শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪, ২০ বৈশাখ ১৪৩১, ২৩ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

গলায় ছুরি ধরে ভাড়াটিয়া নারীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ, আটক ১

ঈশ্বরগঞ্জ (ময়মনসিংহ) উপজেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২৯ ডিসেম্বর, ২০২১, ১১:৪৬ পিএম

ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জে ঘুমন্ত মেয়ের গলায় ছুরি ধরে জিম্মি করে এক ভাড়াটিয়া নারীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ করা হয়েছে। এ ঘটনায় বাড়ির মালিকের ছেলে ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে থানায় মামলা হয়েছে। পুলিশ বাড়ির মালিকের ছেলে ও প্রধান অভিযুক্ত জুবায়েদ হোসেন আকাশকে গ্রেপ্তার করে বুধবার সন্ধ্যায় আদালতে হাজির করে। ময়মনসিংহ চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তিনি স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।

পুলিশ ও ধর্ষণের শিকার নারীর পরিবার সূত্রে জানা যায়, চল্লিশ বছর বয়সী ওই নারী তিন সন্তানের জননী। সদর উপজেলার একটি গ্রামের বাসিন্দা। গত দুই বছর আগে স্বামী মারা যাওয়ায় মাস দুয়েক আগে ফের তার বিয়ে হয়। তার বর্তমান স্বামী পেশায় সিএনজি চালক। বিয়ের পর তিনি স্বামীর সঙ্গে পৌর এলাকার দত্তপাড়ায় ভাড়াটিয়া হিসেবে বসবাস শুরু করেন। তাদের পাশের রুমে বসবাস করতেন বাড়ির মালিক একাদুলের ছেলে আকাশ (১৯)। বাবা অন্যত্র থাকায় মাহিন্দ্র চালক আকাশ একাই সেখানে থাকতেন।

মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, গত রোববার রাত ১টার দিকে আকাশ ভাড়াটিয়ার ঘরের দরজা খোলার জন্য ধাক্কাধাক্কি শুরু করেন। দরজা খুলতেই আরও চারজনকে নিয়ে তিনি রুমে প্রবেশ করেন। পরে দেশীয় অস্ত্র হাতে নারীর স্বামীকে ভয় দেখাতে শুরু করেন। অস্ত্রধারীদের ভয়ে পালিয়ে যান ওই নারীর স্বামী। পরে ওই পাঁচ যুবক তাকে ধর্ষণ করেন। ঘটনা স্থানীয়দের জানিয়ে গত মঙ্গলবার থানায় গিয়ে বাদী হয়ে মামলা করেন ওই নারী। এতে পাঁচজনকে আসামি করা হয়। তারা হলেন জুবায়েদ হোসেন আকাশ, আপন মিয়া, মো. জামাল মিয়া, বাবু ওরফে হাড্ডি বাবু ও মো. সোহেল মিয়া। সোহেলের পিতা ও গ্রামের পরিচয় জানা যায়নি। বাকিরা সবাই পৌর এলাকার দত্তপাড়ার বাসিন্দা।

নির্যাতিত নারী মোবাইল ফোনে জানান, বাড়ির মালিকের ছেলে ঘুমন্ত অবস্থায় তাদের ডেকে তোলেন। ঘরের দরজা খুলতেই অস্ত্রের মুখে তার স্বামীকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়। এরপর পুরো ঘর তছনছ করে। পরে তার চার বছর বয়সী ঘুমন্ত মেয়ের গলায় ছুরি ধরে মেরে ফেলার ভয় দেখিয়ে তার ওপর নির্যাতন চালায় পাঁচজন। বিষয়টি কাউকে না বলতেও হুমকি দেওয়া হয়। ভয়ে তার স্বামী এখনও পলাতক। তিনি ন্যায়বিচারের জন্য মামলা করেছেন।
গত মঙ্গলবার রাতে মামলা হওয়ার পর পুলিশ পৌর এলাকায় অভিযান চালিয়ে আকাশকে গ্রেপ্তার করে। সে এলাকায় চুরির সঙ্গে সম্পৃক্ত। অন্য আসামি বাবুর প্রকৃত নাম শরীফুল ইসলাম বাবু। কিন্তু পুলিশের রেকর্ডে নাম বাবু ওরফে হাড্ডি কিলার বাবু। তার বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলা ছাড়াও আরও পাঁচটি মামলা রয়েছে। গ্রেপ্তারও হয়েছে বেশ কয়েকবার। নানা অপকর্মের কারণে এলাকায় দেখা যেত না এক সময় ছাত্রদলের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত থাকা বাবুকে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন জানান, গত পৌর নির্বাচনে বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আবদুস ছাত্তার পৌরসভার মেয়র হিসেবে নির্বাচন করে নির্বাচিত হন। তার পক্ষে অবস্থান নিয়ে নির্বাচনী মাঠে দাপিয়ে বেড়ায় বাবু। এরপর যুক্ত হয় স্থানীয় আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে নানা কর্মসূচিতে। এলাকায় গ্রুপ সৃষ্টি করে নেতৃত্ব দিয়ে নানা অপকর্মের সঙ্গে জড়িত বাবু। ধর্ষণে অভিযুক্তরা ঘটনার পর থেকে পলাতক।

ঈশ্বরগঞ্জ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) জহিরুল ইসলাম মুন্না বলেন, আকাশ পাঁচজন মিলে ধর্ষণের কথা স্বীকার করেছে। স্বীকারোক্তি শেষে বিচারক তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (1)
Masud ৩০ ডিসেম্বর, ২০২১, ৯:১৬ এএম says : 0
ঘটনা সন্দেহজনক, স্বামীকে গ্রেপ্তার করলেই আসল রহস্য উদঘাটন করা সম্ভব হবে।
Total Reply(0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন