শনিবার, ০৪ মে ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪৩১, ২৪ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

স্বাস্থ্য

শীতে হাঁপানির কষ্ট বাড়ে

| প্রকাশের সময় : ৩১ ডিসেম্বর, ২০২১, ১২:০২ এএম

অ্যাজমা বা হাঁপানি আমাদের দেশের খুব পরিচিত একটি শ্বাস কষ্টের অসুখ। প্রতিবছর অ্যাজমা রোগে অনেকেই আক্রান্ত হয় এবং দুর্ভাগ্যজনকভাবে কেউ কেউ মৃত্যুবরণ করে। এসময়ে হাসপাতালে প্রায় প্রতিদিনই দেখা যায় প্রচন্ড শ্বাসকষ্ট নিয়ে হাঁপানির রোগী ভর্তি হয় এবং এদের মধ্যে অনেকেই সঠিক নির্দেশনার অভাবে ভালো থাকতে পারে না বলেই হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার মত অবস্থা তৈরী হয়েছে। বিভিন্ন কারণে কিন্তু শীতকালে অ্যাজমা বেড়ে যেতে পারে।

অ্যাজমা বা হাঁপানি একটি অ্যালার্জি জনিত রোগ। অ্যালার্জি ও তাপমাত্রার তারতম্যের কারনে প্রতিবারই শীতে আমাদের দেশে অ্যাজমার প্রকোপ বেড়ে যায়। যারা নিয়মিত ডাক্তারের পরামর্শ মেনে জীবন যাপন করে ও ওষুধ ব্যবহার করে তাদের অ্যাজমা বা হাঁপানি নিয়ন্ত্রণে থাকে। কিন্তু যারা ঠিকমতো ওষুধ ব্যবহার করেনা, কবিরাজি, ঝারফুক ও অন্যান্য হাতুরে চিকিৎসার কবলে পরে তাদের অনেকেরই মৃত্যু মুখে পতিত হতে হয়। গুজব বা হাতুরে ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে কোন ভাবেই হাঁপানি নিয়ন্ত্রনে রাখা সম্ভব নয়। অনেকেই ইনহেলারকে ভয় পায়, মনে করে এতে উপকারের চেয়ে ক্ষতির সম্ভবনা আছে। তারা নিয়মিত ওষুধও অনেকে খায় না, তাদের ক্ষেত্রে বিভিন্ন সময়ে কিন্তু অ্যাজমার প্রকোপ বেড়ে যেতে পারে। হাঁপানিতে দীর্ঘমেয়াদে এলোপ্যাথি ওষুধ ও ইনহেলার ব্যবহারে ক্ষতি হয় এই ভয় অনেক কবিরাজ, হোমিও ডাক্তার, গ্রাম্য হাতুরেরা দেখিয়ে থাকে। কিন্তু তারাই আবার গোপনে রুগীর অজান্তে স্টেরয়েড টেবলেট গুড়া করে তাদের নিজেদের ওষুধ বলে অনিয়ন্ত্রিতভাবে মাসের পর মাস এসব রুগিকে খাওয়ায়। ফলফল মারাত্মক সব পার্শ্বপ্রতিকিয়ায় রুগীর অকাল মৃত্যু। তাই কখওই অভিজ্ঞ চিকিৎসক ছাড়া অন্য কোনভাবে এটা নিয়ন্ত্রনের চেষ্টা করে নিজের ক্ষতি নিজে করবন না।

যখন ঠান্ডা বেশী পড়ে তখন কিন্তু অ্যালার্জেন, ভাইরাস সংক্রমন ইত্যাদির কারনে অ্যাজমা বা হাঁপানি বাড়তে পারে। ঠান্ডা আবহাওয়া আমাদের শ্বাসনালীকে শুষ্ক করে ফেলে। এর ফলে নানা রকম সংক্রমন সহ প্রদাহ হয় এবং শ্লেষা জমেও শ্বাসনালী সরু হয়ে যায়। এজন্য দেখা দিতে পারে মারাত্মক অ্যাজমার অ্যাটাক।

এজন্য শীতকালে অ্যাজমার হাত থেকে বাঁচার জন্য শীতের শুরুতেই প্রস্তুতি নিতে হবে। শীতের ঠান্ডা বাতাস, ধুলাবালি, ফুলের রেনু, মাইট ইত্যাদি যাতে সরাসরি নাক মুখে প্রবেশ করতে না পারে সে জন্য মাফলার ব্যবহার করা যেতে পারে। সেটি নাক ঢেকে রাখবে এবং এর মধ্যেই শ্বাস নিতে হবে। তার ফলে বাতাস কিছুটা গরম হয়ে প্রবেশ করবে, অন্য অ্যালার্জেনও প্রবেশে বাধা পাবে এবং ফলে শ্বাস কষ্ট কম হবে।

বিভিন্ন ধাপের এটাকের জন্য বিভিন্ন মাত্রার ওষুধ বাজারে প্রচলিত আছে। তাই চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে চললে ভয়ের কিছু নেই। তবে সঠিক চিকিৎসা দরকার এবং শীত আসলে অবশ্যই সচেতন হতে হবে, সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে।

ডাঃ মোঃ ফজলুল কবির পাভেল
রেজিষ্ট্রার, মেডিসিন বিভাগ,
রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন