একাধিক শিশু পুত্র জন্ম নেয়ায় বরিশালের গৌরনদী উপজেলার বড় দুলালী গ্রামে চার মাসের শিশু পুত্র জুবায়ের আহমেদকে বালতির পানিতে চুবিয়ে হত্যা করে মা ছালেহা বেগম পলি পালিয়ে গেছে। পরিবারের স্বজনরা কেউ বলছেন একাধিক শিশুপুত্র জন্ম নেয়ায় আবার কেউ বলছে স্বপ্ন দেখে এ রকম ঘটনা ঘটিয়েছে পলি। এ ঘটনায় গতকাল রোববার দুপুরে শিশুটির লাশ ময়নাতদন্তের জন্য শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠানো হয়।
নিহতের বাবা গরুর খামারি সাগির তালুকদার সাংবাদিকদের জানান, তিনি তিন পুত্র ও এক কন্যা সন্তানের জনক। প্রতিদিনে ন্যায় গত শনিবার রাতের খাবার খেয়ে চার মাস বয়সের ছোট ছেলে জুবায়েরকে নিয়ে তিনি ও তার স্ত্রী পলি এক খাটে ঘুমিয়ে পড়েন। রাত সোয়া ১১টার দিকে ঘুম থেকে জেগে স্ত্রী ও পুত্রকে বিছানায় না পেয়ে পবিবারের সদস্যরা অনেক খোঁজাখুঁজি করে গরুর ঘরের পাশে বড় বালতির মুখ অন্য একটি পাত্র দিয়ে ঢাকা দেখতে পান।
তখন ওই বালতির মুখের ঢাকনা সরিয়ে পানি ভর্তি বালতির মধ্যে জুবায়েরের মাথা নিচে ও পা দুটো উপরের দিকে দেখে চিৎকার দিয়ে বালতির ভেতর থেকে জুবায়েরের লাশ উদ্ধার করেন তারা। তার চিৎকার শুনে প্রতিবেশীরা ছুটে আসে। অনেক খোঁজাখুঁজি করে জুবারের মা পলিরও কোন সন্ধান পাওয়া যায়নি।
সাগির আরো জানান, ছেলে জুবায়ের আহম্মেদ জন্মের পর থেকে তার স্ত্রী পলি মানসিক ভারসাম্যহীন হয়ে পড়ে। পলি প্রায়ই স্বপ্নে আদেশ পেয়ে খাসি সদগাহ ও মনসা মন্দিরে দুধ-কলা দেয়। ঘুমের মধ্যে চিৎকার করে উঠত। এরপর সে আমাদের কাছেও স্বপ্ন আদেশের কথা বলত। সাগর আরও জানান, তার স্ত্রী পলি স্বপ্ন আদেশ পেয়ে বলে আসছিলো জুবায়ের বেঁচে থাকলে সংসারে শান্তি হবে না। এমনকি দুই সন্তানকে আছড়ায় মেরে ফেলবে।
নিহতের বড় বোন সাগরিকা জানায়, তার ছোট ভাই জুবায়ের জন্মের পর থেকেই তার মা প্রায়ই স্বপ্নে আদেশ পেয়ে আবোল-তাবোল বলে আসছিল। গৌরনদী থানার ওসি আফজাল হোসেন জানান, পলি তৃতীয়বার পুত্র সন্তান জন্ম গ্রহণের পর থেকে জুবায়েরকে অপছন্দ করতো বলে পরিবারের স্বজনরা জানিয়েছেন। এ ঘটনায় নিহতের বাবা সাগির তালুকদার বাদী হয়ে ঘাতক স্ত্রী পলিকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। হত্যার রহস্য উদঘাটনে অভিযুক্ত পলিকে গ্রেফতারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলেও জানান তিনি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন