গাজীপুরের শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিক্যালে রি-অ্যাজেন্ট না থাকায় তিন মাস ধরে হাসপাতালের ল্যাবে সিরাম ইলেক্ট্রোলাইট, ট্রপোনিনসহ গুরুত্বপূর্ণ আট ধরণের বিভিন্ন পরীক্ষা হচ্ছে না। এতে চিকিৎসকদের প্রিস্ক্রাইব করা এসব পরীক্ষা বাইরে থেকে করতে গিয়ে নানা ভোগান্তি ও হয়রানীর শিকার হচ্ছেন রোগীরা। শুধু তাই না, বাইরে থেকে এসব পরীক্ষা করার জন্য তাদের অধিক খরচ গুণতে হচ্ছে।
শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিক্যালের টেকনোলজিস্ট মোমেন হোসেন মোল্লা জানান, প্রায় ৪ মাস ধরে রি-অ্যাজেন্ট সঙ্কট থাকায় সিরাম ইলেক্ট্রোলাইট, ট্রপোনিন, টিএসবি, টি-৩, টি-৪, এফএসএইচ, এলএইচসহ গুরুত্বপূর্ণ আটটি পরীক্ষা করা সম্ভব হচ্ছে না। বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে জানালেও এ সমস্যার সমাধান হচ্ছে না। হাসপাতালে ট্রপোনিন পরীক্ষার জন্য ৩০০ টাকা এবং ইলেক্ট্রোলাইট পরীক্ষার জন্য ২০০ টাকা লাগলেও বাইরে এ পরীক্ষার জন্য যথাক্রমে ১৩০০ ও ১২০০ টাকা রাখা হচ্ছে বলে তিনি জেনেছেন।
সম্প্রতি হৃদরোগ, কিডন ও ডায়াবেটিস রোগে আক্রান্ত মহানগরের ভোগড়া এলাকার বছিরন নেছা হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিতে গেলে চিকিৎসকের পরামর্শে ইলেক্ট্রোলাইটসহ কয়েকটি পরীক্ষা করতে হয়। আগে এসব পরীক্ষা অল্প খরচে হাসপাতালে করা গেলেও বর্তমানে এখানে এসব পরীক্ষা বন্ধ থাকায় বাইরে থেকে প্রায় ১০ গুণ বেশি খরচে বাইরে থেকে করতে হয়েছে। এ সময় ওই ডায়াগনিস্টিক সেন্টারগুলোতে ভিড়ে পড়েও তাকে হয়রানী ও ভোগান্তির শিকার হতে হয়েছে।
শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক তপন কান্তি সরকারও সঙ্কটের কথা স্বীকার করে জানান, এ মেডিকেল কলেজ প্রকল্পের তৎকালীন পরিচালকের মাধ্যমে হাসপাতাল ল্যাবে এসব পরীক্ষার যন্ত্রপাতি, সরঞ্জাম ও রি-অ্যাজেন্ট সরবরাহ করা হয়। চুক্তি মোতাবেক আমাদের ল্যাবে তিন বছর পর্যন্ত এসব পরীক্ষার রি-অ্যাজেন্ট সরবরাহ কথা থাকলেও প্রায় তিন মাস পর গত জুনের শেষ থেকে তারা রি-অ্যাজেন্ট সরবরাহ বন্ধ করে দেয়। এতে রি-অ্যাজেন্ট সঙ্কট দেখা দিলে কয়েকমাস ধরে হাসপাতালের ল্যাবে কয়েকটি পরীক্ষা করা সম্ভব হচ্ছে না। তবে নিজস্বভাবে এসব কেনার জন্য টেন্ডার প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।
শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ আব্দুল কাদের জানান, সাবেক অধ্যক্ষ ও প্রকল্প পরিচালক মো. আসাদ হোসেন অবৈধভাবে মেডিক্যালের নামে ওইসব যন্ত্রপাতি ক্রয় করেন ও রি-অ্যাজেন্ট নিজস্ব উদ্যোগে হাসপাতালে সরবরাহ করেন। যার অডিট আপত্তির পর তদন্তও হচ্ছে। তবে হাসপাতাল পরিচালক উদ্যোগ নিলে ওইসব যন্ত্রপাতি ও রি-অ্যাজেন্ট কেনা অসম্ভব নয়।
গাজীপুরে শহীদ তাজউদ্দীন মেডিক্যাল কলেজে চিকিৎসা নিতে আসা ভুক্তভোগী একাধিক রোগী জানান, এ সমস্যার সমাধান যত দ্রæত করা হবে তত তাড়াতাড়ি আমরা ভোগান্তি হতে মুক্তি পাব।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন