণে এক লাখ থেকে প্রায় দেড় লাখ টাকায় চুক্তিতে তাদেরকে আসতে হচ্ছে। এদিকে আমিরাতে আসার পর ভিজিট ভিসা পরিবর্তন করে নিয়োগ ভিসা লাগাতে খরচ হয় ৪ থেকে সাড়ে ৪ হাজার দিরহাম। যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৯৬ হাজার থেকে ১ লাখ ৮ হাজার টাকা।
সিন্ডিকেট অবস্থা এমন করেছে যে বাংলাদেশ থেকে আমিরাতে আসতে একজন শ্রমিকের প্রায় আড়াই লাখ টাকা খরচ করতে হচ্ছে। আর এই টাকার যোগান দিতে জমি বিক্রিসহ ঋণ করতে হচ্ছে। প্রবাসী ব্যবসায়ীরা জানান, ভিজিট ভিসায় আমিরাতে যারা আসতে চান তারা যেন ভালো মানের কোম্পানী কি না, চাকরির ধরণ কী, বেতন কত, ঠিকমতো দেয় কি না, ভিসা খরচ কত লাগবে? এসব জেনে আসলে প্রতারিত হওয়ার সুযোগ থাকবে না।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন