শুক্রবার ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ৩০ কার্তিক ১৪৩১, ১২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সারা বাংলার খবর

সবজির প্রত্যাশিত দাম পাচ্ছেন না চাষিরা

মধ্যস্বত্বভোগীতে বাজার গরম

রাজশাহী ব্যুরো : | প্রকাশের সময় : ১৮ ডিসেম্বর, ২০২১, ১২:০৩ এএম

বরেন্দ্র অঞ্চলে এখন শীতকালীন শাক-সবজির ভর মৌসুম। হাট বাজারে বেড়েছে নানা রকম শাক-সবজির সরবরাহ। সরবরাহ বাড়ায় মধ্যবিত্তের দামে কিছুটা স্বস্তি এলেও মাঠ পর্যায়ে দাম একেবারে কমেছে। বিপাকে পড়েছে কৃষক।

এখন রাজশাহীর বাজারে ফুলকপি, বাধাকপি, সীম বেগুন, টমেটো, শষা, লাউ, বরবটি কেজিপ্রতি পণ্যভেদে ৩০ থেকে ৫০ টাকার মধ্যে মিলছে। নগরীর বড় সবজির বাজার মাস্টারপাড়া গতকাল ঘুরে দেখা যায়- এমন দামে শাক-সবজি বিক্রি হচ্ছে। তবে সাহেব বাজার তার নামের সাথে মিল রেখে একটু সাহেবী দামে বিক্রি করছে। প্রতি শাক-সবজিতে দশ- কুড়ি টাকা বেশি। বাজারে আগাম লাগানো আলু, ঢেমনা পেয়াজ নামে পরিচিত পেয়াজ এসেছে। ফলে দেশি পেয়াজের দামে খানিকটা লাগাম পড়েছে। দাম পঞ্চাশ টাকা কেজির নীচে নয়। দাম খানিকটা কমেছে রসুন আদার। বিক্রি হচ্ছে দেশি রসুন চল্লিশ টাকা আর আদা ষাট টাকা কেজি দরে।
তবে তেল মসলার বাজারে উত্তাপ খানিকটা বেড়েছে। সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে একশো পঞ্চাশ টাকা লিটারে। কিছুদিন আগে বাজারে সরিষার তেলের দাম লিটার প্রতি একশো আশি টাকা থাকলেও তা বেড়ে দুশো কুড়ি টাকা হয়েছে। চাল আটা চিনি ডাল লবণ সবকিছুর দাম বেড়েছে। মাংসের দাম আর না বাড়লেও মাছের দাম কেজি প্রতি ত্রিশ চল্লিশ টাকা বেড়েছে। মুরগীর বাজারে ব্রয়লারের দাম একাশো চল্লিশ। আর সোনালিসা নামের সোনালি মুরগি নিয়ে চলছে ভিন্ন রকম কারবার। অরিজিনাল সোনালির স্থলে হাইব্রিড জাতের সোনালি মুরগী এসেছে সোনালি বয়েল, সোনালি ক্লাসিক নামে। মুরগি ব্যবসায়ীরা জানান, খামারীরা এখন এসব হাইব্রিড জাতের উৎপাদন বাড়াচ্ছে। স্বাদের দিক থেকে অনেকটা ব্রয়লারের মত। এসব মুরগী বিভিন্ন ঔষধ আর খাদ্যের কারণে দ্রুত বাড়ে ও মোটা তাজা হয়। যেখানে একটি সোনালি মুরগি এক কেজি ওজনের হতে সময় লাগে দু’আড়াই মাসের মতো। তবে হাইব্রিড সোনালি হতে লাগে ষাট পয়ষট্টি দিন। এগুলোই চলে সোনালি নামের এসব মুরগী হয়ে। তবে বাজারে এসব মুরগীর দামের কমতি নেই। বিক্রি হচ্ছে প্রতিকেজি দুশো চল্লিশ থেকে আড়াইশো টাকা দরে। ক্রেতারা সোনালি ভেবে কিনে প্রতারিত হচ্ছেন। অনেক ক্রেতাকে এ নিয়ে বিক্রেতার সাথে তর্ক-বিতর্ক করতে দেখা যায়।
বাজারে সাবান টুথপেষ্ট ডিটারজেন্ট পাউডার, গুড়ো দুধ সবকিছুর দাম বেড়েছে অস্বাভাবিক হারে। যে টুথপেষ্ট বিক্রি হতো একশো দশ টাকায় তা এখন বিক্রি হচ্ছে একশো চল্লিশ টাকায়। লাক্স সাবান চল্লিশ টাকা থেকে ষাট টাকায় উঠেছে। এক সপ্তাহের ব্যবধানে গুড়ো দুধের দাম বেড়েছে। আধা কেজি ওজনের গুড়ো দুধের প্যাকেট ছিল দুশো কুড়ি টাকা। গতকাল গিয়ে দেখা যায় তা দুশো পয়ষট্টি টাকায় উঠেছে। চালের ভর মৌসুমে প্রত্যেক চালে দাম বেড়েছে কেজিপ্রতি তিন থেকে পাঁচ টাকা। ভেলকিবাজি চলছে নুডুল বিস্কুটের প্যাকেটে। দাম না বাড়লেও ভেতরে মাল কমেছে।
এদিকে বাজারে শক-সবজির দাম কমলেও দুশ্চিন্তার ভাঁজ উৎপাদক কৃষকের। বাজারের ত্রিশ টাকার বাধাকপি ফুলকপি মাঠ থেকে ফড়িয়ারা কিনছে দশ-পনের টাকা দরে। কৃষকের লাভের অংশ যাচ্ছে মধ্যস্বত্ব ভোগীর পকেটে। পাইকারী ব্যবসায়ীদের অজুহাত হাট থেকে মালামাল আনতে ডিজেলের দাম বাড়ার কারনে বেশি খরচ পড়ছে। তাই মাঠের দামের সাথে বাজারের দামের এমন ফারাক। শুরুতে মুলা ভাল দাম পেলেও এখন তা মূলহীন হয়ে পড়ছে। পাঁচটাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। মাঠ থেকে মুলা তোলার খরচ উঠছে না। বাজার মনিটরিং নামে একটা দফতর থাকলেও তাদের কাজ শুধু বাজার দরের খোঁজ নিয়ে ঢাকায় পাঠানো।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন