বরগুনা সদর উপজেলার বুড়িরচর ইউনিয়নের দক্ষিণ বড় লবনগোলা মানিকখালী গ্রামের হাফসার বিয়ের কথা ছিলো আগামী শুক্রবার। বিয়ের দিন তারিখ পাকাপাকি হয়ে গেলে হাফসার বিয়ের কেনাকাটা করতে ছোট্ট শিশু নারিুল্লাহকে সাথে নিয়ে রাজধানী ঢাকায় গিয়েছিলেন হাফসার বাবা মা পাখি বেগম। ঢাকার একটি বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানে চাকরি করতেন বাবা হাকিম শরিফ। মেয়ের বিয়ের জন্যে ব্যাংকে রাখা কিছু টাকা আর শাড়ি গয়না কিনে তারা এমভি অভিযান-১০ লঞ্চে চরে বরগুনার উদ্দেশ্যে রওনা হন। এরপর আর বাড়ি ফেরা হয়নি হাকিম শরীফ আর তার স্ত্রী পাখি বেগমের।
এমভি অভিযান লঞ্চের ভয়াবহ অগ্নিকান্ডে নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাড়িয়েছে ৫১। নিহতদের প্রায় সকলের বাড়িই বরগুনা জেলার বিভিন্ন গ্রামে। পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম সদস্যের মৃত্যুতে অসহায় হয়ে পড়েছে অনেক পরিবার। পিতৃমাতৃহীন শিশুদের অনিশ্চিৎ ভবিষ্যত নিয়ে শঙ্কায় স্বজনরা।
নিখোঁজ হাকিম শরীফ পাখি বেগম দম্পতির স্বজনরা জানান, হাফসার বিয়ের কথা ছিলো আগামী শুক্রবার। বিয়ের দিন তারিখ পাকাপাকি হয়ে গেলে হাফসার বিয়ের কেনাকাটা করতে ছোট্ট শিশু নারিুল্লাহকে সাথে নিয়ে রাজধানী ঢাকায় গিয়েছিলেন হাফসার মা পাখি বেগম। ঢাকার একটি বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানে চাকরি করতেন বাবা হাকিম শরিফ। মেয়ের বিয়ের জন্যে ব্যাংকে জমানো কিছু টাকা আর শাড়ি গয়না কিনে তারা এমভি অভিযান-১০ লঞ্চে উঠেন বরগুনার উদ্দেশ্যে রওনা হন। এরপর আর বাড়ি ফেরা হয়নি হাকিম শরীফ আর তার স্ত্রী পাখি বেগমের। বাড়ি ফেরেনি ছোট্ট শিশু নাসিরুল্লাও। গভীর রাতে এমভি অভিযান-১০ লঞ্চে ভয়াবহ অগ্নিকান্ডের ঘটনায় মৃত্যু হয় এরকম ধারনা তাদের।
অনেক খোঁজাখুজির পরেও হাকিম শরীফ, পাখি বেগম ও তাদের শিশুপুত্র নাসিরুল্লাহর মরদেহের কোন সন্ধান মেলেনি। তবে অগ্নিকান্ডের শিকার এমভি অভিযানে সন্ধান চালিয়ে হাফসার বিয়ের শাড়ি কাপড় গয়নাগাটি আর পুড়ে যাওয়া লাগেজ ঠিকই খুঁজে পেয়েছেন হাফসার মামা নজরুল আর নানী ফরিদা বেগম। খুঁজে পেয়েছেন ছোট্ট শিশু নাসিরুল্লাহর প্যান্ট শার্ট। এদিকে বাবা-মায়ের আকষ্মিক মৃত্যুতে অনিশ্চিৎ হয়ে পড়েছে বড় মেয়ে হাফসা, মেজ মেয়ে সুমাইয়া এবং সেজ ছেলে ফজলুল হকের ভবিষ্যত। আটকে গেছে পাকাপাকি হয়ে যাওয়া হাফসার বিয়েও।
শুধুমাত্র হাফসা, সুমাইয়া আর ফজলুল হকই নয়। এমভি অভিযান -১০ ট্রাজেডিতে পিতৃমাতৃহীন হয়ে অনিশ্চিৎ ভবিষ্যত এখন বরগুনার আরও অনেক শিশুর। ভয়াবহ এ দুর্ঘটনায় থমকে গেছে জীবন। আটকে গেছে শত স্বপ্ন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন