মঙ্গলবার, ০৭ মে ২০২৪, ২৪ বৈশাখ ১৪৩১, ২৭ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

শহীদ মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রীর ফুল কেড়ে নিয়ে অপমান করলেন ইউএনও

চিলমারী(কুড়িগ্রাম)সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ১৬ ডিসেম্বর, ২০২১, ২:৫১ পিএম | আপডেট : ৩:১৮ পিএম, ১৬ ডিসেম্বর, ২০২১

কুড়িগ্রামের চিলমারীতে মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে অনুষ্ঠিত মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে এক শহিদ মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রীর হাতে ফুল দিয়ে কেড়ে নিলেন ইউএনও। এতে ওই শহিদ বীর মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী অপমানিত বোধ করে তাৎক্ষণিক অনুষ্ঠান স্থল ত্যাগ করেছেন। এ ঘটনাকে ঘিরে উপজেলার মুুক্তিযোদ্ধা পরিবার ও সচেতন মহলের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

জানাগেছে, উপজেলা প্রশাসন আয়োজিত থানাহাট এ ইউ পাইলট সরকারী উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে কেন্দ্রীয় ভাবে অনুষ্ঠিত বিজয় দিবসে উপজেলার সকল বীর মুক্তিযোদ্ধা ও শহিদ বীর মুক্তিযোদ্ধা পরিবারকে সংবর্ধনা প্রদান করা হয়। সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের শুরুতে মুক্তিযোদ্ধা ও শহিদ মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের ফুলেল শুভেচ্ছা পর্বে বজরা তবকপুর ফৈলামারী এলাকার শহিদ মুক্তিযোদ্ধা রহমত আলীর স্ত্রী রেজিয়া বেওয়ার হাতেও ফুল দেয়া হয়। ফুল দেয়ার কিছুক্ষণ পরেই উপজেলা নিবার্হী অফিসার মাহবুবুর রহমান উপস্থিত উপজেলা পরিষদ মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান আসমা বেগমকে ওই ফুলটি ফেরত নিতে বলেন। এ সময় বাধ্য হয়ে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ওই শহিদ বীর মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রীর হাত থেকে ফুলটি ফেরত নেন। জনসম্মুখে ফুল ফেরত নেয়ার ঘটনায় শহিদ বীর মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী রেজিয়া বেওয়া অপমানিত বোধ করে মাঠেই কাঁন্নায় ভেঙ্গে পড়েন এবং অনুষ্ঠান স্থল ত্যাগ করেন। এ ঘটনাকে ঘিরে উপজেলার মুক্তিযোদ্ধা পরিবার ও সচেতন মহলের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানাযায়, উপজেলার থানাহাট ইউনিয়নের কিসামত বানু এলাকার রহমত আলী মুক্তিযুদ্ধকালিন সময়ে শহিদ হন। দেশ স্বাধীনের পর একমাত্র সন্তান এরশাদুল আলমকে নিয়ে রেজিয়া বেওয়া পিতার বাড়ী একই ইউনিয়নের বজরা তবকপুর ফৈলামারী এলাকায় চলে যান। পরবর্তিতে মুক্তিযোদ্ধাদের অনুমোদিত বিভিন্ন তালিকায় রহমত আলীর নাম শহিদ মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে অন্র্Íভুক্ত হওয়ায় শহিদ পরিবারটি নিয়মিত বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্ট থেকে মাসিক ৩০ হাজার করে ভাতাসহ সকল সুযোগ সুবিধা ভোগ করে আসছে। ভাত বহির ক্রমিক নং-শ-কুড়ি-১০৩৪৮।

এদিকে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে ফুল কেড়ে নেয়ার ঘটনায় শহিদ বীর মুক্তিযোদ্ধা পরিবারটির মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। শহিদ বীর মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী রেজিয়া বেওয়া জানান, বীর মুক্তিযোদ্ধা ও শহিদ বীর মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে দাওয়াত পেয়ে তিনি অনুষ্ঠানে যান। অনুষ্ঠানের শুরুতেই ফুলেল শুভেচ্ছা পর্বে তাকেও ফুল দিয়ে ফুলটি কেড়ে নেয়া হয়। শহিদ বীর মুক্তিযোদ্ধার ছেলে এরশাদুল আলম (৪৮) বলেন, সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে আমার মাকে অপমানিত করা মানে সকল মুক্তিযোদ্ধা ও শহিদ মুক্তিযোদ্ধা পরিবারকেই অপমানিত করা। আমি এর তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি।

উপজেলা পরিষদ মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান আসমা বেগম এ ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করে জানান, ওই নারীকে ফুলটি দেয়ার পর ইউএনও সাহেব তা ফেরত নেয়ার জন্য বার বার বলায় আমি ফুল ফেরত নিয়েছি।

উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার আব্দুর রহিম বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই।

এ বিষয়ে উপজেলা নিবার্হী অফিসার (ইউএনও) মোঃ মাহবুবুর রহমান বলেন, ওই শহিদ মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রীর কাছ থেকে ফুলটি ফেরত নেয়া হয়েছে মুলত উপহারের সাথে দেয়ার জন্য।

 

 

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (1)
নাহিদ হাসান ১৬ ডিসেম্বর, ২০২১, ৬:৫২ পিএম says : 0
তাঁকে দুইটি উপহার একসাথে দেওয়ার জন্য ফেরত নিয়েছিলেন। পরে তো তাকে ফুলসহ কম্বলও দেওয়া হয়েছে। অনুষ্ঠানটি তো তাঁদেরই জন্য। তাহলে ইউএনও কেন অপমাণ করবেন? তার সাথে তো শত্রুতা নাই। উনি কি একটু সবুরও করতে পারলেন না? লাইন ভেঙে ফুল নিলেন কেন আগে? স্বাক্ষ্য হিসেবে মুক্তিযোদ্ধাদের কথা বল। অথচ বীর মুক্তিযোদ্ধা কিন্তু বললেন, তিনি জানেন না। যিনি জানেন না, তাকে সাক্ষি হিসেবে নিলেন। কেমন স্ববিরোধী সংবাদ নয়?
Total Reply(0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন