শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সারা বাংলার খবর

তিনটি মহানগরীতে ৭টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় নির্মাণ কাজ শেষের পথে

প্রকাশের সময় : ২৭ অক্টোবর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

নাছিম উল আলম : বরিশাল, খুলনা ও সিলেট মহানগরীতে প্রায় দেড়শ’ কোটি টাকা ব্যয়ে ৭টি সরকারী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অবকাঠামো নির্মাণ কাজ ৭০ ভাগ শেষ হয়েছে। সম্পূর্ণ দেশীয় তহবিলে নির্মাণাধীন এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অবকাঠামো নির্মাণ কাজ চলতি অর্থ বছরের মধ্যেই শেষ করে শিক্ষা কার্যক্রম পূর্ণাঙ্গভাবে চালু করতে চাচ্ছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। শিক্ষা প্রকৌশল অধিদফতর সে লক্ষ্যে কাজ করছে বলে জানিয়েছে দায়িত্বশীল মহল।  তবে বিকল্প ব্যবস্থায় এসব সরকারী বিদ্যালয়ের কয়েকটি ইতোমধ্যে চালু করাও হয়েছে।
সরকারী নিজস্ব উন্নয়ন কর্মসূচির আওতায় বরিশাল ও সিলেট মহানগরীতে দুটি করে এবং খুলনাতে ৩টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় স্থাপনের লক্ষ্যে ২০১১-১২ অর্থ বছরে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে বিগত মহাজোট সরকার। এরই আলোকে ডিপিপি প্রণয়নসহ সব আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করে একনেক-এর চূড়ান্ত অনুমোদন লাভ করে প্রকল্পটি।
প্রকল্পের আওতায় বরিশাল মহানগরীর রূপাতলী ও কাউনিয়া এলাকায় দুটি সরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান স্থাপনের বিষয়টি চূড়ান্ত করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। মাটি পরীক্ষা ও নকশা প্রণয়নসহ দরপত্র আহ্বান করে ২০১৪-এর ৬ জুলাই বরিশালের রূপাতলী সরকারী মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও গত বছর ৫ জানুয়ারী কাউনিয়া সরকারী বিদ্যালয়ের কার্যাদেশ প্রদান করে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদফতর। প্রতিটি বিদ্যালয়ে ৭-তলার বিশাল ভবনসহ প্রধান শিক্ষকের জন্য ক্যাম্পাসেই বাস ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে বরিশালের দুটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেরই প্রথম পর্যায়ে ৪-তলা পর্যন্ত ভবন নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে। আগামী জানুয়ারীর মধ্যে দুটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেই ক্লাস শুরু করার মতো সুবিধা নিশ্চিত করা হবে বলে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের বরিশালের নির্বাহী প্রকৌশলী জানিয়েছেন। এছাড়া ৫ম তলা থেকে সপ্তম তলা পর্যন্ত নির্মাণ কাজও ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে।
প্রকল্প পরিচালকের মতে, চলতি অর্থ বছরের মধ্যে ৩টি মহানগরীর ৭টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নির্মাণ কাজই শেষ করার লক্ষ্যে অপ্রাণ চেষ্টা করে যাচ্ছেন তারা। তবে অবকাঠামো নির্মাণ কাজের মান নিয়ন্ত্রণে তাড়াহুড়া করা ঠিক নয় বলে জানিয়ে প্রকল্প পরিচালক জানান, ২০১৭-এর ডিসেম্বরের মধ্যে তারা সবগুলো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সমুদয় কাজ শেষ করে সেখানে শিক্ষা কার্যক্রম চালু করার সব সুবিধা নিশ্চিত করবেন।
তবে বরিশাল জেলা স্কুলের কলেজ ক্যাম্পাসে গতবছর থেকেই নির্মাণাধীন দুটি প্রতিষ্ঠানেরই শিক্ষা কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে। বিপুলসংখ্যক ছাত্রছাত্রী এ দুটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে লেখাপড়াও করছে।
নির্মাণাধীন এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বিশাল ৭-তলা ভবনের নিচ তলাতে অফিস এবং প্রধান শিক্ষকের দফতরসহ শিক্ষকম-লীর মিলনায়তন থাকছে। দ্বিতীয় তলা থেকে ৬ষ্ঠ তলা পর্যন্ত ন্যুনতম ৩৬টি ক্লাস রুমের ব্যবস্থা করা হবে এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে। ৭ম তলাতে একটি পূর্ণাঙ্গ মিলনায়তনও থাকছে। এছাড়া প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ৩৬টি কম্পিউটার সমৃদ্ধ আইসিটি ল্যাব প্রতিষ্ঠা করা হবে। এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর ২৫টি শ্রেণী কক্ষে মাল্টিমিডিয়া ও প্রজেক্টরের সাহায্যে পাঠদান করা হবে বলেও জানিয়েছেন প্রকল্প পরিচালক। প্রতিটি বিদ্যালয়ের মূল ভবনে ২টি করে বড় মাপের লিফট চালু করা হচ্ছে। ফলে ছাত্রছাত্রীদের শ্রেণী কক্ষে ওঠা-নামায় কষ্ট লাঘব হবে।
প্রকল্পের আওতায় বরিশালের কাউনিয়া ও রূপাতলীতে যে দুটি মাধমিক বিদ্যালয় নির্মাণ করা হচ্ছে, তার মূল ব্যয় হচ্ছে প্রায় ৪০ কোটি টাকা। তবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান দুটি প্রাথমিকভাবে রূপাতলী ও কাউনিয়ার স্ব-স্ব এলাকার নামে নামকরণ করা হলেও শীঘ্রই এর নামেরও পরিবর্তন আসছে বলে জানা গেছে।  ১৯৭৫-এর  ১৫ আগস্ট সেনা সদস্যদের হামলায় নিহত বরিশালের সন্তান শহিদ আবদুর রব সেরনিয়াবাত ও তার জ্যেষ্ঠা কন্যা শেখ ফজলুল হক মণির সহধর্মিণী বেগম আরজু মণির নামে এ দুটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নামকরণ হচ্ছে বলে একটি বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছেু। খুব শীঘ্রই এ লক্ষ্যে সরকারী গেজেট প্রকাশিত হবে।
তবে ঠিক কত ছাত্রছাত্রী এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে লেখাপড়ার সুযোগ পাবে তা এখনো চূড়ান্ত না হলেও বিদ্যালয়গুলোর ৬ষ্ঠ শ্রেণী থেকে দশম শ্রেণী পর্যন্ত সবগুলো শাখায় কম পক্ষে ৩ হাজার করে ছাত্রছাত্রী একই সাথে লেখাপড়ার সুযোগ পাবে বলে প্রাথমিকভাবে আশা করছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
বরিশাল বিভাগীয় সদরে বৃটিশ যুগে প্রতিষ্ঠিত দুটি মাধ্যমিক বিদ্যালয় তৎকালীন পাকিস্তান সরকার জাতীয়করণ করে। বরিশাল জেলা স্কুল ও সরকারী বালিকা বিদ্যালয় এ নগরীসহ গোটা দক্ষিণাঞ্চলের গর্ব। ২০০৫-০৬ সালে এ নগরীতে বরিশাল মডেল স্কুল  ও কলেজ প্রতিষ্ঠার কাজ অনুমোদনের পরে ২০০৭ সালে নির্মাণ কাজ শেষে শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হয়। এ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটিতেও প্রায় দেড় হাজার ছাত্রছাত্রী লেখাপড়ার সুযোগ পাচ্ছে। নতুন দুটি সরকারী বিদ্যালয়ের কার্যক্রম শুরুর মাধ্যমে বরিশাল মহানগরীতে মাধ্যমিক পর্যায়ের সরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা পাঁচ-এ উন্নীত হবে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন