এম এ বারী, ভোলা থেকে : মেঘনা-তেঁতুলিয়া বক্ষে জেগে ওঠা বিচ্ছিন্ন দ্বীপগুলোতে যাতায়াতের জন্য ফিটনেসবিহীন ছোট ছোট জেলে ট্রলারে করে যাত্রীরা যাতায়াত করছে। ডেঞ্জার জোনে পাড়ি দিতে এসব ছোট ছোট ট্রলার ও লঞ্চই যাত্রীদের যাতায়াতের একমাত্র মাধ্যম।
প্রায় দুই যুগেরও বেশি সময় ধরে এসব রুটে চলাচলের নিরাপদ কোন ব্যবস্থা গড়ে ওঠে নি। ফলে কয়েক হাজার যাত্রী প্রতিদিন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মেঘনা ও তেঁতুলিয়া নদী পাড়ি দিচ্ছেন।
চরফ্যাশন উপজেলার বেতুয়া ঘাট থেকে চর জহির উদ্দিন, মনপুরার হাজির হাট, জনতা বাজার, কচ্ছপিয়া ঘাট থেকে ঢালচর, পাতিলা, চরকুকরি, ঘোষের হাট ঘাট থেকে চর বিশ্বাস, চর কাজল, চর মোতাহার, গলাচিপা, চিতলিয়া, জাহাজমারা, বখশি ঘাট থেকে চর মনোহর, চরলিউলিন, মুজিব নগর, নজরুল নগর, পাঁচ কপাট, আট কপাট সøুইজ ঘাট, কাচিয়াখালী থেকে পটুয়া ঠোডা, ভাড়ানী থেকে বোয়ালখালী, কলমীর বখশি থেকে বাংলা বাজার, নজরুল নগরের বাবুরহাট লঞ্চ ঘাট থেকে চাঁন মিয়ার বাজার, নুরাবাদের কেরানীর দোকানের মোড় থেকে চাঁন মিয়ার বাজার পর্যন্ত রুটে মেঘনা ও তেঁতুলিয়ার ডেঞ্জার জোন পাড়ি দিয়ে ছোট-বড় ৫০টি ফিটনেস বিহীন লঞ্চ ও ট্রলার প্রতিদিন চলাচল করছে।
এসব ট্রলার ও লঞ্চে কয়েক হাজার যাত্রী জীবনের ঝুঁকি নিয়ে প্রতিনিয়ত যাতায়াত করছে। অথচ প্রতি বছরই ১ মার্চ থেকে অক্টোবর পর্যন্ত উপকূলীয় এসব রুটে সি-ট্রাক সার্ভিস ছাড়া সকল নৌযান চলাচলের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে বাংলাদেশ আভ্যন্তরীন নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ। এলাকা সূত্র জানায়, বরিশাল আভ্যন্তরীন নৌ-পরিবহন অধিদপ্তর, জেলা প্রশাসকের কার্যালয় ও ইউনিয়ন পরিষদের মাধ্যমে প্রতিবছর এসব রুটে নৌযান চলাচলের ইজারা প্রদান করা হচ্ছে।
ইজারাদাররা এসব রুটে ট্রলার ও লঞ্চ চলাচলের অনুমতি নিলেও আইনকানুনের তোয়াক্কা করছেন না। পক্ষান্তরে ইজারাদাতা কর্তৃপক্ষ ইজারা দিয়েই দায়িত্ব শেষ করছেন। অথচ ইজারা প্রদানকারী কর্তৃপক্ষ ফিটনেসবিহীন ট্রলার ও লঞ্চ চলাচল রোধসহ ডেঞ্জার জোন সম্পর্কিত নির্দেশনা প্রদান করার কথা।
তা না হওয়ায় লঞ্চ ও ট্রলার মালিকরা অনুপোযোগী ও ফিটনেসবিহীন ট্রলার ও লঞ্চে অতিরিক্ত যাত্রী ও মালামাল নিয়ে উত্তাল মেঘনা ও তেঁতুলিয়া পাড়ি দিচ্ছেন। আবার অনেকের রুট পারমিট না থাকলেও সরকারি দলের নেতাদের সহায়তায় প্রভাব খাঁটিয়ে ধারণ ক্ষমতার চেয়ে বেশী যাত্রী বোঝাই করে ছোট ছোট নৌকা-ট্রলার ও লঞ্চে যাত্রী পরিবহন করছেন।
দুর্ঘটনার আশঙ্কা থাকা সত্তে¡ও চরফ্যাশন থেকে চরাঞ্চলে বসবাসরত লক্ষাধিক মানুষের যাতায়াতের একমাত্র মাধ্যম এটি। তাই তারা জীবনের ঝুঁকি নিয়েই প্রতিদিন পারাপার হচ্ছেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন